ধরা পড়া কুমিরটিকে ধরছেন এলাকাবাসী। আজ সকালে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের চর ঘাসিয়া এলাকায় ছবি
লক্ষ্মীপুরের একটি বাড়িতে দিনদুপুরে হঠাৎই হানা দিয়েছে বিশাল এক কুমির। জেলার রায়পুর উপজেলার চর ঘাসিয়া এলাকার বাড়িটিতে বিশাল প্রাণীটিকে দেখে রীতিমতো হতচকিত এলাকাবাসী। বাড়ির খোঁয়াড়ের হাঁস-মুরগির লোভে প্রাণীটি সেখানে আসে বলে ধারণা বাড়িটির বাসিন্দাদের। এরপর আতঙ্কিত লোকজনের চিৎকারে কুমিরটি বাড়ির লাগোয়া পুকুরে নেমে পড়ে। সেখানেই ছিল সারা দিন। পরে গ্রামবাসী প্রাণীটিকে ধরে বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেন।
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চর ঘাসিয়া এলাকাটি মেঘনার তীরের একটি চরাঞ্চল। প্রত্যন্ত এই এলাকা থেকে গতকাল বুধবার রাতে কুমিরটিকে ধরেন এলাকাবাসী। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় লোকজন এটিকে বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেন। ধরা পড়া কুমিরটির ওজন প্রায় পাঁচ মণ।
চর ঘাসিয়ার যে বাড়িতে কুমিরের দেখা মিলেছে, সে বাড়ির কর্তা হলেন শাহ আলম মাঝি। পুরো বিষয় নিয়ে তাঁদের বিস্ময়ের ঘোর এখনো কাটছে না। শাহ আলম মাঝি বলেন, কুমিরটিকে তাঁদের বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে। গতকাল ভোরে বসতবাড়িতে কুমিরটি আসে। পরে সেটি বাড়ির পাশের পুকুরে নেমে যায়। সারা দিন ওই পুকুরেই ছিল। এতে তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পরে রাতে কুমিরটি তাঁদের হাঁস-মুরগি খেতে খোঁয়াড়ে হানা দেয়। তখন স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় সেখান থেকে কুমিরটিকে ধরে ফেলেন তাঁরা। আজ দুপুরে বন বিভাগের লোকজন এসে এটি নিয়ে যান।
স্থানীয় লোকজন জানান, ঘটনাস্থল থেকে মেঘনা নদীর দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার। ধারণা করা হচ্ছে, সুন্দরবন এলাকা থেকে স্রোতের সঙ্গে কুমিরটি এ অঞ্চলে চলে আসে। পরে মেঘনা নদী থেকে চরের ফসলি খেত অতিক্রম করে কুমিরটি ঘটনাস্থল এসে অবস্থান নেয়। ধরা পড়া কুমিরটি ছাড়াও গ্রামের জলাশয়ে তাঁদের কেউ কেউ কুমির দেখেছেন। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর ওই এলাকায় কুমিরের দেখা মিলছে বলে জানান তাঁরা।
রায়পুর ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটার আবুল কালাম আজাদ বলেন, স্থানীয় লোকজন কুমিরটিকে আটক করেন। এরপর উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে ফায়ার সার্ভিস কুমিরটি বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে।
জনপদে ধরা পড়া কুমির। আজ সকালে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের চর ঘাসিয়া এলাকায়
রায়পুর উপজেলা বন বিভাগের রেঞ্জ সহকারী মতিউর রহমান সোহাগ বলেন, ‘কুমিরটি আমাদের হেফাজতে নিয়েছি। প্রাণীটিকে জেলা অফিসে পাঠানো হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ধরা পড়া কুমিরটির ওজন প্রায় পাঁচ মণ।’
জানতে চাইলে রায়পুর উপজেলা বন কর্মকর্তা চন্দন ভৌমিক বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, এটি লোনাপানির কুমির। কুমিরটি বন্যার পানিতে ভেসে কোনো এলাকা থেকে এসে পড়েছে।