সিরাজগঞ্জে ডিবি পুলিশের পরিচয়ে স্বর্ণালংকার ও টাকা লুট-গৃহবধূর অভিযোগ

সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার খোকশাবাড়ী এলাকায় এক গৃহবধূর বাড়িতে গভীর রাতে ঢুকে ‘ডিবি পুলিশের’ পরিচয়ে স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থ ও মোটরসাইকেল লুটের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মোছাঃ শিরিন বেগম (৫০) শনিবার সিরাজগঞ্জ সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ১৭ জুন রাত অনুমান ১২টার দিকে মোঃ ইদ্রিস (৫০), মোঃ গফুর (৫৫), মোঃ মজিদ (৩৫), মোঃ হাসান (৩২) এবং আরও ৪/৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে শিরিন বেগমের বাসায় ঢুকে। তারা স্টিলের আলমারির চাবি নিয়ে আলমারি খুলে ড্রয়ার থেকে নগদ ২ লাখ টাকা ও দুই ভরি স্বর্ণালংকার (মূল্য আনুমানিক ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা) এবং তার দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে বিবাহের রেজিস্ট্রির কাগজপত্র নিয়ে যায়। পরে তারা বাড়িতে থাকা একটি বাজাজ প্লাটিনা ১০০ সিসি মোটরসাইকেল (মূল্য ১ লাখ টাকা) নিয়ে চলে যায়।
ভুক্তভোগী শিরিন বেগম জানান, আমার প্রথম স্বামী মারা যাওয়ার পর এক মাস আগে মোঃ সাইফুল ইসলাম নামে একজনের সঙ্গে আমি দ্বিতীয়বার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হই। তিনি কিছুদিন আমার বাসায় ছিলেন। ১৭ তারিখ রাতে হঠাৎ এই হামলা হয়। তারা আমাদের কিছু বলতে না দিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মালামাল লুট করে নেয়।
তিনি আরও বলেন, পরদিন রাতেও তারা জানালার সামনে এসে চিৎকার করে আমার স্বামীকে হাজির করতে বলে। আমি রাজি না হলে তারা অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়।
এ ব্যাপারে স্থানীয় মুরব্বি মোঃ আব্দুল হাকিম বলেন, এই ঘটনা আমরা শুনেছি। মহল্লার অনেকেই দেখেছে ওই রাতে কিছু লোক শিরিনের বাড়ির আশপাশে ঘোরাফেরা করছিল। আমরা আইনগত ব্যবস্থার পক্ষে।
স্থানীয় এক দোকানদার মো. শাহজাহান বলেন, শিরিনের বাসায় মাঝরাতে লোকজন ঢুকেছিল। এরপর থেকেই এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। পুলিশের ছদ্মবেশে এভাবে অপরাধ হলে আমরা নিরাপদ নই।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোখলেছুর রহমান বলেন, ভুক্তভোগী একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি। এটি একটি গুরুতর অপরাধ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অপরাধীরা সংঘবদ্ধ। শিগগিরই আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হবে।
সামাজিকভাবে আলোচিত এই ঘটনায় এলাকাবাসীর মাঝে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা দ্রুত অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে সিরাজগঞ্জে পুলিশের পরিচয়ে প্রতারণা ও ডাকাতির ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও কঠোর অবস্থান নিতে হবে।