যৌথ বাহিনীর অভিযানে মাদক সহ কৃষকদল নেতা গ্রেফতার

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার ধুলজুড়ি গ্রামে সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তদন্তে প্রমাণ মিলেছে, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের একজন, কৃষকদলের স্থানীয় নেতা জাহিদ শেখ নিজেই নিজের রান্নাঘরে আগুন লাগিয়েছেন। এই ঘটনায় তাকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। একইসঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে আরও তিনজনকে—সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিনের ছেলে শাকিল আহমেদ, তাঁর ভাতিজা বরকত ও জাহিদ শেখ,সোহাগ নামে এক সহযোগীকে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাত ২টার দিকে অভিযান চালিয়ে ধুলজুড়ি গ্রাম থেকেই তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের বর্তমানে জিজ্ঞাসাবাদ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আলফাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ হারুন অর রশিদ।
প্রসঙ্গত, ২৯ এপ্রিল রাত আনুমানিক তিনটার দিকে ধুলজুড়ি গ্রামের কালীমন্দির, দেবাশীষ রায়ের করাতকল, সুজন সরকারের গোয়ালঘর এবং তিনটি রান্নাঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আগুনে পুড়ে যায় কালী ও শিবের প্রতিমা, ধান, বিচালি, স্যালোমেশিন ও সেচ পাইপসহ বেশ কিছু মালামাল। তবে বসতবাড়িগুলো অক্ষত ছিল।
অভিযুক্ত জাহিদ শেখ প্রথমে নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত দাবি করলেও তদন্তে উঠে আসে, তিনিই পরিকল্পনা করে নিজের রান্নাঘরে আগুন লাগান এবং তা থেকে অন্যান্য স্থানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি ছিল একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ঘটনা, যার পেছনে সামাজিক বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে।
আলফাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুন অর রশিদ বলেন, “তদন্তে আমরা প্রথামিক ভাবে সন্দেহ হলে তাকে(জাহিদ) গ্রেফতার করি ,পরে আরো তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়, জাহিদ শেখসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে আগুন দেওয়ার কথা স্বীকার করেছে, গ্রেফতার করার সময় তাদের কাছে থেকে দেশিয় অস্ত্র, ইয়াবা,লাইসেন্স বিহীন মটর সাইকেল উদ্ধার করা হয়, তাদের নামে আগুন দেওয়া সহ আরো পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। তদন্ত চলছে, আরও কেউ জড়িত থাকলে আইনের আওতায় আনা হবে।”
অপরদিকে, ধুলজুড়ি গ্রামে এই ঘটনার পর থেকেই আতঙ্ক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষ বলছেন, রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে সমাজে অশান্তি ছড়ানোর এধরনের চেষ্টা যেন কঠোরভাবে দমন করা হয়।
তদন্ত চলমান রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।