নো আলট্রাস, নো ফুটবল
সিঙ্গাপুর ম্যাচের টিকিট চেয়ে বাফুফে ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি,আলট্রাসের টানা দ্বিতীয় দিনের আন্দোলন

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সবচেয়ে সংগঠিত সমর্থক গোষ্ঠী বাংলাদেশ ফুটবল আলট্রাস টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের দাবি—আসন্ন এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে আগামী ১০ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচে অর্থের বিনিময়ে সংগঠিতভাবে টিকিট দেওয়া হোক।
কালো পোশাক, ব্যান্ডানা, ঢোল আর বাঁশির মাধ্যমে গ্যালারিতে আলাদা রকম উন্মাদনা সৃষ্টি করা আলট্রাস সদস্যরা শান্তিপূর্ণভাবে বাফুফে ভবনের প্রধান ফটকে জড়ো হন। তারা জানিয়ে দেন—দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। ব্যানারে লেখা ছিল:
“নো আলট্রাস, নো ফুটবল”
“ফুটবলের ন্যায়বিচার চাই, ফুটবল সমর্থকদের ন্যায়বিচার চাই”
তারা অভিযোগ করেন, বাফুফে শুরুতে টিকিট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও শেষ পর্যন্ত কথা রাখেনি, যার ফলে তাদের প্রতিবাদে নামতে হয়েছে।
বাংলাদেশ ফুটবল আলট্রাসের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ওভি বলেন,
“আমরা ৫২ দিন আগে থেকেই বাফুফের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি, যাতে আমরা একসঙ্গে গ্যালারিতে বসে দলকে সমর্থন জানাতে পারি এবং সংগঠিতভাবে টিকিট পেতে পারি। মার্চে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে ‘ফাহামেদুল ইস্যু’র পর বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল নিজেই আমাদের সরাসরি ফেডারেশনের সঙ্গে সমন্বয় করতে বলেছিলেন।”
তিনি আরও বলেন,
“আমরা শুরুতে ৩,০০০ সিটের আবেদন করেছিলাম, কারণ আমাদের সাপোর্টের ধরনটাই ভিন্ন। পরে টিকিফাই প্ল্যাটফর্মের সীমাবদ্ধতা ও টিকিটিং জটিলতা বিবেচনা করে আমরা চাহিদা কমিয়ে ২,০০০ করি। এরপরেও আমাদের মাত্র ১০০ টিকিট অফার করা হয়।”
অনলাইন টিকিট কেনা নিয়ে প্রশ্নে ওভি বলেন,
“আমরা তো অনলাইনে টিকিট বিক্রির অনেক আগেই বাফুফের সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। কেউ বলেনি আমাদের টিকিট অনলাইনে কিনতে। তাছাড়া অনলাইনে আমরা এক ব্লকে এতগুলো টিকিট একসঙ্গে নিতে পারতাম না।”
তিনি বাফুফের ‘সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে’ এই দাবি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন—
“আমি নিজে আমার পরিবারের জন্য ৩৫টি টিকিট কিনতে ১৬টি মোবাইল ফোন ব্যবহার করেও একটি টিকিট পাইনি। শুরুতে বলা হয়েছিল বিভিন্ন জোনের জন্য টিকিট সংরক্ষিত থাকবে, পরে দেখা গেল সব সোল্ড আউট! তাহলে আমাদের ১০০ টিকিট দেওয়ার প্রস্তাব এলো কোথা থেকে?”
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,
“আমরা বিশ্বাস করি এখনো টিকিট আছে, বা ব্যবস্থা করা সম্ভব। গত দুই দিনে কোনো বাফুফে কর্মকর্তা আমাদের সঙ্গে কথা বলেননি। দাবি পূরণ না হলে ম্যাচের দিনেও আমরা অবস্থান চালিয়ে যাব।”
শুধু টিকিট নয়, খেলোয়াড়দের নিয়েও সরব এই গোষ্ঠী
বাংলাদেশ ফুটবল আলট্রাস কেবল গ্যালারিতে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে দেয় না, মাঠের বাইরেও দলের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জাতীয় দলে প্রবাসী প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের অন্তর্ভুক্তির দাবিতে তারা সোচ্চার ভূমিকা রেখে আসছে—বিশেষ করে হামজার মতো খেলোয়াড়দের নিয়ে।
আলট্রাসের মিডিয়া ম্যানেজার ইয়াসিন মোল্লাহ বলেন,
“শুরু থেকেই আমরা বাফুফের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছি, আমাদের প্রতিটি ক্যাম্পেইনে আমরা হামজা ও অন্যান্য দক্ষ প্রবাসী ফুটবলারদের নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছি। ম্যাচ চলাকালীন আমরা হামজার গুরুত্ব তুলে ধরতে টিফো, ব্যানার তৈরি করি, সচেতনতা বাড়াই।”
একাধিকবার বাফুফে সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষারকে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি কোনো কল রিসিভ করেননি।