London ০১:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
হামজার ছোঁয়ায় ভুটানের বিপক্ষে বাংলাদেশের দারুণ জয় এই রাতে আলো ছিল, জয় ছিল, আর ছিল একজন হামজা চৌধুরী ইতালিতে সাংগঠনিক কাজে‌ বিশেষ অবদান রাখায় ইকবাল বেপারী‌কে সংবর্ধনা দিলো‌ প্রগতি ব্যবসায়ী সমিতি পটুয়াখালীতে কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষনে বিনামূল্যে ৪৭ মেট্রিক টন লবন বিতরণ পটুয়াখালীতে রাত ৯ টা পর্যন্ত চলছে বিভিন্ন পশুর হাট রাজশাহীতে প্রতারণা করে ফ্ল্যাট কেনার অভিযোগ ব্যারিস্টার কায়সার কামালের ঈদ উপহার পেলো দুর্গাপুরের চার শহীদের পরিবার সিরাজগঞ্জে স্বামী কর্তৃক স্ত্রী‌কে খুনের অ‌ভি‌যোগ-আটক ১ জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত ইতালির পিসাকানে স্কুলে টেস্ট দ্যা ওয়ার্ল্ড নামে অনুষ্ঠিত বহুজাতিক সংস্কৃতির মিলনমেলা

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি এক যুগেও মেলেনি নিখোঁজদের হদিস, শেষ হয়নি বিচার

অনলাইন ডেস্ক:

আজ ২৪ এপ্রিল। ২০১৩ সালের এই দিনে সাভার বাসস্ট্যান্ডের কাছে নয় তলা ভবন রানা প্লাজা ধসে সহস্রাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়। অবৈধভাবে কারখানা স্থাপন করা ভবন ধসে পড়ায় নিহত হন এক হাজার ১৩৪ জন। আহত হন আরও দুই হাজারের বেশি। তাদের সবাই ছিলেন পোশাক শ্রমিক। এ ঘটনায় হত্যা ও ইমারত নির্মাণ আইনে দুটি মামলা হয়। এর কোনোটিরই তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হলেও অন্য মামলায় রয়েছে স্থগিতাদেশ। এ ঘটনার এক যুগ পেরিয়ে গেলেও থামেনি স্বজনদের কান্না। আতঙ্ক কাটেনি আহতদের। দীর্ঘ ১২ বছরেও নিষ্পত্তি হয়নি মামলা।

আসামি পক্ষ বলছেন, দুই মামলায় বিচার শেষ না হওয়ায় বিচারহীনভাবে কারাগারে আটক রয়েছেন সোহেন রানা। রাষ্ট্রপক্ষ বলছেন, মামলার অভিযোগ গঠনে আসামিরা উচ্চ আদালতে যাওয়ায় সাক্ষ্য শুরু হতে কয়েক বছর চলে যায়। দ্রুত মামলা দুটি নিষ্পত্তি করা হবে বলে রাষ্ট্রপক্ষের প্রত্যাশা।

জানা যায়, প্রায় আট বছর আগে এই দুই মামলার অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেন বিচারিক আদালত। অভিযোগ গঠনের প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর পর হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। অন্যদিকে একই ঘটনায় দায়ের করা ইমারত নির্মাণ আইনের মামলা উচ্চ আদালতের আদেশে স্থগিত রয়েছে। মামলা স্থগিত থাকায় অভিযোগ গঠনের আট বছরেও শুরু হয়নি সাক্ষ্যগ্রহণ।

আদালত সূত্র জানায়, হত্যা মামলায় অভিযোগ গঠনের পর এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যান আট আসামি। এদের মধ্যে সাতজনের আবেদন নিষ্পত্তি হয়। মামলার আরেক আসামি সাভার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার হাজি মোহাম্মদ আলীর পক্ষে করা আবেদনে মামলার বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি মামলার বাদী সাভার থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওয়ালী আশরাফের সাক্ষ্য দেওয়ার মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

মামলার ৫৯৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। ৮৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ বর্তমানে চলমান রয়েছে। সর্বশেষ চলতি বছরের ২১ এপ্রিল মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল। এদিন চারজন আদালতে সাক্ষ্য দেন। চারজনের মধ্যে তিনজনের জেরা শেষ হলেও একজনের জেরা শেষ হয়নি। ২৮ এপ্রিল মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আদালত নতুন দিন ধার্য করেন। অন্যদিকে ইমারত নির্মাণ আইনের মামলায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে কয়েকজন আসামি রিভিশন আবেদন করেন। এদের মধ্যে আসামি ফ্যান্টম অ্যাপারেলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আমিনুল ইসলামকে মামলাটি থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। এছাড়া মামলার আরেক আসামি সাভার পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. রেফাতউল্লাহর পক্ষে ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর এক বছরের জন্য মামলার বিচারিক কার্যক্রম স্থগিতের আদেশ দেন উচ্চ আদালত। হত্যা মামলার বিষয়ে ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি বিমল সমদ্দার বলেন, আমরা আলোচিত মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করতে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছি। আশা করছি মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম দ্রুত শেষ করা যাবে। ইমারত নির্মাণ আইনের মামলা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আনোয়ারুল কবির বাবুল বলেন, মামলাটি উচ্চ আদালতে মামলার বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করা যায়নি। এছাড়া সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য নতুন দিনও পড়েনি। আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ বলেন, মামলা দুটির বিচার শেষ না হওয়ায় আসামি সোহেল রানা কারামুক্তি হতে পারছেন না। তিনি বিচারহীনভাবে কারাগারে আটক রয়েছেন। পোশাক শ্রমিক হত্যা মামলায় সাভার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওয়ালী আশরাফ ভবন নির্মাণে ‘অবহেলা ও ত্রুটিজনিত হত্যা’ মামলা করেন।

২০১৫ সালের ২৬ এপ্রিল সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয়কৃষ্ণ কর ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় সাক্ষী করা হয় ৫৯৪ জনকে। মামলার ৪১ আসামির মধ্যে ভবন মালিক সোহেল রানার বাবা আব্দুল খালেক, আবু বক্কর সিদ্দিক ও আবুল হোসেন মারা যান। তিনজনকে বাদ দিয়ে হত্যা মামলায় এখন আসামির সংখ্যা ৩৮ জন। ইমারত নির্মাণ আইনের মামলায় ইমারত নির্মাণ আইন না মেনে ভবন নির্মাণ করায় রাজউকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন সাভার থানায় একটি মামলা করেন। ২০১৬ সালের ১৪ জুন ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ইশতিয়াক হোসেন জিপু গণমাধ্যমকে বলেন, উচ্চ আদালত এক আসামির পক্ষে মামলার কার্যক্রম ছয় মাস স্থগিত করেন। তখনকার সময়ে রাষ্ট্রপক্ষ মামলা এগিয়ে নিতে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পর মামলাটি নিয়ে কাজ করছি। আসামিপক্ষ যদি স্থগিতাদেশ বাড়াতে না পারে, তাহলে মামলার বিচার শুরু হবে। আদালত তাদের উচ্চ আদালতের আদেশ দাখিল করতে বলেছেন। তারা দাখিল করতে না পারলে দ্রুত সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে। দীর্ঘ সময় চলে গেছে। আমরা আদালতে সাক্ষী হাজির করে মামলার বিচার দ্রুত শেষ করার উদ্যোগ নেব।

এসব বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী মাসুদ খান খোকন গণমাধ্যমকে বলেন, রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় হত্যা ও ইমারত নির্মাণ আইনের দুই মামলায় ৯ বছর আগে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। কয়েকজন আসামি উচ্চ আদালতে অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেন। ইমারত নির্মাণ আইনের মামলাটিতে এক আসামির পক্ষে স্থগিতাদেশ থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি। মামলা দুইটির বিচার শেষ না হওয়ায় আসামি সোহেল রানা কারামুক্ত হতে পারছেন না।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ১২ বছর কারাগারে রয়েছেন সোহেন রানা। এই যে এতগুলো বছর তার জীবন থেকে চলে গেলো, যদি তিনি খালাস পান কে তাকে এই সময়গুলো ফিরিয়ে দেবে। রানা প্লাজার ভবন ধস নিছক একটি দুর্ঘটনা।

ভবনটির প্রকৃত মালিক সোহেল রানাও নন, তার বাবা আব্দুল খালেক। এখানে রানার কোনো হাত নেই। তার মতে আসামি সোহেল রানা বিচারহীনভাবে কারাগারে আটক রয়েছেন বলে জানান তিনি।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৪:২০:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
২৪
Translate »

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি এক যুগেও মেলেনি নিখোঁজদের হদিস, শেষ হয়নি বিচার

আপডেট : ০৪:২০:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

আজ ২৪ এপ্রিল। ২০১৩ সালের এই দিনে সাভার বাসস্ট্যান্ডের কাছে নয় তলা ভবন রানা প্লাজা ধসে সহস্রাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়। অবৈধভাবে কারখানা স্থাপন করা ভবন ধসে পড়ায় নিহত হন এক হাজার ১৩৪ জন। আহত হন আরও দুই হাজারের বেশি। তাদের সবাই ছিলেন পোশাক শ্রমিক। এ ঘটনায় হত্যা ও ইমারত নির্মাণ আইনে দুটি মামলা হয়। এর কোনোটিরই তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হলেও অন্য মামলায় রয়েছে স্থগিতাদেশ। এ ঘটনার এক যুগ পেরিয়ে গেলেও থামেনি স্বজনদের কান্না। আতঙ্ক কাটেনি আহতদের। দীর্ঘ ১২ বছরেও নিষ্পত্তি হয়নি মামলা।

আসামি পক্ষ বলছেন, দুই মামলায় বিচার শেষ না হওয়ায় বিচারহীনভাবে কারাগারে আটক রয়েছেন সোহেন রানা। রাষ্ট্রপক্ষ বলছেন, মামলার অভিযোগ গঠনে আসামিরা উচ্চ আদালতে যাওয়ায় সাক্ষ্য শুরু হতে কয়েক বছর চলে যায়। দ্রুত মামলা দুটি নিষ্পত্তি করা হবে বলে রাষ্ট্রপক্ষের প্রত্যাশা।

জানা যায়, প্রায় আট বছর আগে এই দুই মামলার অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেন বিচারিক আদালত। অভিযোগ গঠনের প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর পর হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। অন্যদিকে একই ঘটনায় দায়ের করা ইমারত নির্মাণ আইনের মামলা উচ্চ আদালতের আদেশে স্থগিত রয়েছে। মামলা স্থগিত থাকায় অভিযোগ গঠনের আট বছরেও শুরু হয়নি সাক্ষ্যগ্রহণ।

আদালত সূত্র জানায়, হত্যা মামলায় অভিযোগ গঠনের পর এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যান আট আসামি। এদের মধ্যে সাতজনের আবেদন নিষ্পত্তি হয়। মামলার আরেক আসামি সাভার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার হাজি মোহাম্মদ আলীর পক্ষে করা আবেদনে মামলার বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি মামলার বাদী সাভার থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওয়ালী আশরাফের সাক্ষ্য দেওয়ার মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

মামলার ৫৯৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। ৮৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ বর্তমানে চলমান রয়েছে। সর্বশেষ চলতি বছরের ২১ এপ্রিল মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল। এদিন চারজন আদালতে সাক্ষ্য দেন। চারজনের মধ্যে তিনজনের জেরা শেষ হলেও একজনের জেরা শেষ হয়নি। ২৮ এপ্রিল মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আদালত নতুন দিন ধার্য করেন। অন্যদিকে ইমারত নির্মাণ আইনের মামলায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে কয়েকজন আসামি রিভিশন আবেদন করেন। এদের মধ্যে আসামি ফ্যান্টম অ্যাপারেলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আমিনুল ইসলামকে মামলাটি থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। এছাড়া মামলার আরেক আসামি সাভার পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. রেফাতউল্লাহর পক্ষে ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর এক বছরের জন্য মামলার বিচারিক কার্যক্রম স্থগিতের আদেশ দেন উচ্চ আদালত। হত্যা মামলার বিষয়ে ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি বিমল সমদ্দার বলেন, আমরা আলোচিত মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করতে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছি। আশা করছি মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম দ্রুত শেষ করা যাবে। ইমারত নির্মাণ আইনের মামলা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আনোয়ারুল কবির বাবুল বলেন, মামলাটি উচ্চ আদালতে মামলার বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করা যায়নি। এছাড়া সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য নতুন দিনও পড়েনি। আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ বলেন, মামলা দুটির বিচার শেষ না হওয়ায় আসামি সোহেল রানা কারামুক্তি হতে পারছেন না। তিনি বিচারহীনভাবে কারাগারে আটক রয়েছেন। পোশাক শ্রমিক হত্যা মামলায় সাভার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওয়ালী আশরাফ ভবন নির্মাণে ‘অবহেলা ও ত্রুটিজনিত হত্যা’ মামলা করেন।

২০১৫ সালের ২৬ এপ্রিল সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয়কৃষ্ণ কর ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় সাক্ষী করা হয় ৫৯৪ জনকে। মামলার ৪১ আসামির মধ্যে ভবন মালিক সোহেল রানার বাবা আব্দুল খালেক, আবু বক্কর সিদ্দিক ও আবুল হোসেন মারা যান। তিনজনকে বাদ দিয়ে হত্যা মামলায় এখন আসামির সংখ্যা ৩৮ জন। ইমারত নির্মাণ আইনের মামলায় ইমারত নির্মাণ আইন না মেনে ভবন নির্মাণ করায় রাজউকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন সাভার থানায় একটি মামলা করেন। ২০১৬ সালের ১৪ জুন ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ইশতিয়াক হোসেন জিপু গণমাধ্যমকে বলেন, উচ্চ আদালত এক আসামির পক্ষে মামলার কার্যক্রম ছয় মাস স্থগিত করেন। তখনকার সময়ে রাষ্ট্রপক্ষ মামলা এগিয়ে নিতে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পর মামলাটি নিয়ে কাজ করছি। আসামিপক্ষ যদি স্থগিতাদেশ বাড়াতে না পারে, তাহলে মামলার বিচার শুরু হবে। আদালত তাদের উচ্চ আদালতের আদেশ দাখিল করতে বলেছেন। তারা দাখিল করতে না পারলে দ্রুত সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে। দীর্ঘ সময় চলে গেছে। আমরা আদালতে সাক্ষী হাজির করে মামলার বিচার দ্রুত শেষ করার উদ্যোগ নেব।

এসব বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী মাসুদ খান খোকন গণমাধ্যমকে বলেন, রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় হত্যা ও ইমারত নির্মাণ আইনের দুই মামলায় ৯ বছর আগে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। কয়েকজন আসামি উচ্চ আদালতে অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেন। ইমারত নির্মাণ আইনের মামলাটিতে এক আসামির পক্ষে স্থগিতাদেশ থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি। মামলা দুইটির বিচার শেষ না হওয়ায় আসামি সোহেল রানা কারামুক্ত হতে পারছেন না।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ১২ বছর কারাগারে রয়েছেন সোহেন রানা। এই যে এতগুলো বছর তার জীবন থেকে চলে গেলো, যদি তিনি খালাস পান কে তাকে এই সময়গুলো ফিরিয়ে দেবে। রানা প্লাজার ভবন ধস নিছক একটি দুর্ঘটনা।

ভবনটির প্রকৃত মালিক সোহেল রানাও নন, তার বাবা আব্দুল খালেক। এখানে রানার কোনো হাত নেই। তার মতে আসামি সোহেল রানা বিচারহীনভাবে কারাগারে আটক রয়েছেন বলে জানান তিনি।