London ০৬:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেলেন ১০ গুণীজন মেডিকেলে ভর্তির টাকা এখনো জোগাড় হয়নি ইমার যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেশার কুকারে রান্না করলেন সাবেক সৈনিক খোলাবাজার থেকে ১০ হাজার বিনামূল্যের পাঠ্যবই জব্দ, গ্রেপ্তার ২ শেরপুরে মাধ্যমিকের ৯ হাজার সরকারি বই জব্দ! আটক ১ মেডিকেলে চান্স পেয়েও অর্থের অভাবে ডাক্তারী লেখা পড়া নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রান্তি ও পরিবার খাগড়াছড়িতে একক আধিপত্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার, গড়েছেন হাজার কোটি টাকার সম্পদ নোয়াখালীতে শর্টসার্কিটের আগুনে পুড়ে ছাই ১১ দোকান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিন দিন উন্নত হচ্ছে : ইসি মাছউদ

সমস্যা কোথায়, খুঁজে বের করতে হবে

সামিনা লুৎফা

মব ভায়োলেন্স বা গণসহিংসতায় একজন অপরাধী মনে করে, একটা গণপিটুনি চলছে এবং এর মাঝে দুটো পিটুনি দিয়ে গেলে খুব বেশি অপরাধ হবে না এবং ধরা পড়বে না সে। এগুলো নিরসনের একমাত্র উপায় হচ্ছে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা গেছে। তাদেরকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে পারলে একটা বার্তা  যাবে যে এগুলো করা যাবে না এবং করলে ফল ভোগ করতে হবে।

ঘটনাগুলোয় শিক্ষার্থীদের যুক্ততা পাওয়া গেছে। এর আগে শিক্ষকদের নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে।

সেটাও এক ধরনের ‘মব জাস্টিস’। শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের অতিরিক্ত ক্ষমতায়ন দেখা যাচ্ছে। একসময় ছিল শিক্ষকেরা স্বৈরাচারী আচরণ করতেন। স্বৈরাচারের পক্ষে কাজ করেছেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা এখন হঠাৎ পাওয়া স্বাধীনতার যে ব্যবহার করছে, তাতে তারা বেশ খানিকটা লাগামহীন। এখানে শিক্ষার্থীদেরও জবাবদিহির মধ্যে আনতে হবে। এর জন্য শিক্ষকদের সঙ্গে বসা, ক্লাস–পরীক্ষায় অংশ নেওয়াসহ পড়াশোনায় যুক্ত হওয়া জরুরি। যাতে করে তারা অন্য কিছু করতে না পারে।

হল প্রশাসনের এগুলো থামানোর কথা ছিল। তারা তা পারেনি। এই প্রশাসনের জবাবদিহি হওয়া প্রয়োজন এবং দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দিতে হবে। কারণ, বাংলাদেশে পদে থাকলে বিচার হয় না। এতক্ষণ ধরে পিটুনি চলল, মানুষ মারা গেল। সব ক্ষেত্রেই শিক্ষার্থীদের সংশ্লিষ্টতার কথা জানা গেছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, হল প্রশাসন কাজ করছে না। এখন তাঁরা দায়িত্বে আছেন। হলে প্রভোস্ট, হাউস টিউটর সবাই আছেন। কিন্তু তাঁরা ঠেকাতে পারলেন না। তাঁরা দায় কীভাবে এড়াবেন এবং তাঁদের দায় নিতে হবে। এর মাধ্যমেই জবাবদিহি গড়ে উঠবে।

এসব ঘটনার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা বিবৃতি দিয়েছেন। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের পর যেটা ঘটেছে, সেখানে সবাই নিজেদের প্রাপ্য পেতে চাইছেন। নিজেদের সবাই ক্ষমতাবান মনে করছেন। এখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের পাহারা দেওয়ার কথা নয়। এই কাজ প্রশাসকদের।

এগুলো থামানোর জন্য নিয়মিত একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে হবে। সব বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাস–পরীক্ষায় যুক্ত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসকদের দায়দায়িত্ব পালন করতে হবে। ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কোনো সমাধান নয়। সমস্যা কোথায়, সেটাই খুঁজে বের করতে হবে। এখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসক ও সরকারের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি।

  • সামিনা লুৎফা, সহযোগী অধ্যাপক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৪:৪০:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৫৫
Translate »

সমস্যা কোথায়, খুঁজে বের করতে হবে

আপডেট : ০৪:৪০:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সামিনা লুৎফা

মব ভায়োলেন্স বা গণসহিংসতায় একজন অপরাধী মনে করে, একটা গণপিটুনি চলছে এবং এর মাঝে দুটো পিটুনি দিয়ে গেলে খুব বেশি অপরাধ হবে না এবং ধরা পড়বে না সে। এগুলো নিরসনের একমাত্র উপায় হচ্ছে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা গেছে। তাদেরকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে পারলে একটা বার্তা  যাবে যে এগুলো করা যাবে না এবং করলে ফল ভোগ করতে হবে।

ঘটনাগুলোয় শিক্ষার্থীদের যুক্ততা পাওয়া গেছে। এর আগে শিক্ষকদের নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে।

সেটাও এক ধরনের ‘মব জাস্টিস’। শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের অতিরিক্ত ক্ষমতায়ন দেখা যাচ্ছে। একসময় ছিল শিক্ষকেরা স্বৈরাচারী আচরণ করতেন। স্বৈরাচারের পক্ষে কাজ করেছেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা এখন হঠাৎ পাওয়া স্বাধীনতার যে ব্যবহার করছে, তাতে তারা বেশ খানিকটা লাগামহীন। এখানে শিক্ষার্থীদেরও জবাবদিহির মধ্যে আনতে হবে। এর জন্য শিক্ষকদের সঙ্গে বসা, ক্লাস–পরীক্ষায় অংশ নেওয়াসহ পড়াশোনায় যুক্ত হওয়া জরুরি। যাতে করে তারা অন্য কিছু করতে না পারে।

হল প্রশাসনের এগুলো থামানোর কথা ছিল। তারা তা পারেনি। এই প্রশাসনের জবাবদিহি হওয়া প্রয়োজন এবং দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দিতে হবে। কারণ, বাংলাদেশে পদে থাকলে বিচার হয় না। এতক্ষণ ধরে পিটুনি চলল, মানুষ মারা গেল। সব ক্ষেত্রেই শিক্ষার্থীদের সংশ্লিষ্টতার কথা জানা গেছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, হল প্রশাসন কাজ করছে না। এখন তাঁরা দায়িত্বে আছেন। হলে প্রভোস্ট, হাউস টিউটর সবাই আছেন। কিন্তু তাঁরা ঠেকাতে পারলেন না। তাঁরা দায় কীভাবে এড়াবেন এবং তাঁদের দায় নিতে হবে। এর মাধ্যমেই জবাবদিহি গড়ে উঠবে।

এসব ঘটনার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা বিবৃতি দিয়েছেন। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের পর যেটা ঘটেছে, সেখানে সবাই নিজেদের প্রাপ্য পেতে চাইছেন। নিজেদের সবাই ক্ষমতাবান মনে করছেন। এখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের পাহারা দেওয়ার কথা নয়। এই কাজ প্রশাসকদের।

এগুলো থামানোর জন্য নিয়মিত একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে হবে। সব বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাস–পরীক্ষায় যুক্ত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসকদের দায়দায়িত্ব পালন করতে হবে। ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কোনো সমাধান নয়। সমস্যা কোথায়, সেটাই খুঁজে বের করতে হবে। এখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসক ও সরকারের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি।

  • সামিনা লুৎফা, সহযোগী অধ্যাপক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়