London ০৬:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
টাওয়ার হ্যামলেটসে ইউকিপ এর বিক্ষোভ নিষিদ্ধ: শনিবার হবে শান্তি মিছিল শান্তি সমাবেশে অংশ নিতে মেয়র লুৎফর রহমান ও ড. গ্লিন রবিনসের আহবান পটুয়াখালীতে শহীদ কন্যা লামিয়া ধর্ষণ মামলায় তিন কিশোরের কারাদণ্ড নানিয়ারচর জোনের তত্ত্বাবধানে বাকছড়ি ও জাহানাতলীতে বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ঔষধ বিতরণ অনু‌ষ্ঠিত আনোয়ারা সাব রেজিস্ট্রার এর দুর্নীতির বিরুদ্ধে দলিল লিখক সমিতির লাগাতার কলম বিরতি পুঠিয়ায় সাংবাদিকে হত্যার হুমকি পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফ ঢাকায় গ্রেফতার কালিয়াকৈর তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে ছুটে চলেছেন ৫নং ওয়ার্ডের অঙ্গসংগঠনের সকল নেতা বৃন্দ নওগাঁর রাণীনগরে সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত চারঘাটে ডোবা থেকে যুবকের লা’শ উদ্ধার কালিয়াকৈরে ভুল রক্ত পুশে সিজারের রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

রাবিতে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

মো: গোলাম কিবরিয়া,রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া এক প্রার্থী। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) আইনজীবীর মাধ্যমে তিনি উপাচার্য, রেজিস্ট্রারসহ সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন।

ওই চাকরিপ্রার্থীর নাম রাহাত ইসলাম (হৃদয়)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি স্নাতকে সিজিপিএ ৩ দশমিক ৬৩ ও স্নাতকোত্তরে ৩ দশমিক ৮৬ পেয়ে দুটিতেই প্রথম স্থান অধিকার করেন।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন রাহাত। কিন্তু তিনি মৌখিক পরীক্ষার (ভাইভা) জন্য মনোনীত হননি। তার অভিযোগ, নিয়োগ পরীক্ষার আগে তার কাছে অর্থ দাবি করা হয়েছিল। তিনি তা দিতে না পারায় তাকে মৌখিক পরীক্ষায় রাখা হয়নি।

এ নিয়ে ২১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীবের কাছে অভিযোগ করেন রাহাত। অভিযোগের কপি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টার কার্যালয়সহ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে ডাকযোগে পাঠানো হয়। একইসঙ্গে বিভাগের চেয়ারম্যানের সঙ্গে নিয়োগ-সংক্রান্ত বিষয়ের আড়াই মিনিটের একটি কথোপকথনের অডিও রেকর্ড সংযুক্ত করা হয়।

এদিকে রোববার দুপুরে তিনি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ নুরুল হুদার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা উপদেষ্টা, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে ডাকযোগে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন।
আইনজীবী নুরুল হুদা বলেন, ২১ সেপ্টেম্বর তার মক্কেল একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে। কিন্তু অভিযোগের ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি হয়নি। এ জন্য অভিযোগের যথাযথ তদন্ত ও তদন্ত সাপেক্ষে নিয়োগ কার্যক্রম বাতিলের জন্য আজ আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে অগ্রগতি না দেখতে পেলে তারা রিট করবেন। নোটিশে সাত দিনের সময় দেওয়া হয়েছে।

রাহাতের অভিযোগ, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়নি। নিয়োগের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন ব্যক্তি সরাসরি অর্থের বিনিময়ে পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচন করার চেষ্টা করেছেন।

নাট্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথোপকথনের অডিও যুক্ত করে লিখিত অভিযোগে রাহাত উল্লেখ করেন, নাট্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যান স্যার আমাকে নিজ মুখে বলেছেন, যদি আমি চাকরি পেতে চাই, তবে নির্দিষ্ট একটি প্রক্রিয়ায় অর্থ দিতে হবে। তিনি বলেন, “অর্থ ছাড়া চাকরি পাওয়ার কোনো বিকল্প নেই।”

নিয়োগ বোর্ডে প্রথমে যে অধ্যাপককে বিশেষজ্ঞ হিসেবে রাখা হয়েছিল, পরে তাকে বাদ দিয়ে অন্যজনকে রাখা হয় বলেও অভিযোগ করেন রাহাত। পাশাপাশি লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও নির্দিষ্ট বিষয় আগেই নির্দিষ্ট প্রার্থীদের দিয়ে অনৈতিক সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তার।

অভিযোগের বিষয়ে নাট্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মীর মেহবুব আলম বলেন, এটা মনগড়া অভিযোগ। কী রকম স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ বোর্ডগুলো হচ্ছে, এটা সবাই জানেন। তিনি আমারই ছাত্র। ২৩ জন পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই ছাত্র প্রথম ১০ জনের মধ্যেই আসতে পারেননি।

বিশেষজ্ঞ পরিবর্তনের ব্যাপারে এই অধ্যাপক বলেন, এটা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত। এখানে কে আসবেন না আসবেন, এটা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত। তারা এটা বলতে পারবেন।

কথোপকথনের বিষয়ে তিনি বলেন, এখন তো এআই দিয়ে সবকিছু করা যায়। এটা ভিত্তিহীন।

অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, এই অভিযোগের ভিত্তি আছে কি না, সেটা আমরা দেখব। অভিযোগ করলে তো সেটা দেখতেই হবে। আইনি নোটিশ পাঠালে সেটাও আইনিভাবে দেখা হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৫:৪৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫
২২
Translate »

রাবিতে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

আপডেট : ০৫:৪৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া এক প্রার্থী। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) আইনজীবীর মাধ্যমে তিনি উপাচার্য, রেজিস্ট্রারসহ সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন।

ওই চাকরিপ্রার্থীর নাম রাহাত ইসলাম (হৃদয়)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি স্নাতকে সিজিপিএ ৩ দশমিক ৬৩ ও স্নাতকোত্তরে ৩ দশমিক ৮৬ পেয়ে দুটিতেই প্রথম স্থান অধিকার করেন।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন রাহাত। কিন্তু তিনি মৌখিক পরীক্ষার (ভাইভা) জন্য মনোনীত হননি। তার অভিযোগ, নিয়োগ পরীক্ষার আগে তার কাছে অর্থ দাবি করা হয়েছিল। তিনি তা দিতে না পারায় তাকে মৌখিক পরীক্ষায় রাখা হয়নি।

এ নিয়ে ২১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীবের কাছে অভিযোগ করেন রাহাত। অভিযোগের কপি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টার কার্যালয়সহ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে ডাকযোগে পাঠানো হয়। একইসঙ্গে বিভাগের চেয়ারম্যানের সঙ্গে নিয়োগ-সংক্রান্ত বিষয়ের আড়াই মিনিটের একটি কথোপকথনের অডিও রেকর্ড সংযুক্ত করা হয়।

এদিকে রোববার দুপুরে তিনি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ নুরুল হুদার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা উপদেষ্টা, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে ডাকযোগে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন।
আইনজীবী নুরুল হুদা বলেন, ২১ সেপ্টেম্বর তার মক্কেল একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে। কিন্তু অভিযোগের ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি হয়নি। এ জন্য অভিযোগের যথাযথ তদন্ত ও তদন্ত সাপেক্ষে নিয়োগ কার্যক্রম বাতিলের জন্য আজ আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে অগ্রগতি না দেখতে পেলে তারা রিট করবেন। নোটিশে সাত দিনের সময় দেওয়া হয়েছে।

রাহাতের অভিযোগ, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়নি। নিয়োগের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন ব্যক্তি সরাসরি অর্থের বিনিময়ে পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচন করার চেষ্টা করেছেন।

নাট্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথোপকথনের অডিও যুক্ত করে লিখিত অভিযোগে রাহাত উল্লেখ করেন, নাট্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যান স্যার আমাকে নিজ মুখে বলেছেন, যদি আমি চাকরি পেতে চাই, তবে নির্দিষ্ট একটি প্রক্রিয়ায় অর্থ দিতে হবে। তিনি বলেন, “অর্থ ছাড়া চাকরি পাওয়ার কোনো বিকল্প নেই।”

নিয়োগ বোর্ডে প্রথমে যে অধ্যাপককে বিশেষজ্ঞ হিসেবে রাখা হয়েছিল, পরে তাকে বাদ দিয়ে অন্যজনকে রাখা হয় বলেও অভিযোগ করেন রাহাত। পাশাপাশি লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও নির্দিষ্ট বিষয় আগেই নির্দিষ্ট প্রার্থীদের দিয়ে অনৈতিক সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তার।

অভিযোগের বিষয়ে নাট্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মীর মেহবুব আলম বলেন, এটা মনগড়া অভিযোগ। কী রকম স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ বোর্ডগুলো হচ্ছে, এটা সবাই জানেন। তিনি আমারই ছাত্র। ২৩ জন পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই ছাত্র প্রথম ১০ জনের মধ্যেই আসতে পারেননি।

বিশেষজ্ঞ পরিবর্তনের ব্যাপারে এই অধ্যাপক বলেন, এটা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত। এখানে কে আসবেন না আসবেন, এটা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত। তারা এটা বলতে পারবেন।

কথোপকথনের বিষয়ে তিনি বলেন, এখন তো এআই দিয়ে সবকিছু করা যায়। এটা ভিত্তিহীন।

অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, এই অভিযোগের ভিত্তি আছে কি না, সেটা আমরা দেখব। অভিযোগ করলে তো সেটা দেখতেই হবে। আইনি নোটিশ পাঠালে সেটাও আইনিভাবে দেখা হবে।