রোবোটিক সার্জারিতে দেশের প্রথম আন্তর্জাতিক সনদধারী চিকিৎসক ডা. কামরুন জাহান ঝিনুক

রোবোটিক সার্জারিতে দেশের প্রথম আন্তর্জাতিক সনদধারী চিকিৎসক ডা. কামরুন জাহান ঝিনুক
মান্দারপুরের কৃতি সন্তান বিশ্বজয়ে প্রস্তুত।
বাংলাদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছেন ডা. কামরুন জাহান ঝিনুক। তিনি দেশের প্রথম রোবোটিক সার্জারিতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সনদপ্রাপ্ত সার্জন। এই স্বীকৃতি অর্জনের মাধ্যমে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে উন্নত চিকিৎসা প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ দেশগুলোতে রোবোটিক সার্জন হিসেবে কাজ করার যোগ্যতা অর্জন করেছেন।
রোবোটিক সার্জারি হলো আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের এক অসাধারণ আবিষ্কার, যেখানে মানুষের শরীরে বড় ধরনের কাটাছেঁড়া ছাড়াই জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করা সম্ভব হয়। এই প্রক্রিয়ায় অতি সূক্ষ্ম যন্ত্রের মাধ্যমে সার্জন দূর থেকে অপারেশন পরিচালনা করেন, যা রোগীর শরীরে ক্ষতি কমিয়ে আনে এবং দ্রুত সুস্থ হওয়ার সুযোগ বাড়ায়।
ডা. কামরুন জাহান ঝিনুক বর্তমানে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে আবাসিক সার্জন হিসেবে কর্মরত। অত্যন্ত প্রতিভাবান এই চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জনের পর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস (BCPS) থেকে এমসিপিএস ও এফসিপিএস ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। পরে যুক্তরাজ্যের প্রখ্যাত রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস, লন্ডন থেকে এমআরসিএস ডিগ্রিও অর্জন করেন।
তাঁর এই সফলতা শুধু চিকিৎসাক্ষেত্রেই নয়, দেশের জন্যও এক বড় অর্জন। তিনি চিকিৎসাবিদ্যায় বিশ্বমানে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে দেশে উচ্চমানের সেবা প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচনের প্রত্যাশা রাখেন।
ডা. ঝিনুক কসবা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মান্দারপুর গ্রামের কৃতি সন্তান। তাঁর পিতা আব্দুল কাইয়ুম সরকার একজন প্রখ্যাত ব্যবসায়ী। ব্যক্তি জীবনে তিনি ৯০ দশকের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছিলেন, যা তাঁর বহুমাত্রিক প্রতিভার পরিচায়ক।
ডা. ঝিনুকের এই অর্জন মান্দারপুরসহ পুরো কসবা উপজেলা তথা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাকে গর্বিত করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁর এ সাফল্যে ভীষণ আনন্দিত এবং তাকে ভবিষ্যতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও সাফল্য বয়ে আনার জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন।
এ অর্জন শুধু ডা. কামরুন জাহান ঝিনুকের ব্যক্তিগত গর্ব নয়, এটি বাংলাদেশের চিকিৎসাক্ষেত্রেরও গর্ব। তাঁর মতো মেধাবী ও প্রতিশ্রুতিশীল চিকিৎসকরা সামনে এ দেশের স্বাস্থ্যসেবাকে আরও আধুনিক ও উন্নত করে তুলবেন – এই প্রত্যাশা সকলের।