London ১২:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা শামীম হোসেনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেন তারেক রহমান শেরপুরে উপজেলা প্রশাসনের মোড়ক উন্মোচন ও পুষ্পস্তবক অর্পণে আ.লীগ নেতার অংশগ্রহণ! সমালোচনার ঝড় ব্যারিস্টার কায়সার কামালের সহযোগিতায় চতুর্থ ধাপে বিনামূল্যে ৪৬ জন পেলেন চোখের চিকিৎসা বোয়ালমারী, মধুখালী ও আলফাডাঙ্গাতে জুলাই শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া মাহফিল। গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে আলফাডাঙ্গা’য় জামায়াতে ইসলামীর বিজয় র‍্যালি পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে কলমাকান্দায় চা দোকানি খুন আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কালিয়াকৈরে বিজয় সমাবেশ ও র‍্যালি অনুষ্ঠিত জুলাই ঘোষণাপত্রে কী আছে, পড়ুন বিস্তারিত রাজশাহীতে নিষিদ্ধ কীটনাশক বিক্রির অভিযোগ মশার কোন উষধ দিচ্ছে না রাসিক

শেরপুরে উপজেলা প্রশাসনের মোড়ক উন্মোচন ও পুষ্পস্তবক অর্পণে আ.লীগ নেতার অংশগ্রহণ! সমালোচনার ঝড়

শেরপুর প্রতিনিধিঃ

শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী থানা মোড়ে ৫ ই আগস্ট ২০২৫ গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে
শহীদ সৌরভ চত্বরের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে পাশে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও অন্যান্য কর্মকর্তারা মোড়ক উন্মোচন করেছেন। একই দিনে নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতিকে নিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করায় উপজেলা সহ পুরো জেলা জুড়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ৫ ই আগষ্ট মঙ্গলবার সকালের।

জুলাই গণঅভ্যুত্থান- বর্ষপূর্তিতে আওয়ামীলীগ নেতার সঙ্গে ইউএনও একই কাতারে দাঁড়িয়ে সরকারি দায়িত্ব পালনে অংশ নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা।
এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে অভিযোগ করেছেন, প্রশাসনের কর্মকর্তারা আওয়ামী লীগ নেতাদের কৌশলে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালাচ্ছেন।

যদিও গত ৫ আগস্টের পর থেকে আত্মগোপনে চলে যায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। হঠাৎ করে বিজয়ের বর্ষপূর্তিতে মোড়ক উন্মোচন ও পুষ্পস্তবক অর্পণ অনুষ্ঠানে ইউএনওর পাশে আওয়ামী লীগ নেতাকে দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের কর্মী-সমর্থকরা।

ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায়, ঝিনাইগাতী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা
ইউএনও আশরাফুল আলম রাসেলের পাশে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা সারোয়ার যিনি ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর দায়েরকৃত বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলার আসামী। অপরদিকে নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনার ভূমি ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে পুষ্পস্তবক অর্পণে ১নং গণপদ্দী ডিজিটাল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব শামসুর রহমান আবুল।

ভাইরাল হওয়া ছবি নিয়ে ঝিনাইগাতী উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এখলাছুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত ১৬ বছর জাতীয় দিবসের প্রোগ্রামগুলোতে কোনো দাওয়াত পাইনি, ছবি তুলবো এটা তো দূরের কথা। ফ্যাসিবাদী সরকার হাসিনা চলে গেছে। কিন্তু তার দোসর ওরা এখনো রয়ে গেছে। তারা প্রকাশ্যে কিছু করতে না পারলেও নীরবে দলকে সুসংগঠিত করার জন্য এসব কর্মকাণ্ড করাচ্ছে। এর জন্যে প্রশাসনে সংস্কার করা প্রয়োজন।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে
ছবিটি ছড়িয়ে পড়লে নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে ঝিনাইগাতী থানা পুলিশ ওই আওয়ামী লীগ নেতা সারোয়ারকে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. আল-আমীন।

এব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও আশরাফুল আলম রাসেলের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ভাইরাল হওয়া ব্যাক্তি সম্পর্কে আমি কিছুই জানিনা। কিংবা আমার কোন পরিচিতও নয়। তাকে শহীদ সৌরভের বাবা সাথে করে নিয়ে এসেছেন এইটুকু শুনেছি।

জাতীয় যুবশক্তির নকলা উপজেলা শাখার আহ্বায়ক পদপ্রার্থী মাসুমের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি দেখেছি এবং ইউএনও কে তাৎক্ষণিক ফোনে জিজ্ঞাসা করেছি। সে বলেছেন আমি নতুন অবস্থায় এখানে এসেছি এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। প্রশাসনে এখনো আওয়ামী লীগের দোসরা ঘাপটি মেরে বসে আছে এটাই তার জলন্ত প্রমান।

নকলা উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আলহাজ্ব খোরশেদুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে আসার পর পরই ইউএনও কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম সে বলেছেন আমি তাকে দাওয়াত দেইনি। ইচ্ছাকৃত ভাবে এসেছেন। আমরা এ বিষয়টি কোন অবস্থাতেই মানতে পারিনা। সে একাধিক মামলার আসামি এমনকি জেল হাজত থেকে বেশ কিছুদিন হয় বের হয়েছেন।

নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মো. জাহাঙ্গীর আলমের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, তাকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি। কিভাবে ফটোসেশনে অংশ নিলো সেটা আমি দেখিনি। অনেক লোকের মধ্যে সেটি দেখারও সুযোগ হয়নি।

বিষয়টি সম্পর্কে শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমানের সাথে মুঠেফোনে কথা হলে তিনি জানান, আমি ঝিনাইগাতীর বিষয়টি শুনেছি। সেখানকার ইউএনও কে ফোন দিয়েছিলাম তার ভাস্য অনুযায়ী সকলকে চেনার উপায় ছিলোনা বলে বলেছেন। আর নকলার বিষয়টি আমি এখনো শুনিনি আপনার কাছেই শুনলাম। আমি ইউএনও সাথে কথা বলে আপনাকে জানাবো। তবে মামলা থাকলে তাকে গ্রেফতার করা উচিত।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০২:৪০:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫
Translate »

শেরপুরে উপজেলা প্রশাসনের মোড়ক উন্মোচন ও পুষ্পস্তবক অর্পণে আ.লীগ নেতার অংশগ্রহণ! সমালোচনার ঝড়

আপডেট : ০২:৪০:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫

শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী থানা মোড়ে ৫ ই আগস্ট ২০২৫ গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে
শহীদ সৌরভ চত্বরের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে পাশে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও অন্যান্য কর্মকর্তারা মোড়ক উন্মোচন করেছেন। একই দিনে নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতিকে নিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করায় উপজেলা সহ পুরো জেলা জুড়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ৫ ই আগষ্ট মঙ্গলবার সকালের।

জুলাই গণঅভ্যুত্থান- বর্ষপূর্তিতে আওয়ামীলীগ নেতার সঙ্গে ইউএনও একই কাতারে দাঁড়িয়ে সরকারি দায়িত্ব পালনে অংশ নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা।
এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে অভিযোগ করেছেন, প্রশাসনের কর্মকর্তারা আওয়ামী লীগ নেতাদের কৌশলে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালাচ্ছেন।

যদিও গত ৫ আগস্টের পর থেকে আত্মগোপনে চলে যায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। হঠাৎ করে বিজয়ের বর্ষপূর্তিতে মোড়ক উন্মোচন ও পুষ্পস্তবক অর্পণ অনুষ্ঠানে ইউএনওর পাশে আওয়ামী লীগ নেতাকে দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের কর্মী-সমর্থকরা।

ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায়, ঝিনাইগাতী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা
ইউএনও আশরাফুল আলম রাসেলের পাশে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা সারোয়ার যিনি ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর দায়েরকৃত বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলার আসামী। অপরদিকে নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনার ভূমি ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে পুষ্পস্তবক অর্পণে ১নং গণপদ্দী ডিজিটাল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব শামসুর রহমান আবুল।

ভাইরাল হওয়া ছবি নিয়ে ঝিনাইগাতী উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এখলাছুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত ১৬ বছর জাতীয় দিবসের প্রোগ্রামগুলোতে কোনো দাওয়াত পাইনি, ছবি তুলবো এটা তো দূরের কথা। ফ্যাসিবাদী সরকার হাসিনা চলে গেছে। কিন্তু তার দোসর ওরা এখনো রয়ে গেছে। তারা প্রকাশ্যে কিছু করতে না পারলেও নীরবে দলকে সুসংগঠিত করার জন্য এসব কর্মকাণ্ড করাচ্ছে। এর জন্যে প্রশাসনে সংস্কার করা প্রয়োজন।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে
ছবিটি ছড়িয়ে পড়লে নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে ঝিনাইগাতী থানা পুলিশ ওই আওয়ামী লীগ নেতা সারোয়ারকে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. আল-আমীন।

এব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও আশরাফুল আলম রাসেলের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ভাইরাল হওয়া ব্যাক্তি সম্পর্কে আমি কিছুই জানিনা। কিংবা আমার কোন পরিচিতও নয়। তাকে শহীদ সৌরভের বাবা সাথে করে নিয়ে এসেছেন এইটুকু শুনেছি।

জাতীয় যুবশক্তির নকলা উপজেলা শাখার আহ্বায়ক পদপ্রার্থী মাসুমের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি দেখেছি এবং ইউএনও কে তাৎক্ষণিক ফোনে জিজ্ঞাসা করেছি। সে বলেছেন আমি নতুন অবস্থায় এখানে এসেছি এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। প্রশাসনে এখনো আওয়ামী লীগের দোসরা ঘাপটি মেরে বসে আছে এটাই তার জলন্ত প্রমান।

নকলা উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আলহাজ্ব খোরশেদুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে আসার পর পরই ইউএনও কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম সে বলেছেন আমি তাকে দাওয়াত দেইনি। ইচ্ছাকৃত ভাবে এসেছেন। আমরা এ বিষয়টি কোন অবস্থাতেই মানতে পারিনা। সে একাধিক মামলার আসামি এমনকি জেল হাজত থেকে বেশ কিছুদিন হয় বের হয়েছেন।

নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মো. জাহাঙ্গীর আলমের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, তাকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি। কিভাবে ফটোসেশনে অংশ নিলো সেটা আমি দেখিনি। অনেক লোকের মধ্যে সেটি দেখারও সুযোগ হয়নি।

বিষয়টি সম্পর্কে শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমানের সাথে মুঠেফোনে কথা হলে তিনি জানান, আমি ঝিনাইগাতীর বিষয়টি শুনেছি। সেখানকার ইউএনও কে ফোন দিয়েছিলাম তার ভাস্য অনুযায়ী সকলকে চেনার উপায় ছিলোনা বলে বলেছেন। আর নকলার বিষয়টি আমি এখনো শুনিনি আপনার কাছেই শুনলাম। আমি ইউএনও সাথে কথা বলে আপনাকে জানাবো। তবে মামলা থাকলে তাকে গ্রেফতার করা উচিত।