London ০৯:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
ওয়াকফ আইন নিয়ে উত্তপ্ত ভারত সংখ্যালঘু মুসলিমদের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান বাংলাদেশের গাজায় ইসরায়েলের হামলায় একদিনে নিহত ৬৪ ইসরায়েলি হামলায় একই পরিবারের ১০ সদস্য নিহত যুক্তরাষ্ট্রে গণহারে ভারতীয় ছাত্রদের ভিসা বাতিল, আছে বাংলাদেশিরাও আখাউড়া প্রিন্ট ও টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কমিটি গঠন: সভাপতি -,মিশু, সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ কৃষকদের পাশে উপজেলা প্রশাসন: ধান কাটা ও লিচু চাষে সহায়তায় সক্রিয় ভূমিকা বার্সেলোনায় না ফেরার কারণ ও ইয়ামালের প্রশংসায় যা বললেন মেসি কসবায় হজ ও উমরাহ প্রশিক্ষণ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত টঙ্গীতে ভাই-বোনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান না হলে মিয়ানমারে শান্তি আসবে না

যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারে পাকিস্তান-ভুটানসহ ৪৩ দেশ

অনলাইন ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে আগের চেয়েও কঠোর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা করছেন। খসড়া তালিকা অনুসারে, ৪৩টি দেশের ওপর বিভিন্ন মাত্রায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে পারে বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। শুক্রবার (১৪ মার্চ) নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের সুপারিশের ভিত্তিতে তৈরি খসড়া তালিকাকে তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রথম ভাগের দেশগুলোর ওপর সম্পূর্ণ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, দ্বিতীয় ভাগের দেশগুলোর ওপর নতুন ভিসা দেওয়া বন্ধ ও তৃতীয় ধাপের দেশগুলোকে ৬০ দিনের সময় দেওয়া হবে ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্বেগ দূর করতে।

‘রেড লিস্ট’

এই তালিকায় রয়েছে মোট ১১টি দেশ। এসব দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ একেবারে নিষিদ্ধ করা হবে।

দেশগুলো হলো: আফগানিস্তান, ভুটান, কিউবা, ইরান, লিবিয়া, উত্তর কোরিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া, ভেনেজুয়েলা ও ইয়েমেন।

‘অরেঞ্জ লিস্ট’

আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে চলা এই তালিকায় রয়েছে ১০টি দেশের নাম। সেগুলো হলো: বেলারুশ, ইরিত্রিয়া, হাইতি, লাওস, মিয়ানমার, পাকিস্তান, রাশিয়া, সিয়েরা লিওন, দক্ষিণ সুদান ও তুর্কমেনিস্তান।

এসব দেশের নাগরিকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে কঠোর বিধিনিষেধ থাকলেও সেটি পুরোপুরি বন্ধ হবে না। ধনী ব্যবসায়িক ভ্রমণকারীদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হতে পারে, কিন্তু অভিবাসী বা পর্যটন ভিসা বন্ধ থাকবে। তাছাড়া, ভিসা পাওয়ার জন্য দেশগুলোর নাগরিকদের বাধ্যতামূলকভাবে সরাসরি সাক্ষাৎকারের মুখোমুখি হতে হবে।

‘ইয়েলো লিস্ট’

এই তালিকায় রয়েছে মোট ২২টি দেশ। এই দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ দূর করার জন্য ৬০ দিন পাবে। যদি এর মধ্যে তারা এসব উদ্বেগ দূর করতে ব্যর্থ হয়, তবে পূর্ণাঙ্গ অথবা আংশিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হতে হবে।

দেশগুলো হলো: অ্যাঙ্গোলা, অ্যান্টিগুয়া এবং বারবুডা, বেনিন, বুরকিনা ফাসো, কম্বোডিয়া, ক্যামেরুন, কেপ ভার্দে, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র, ডমিনিকা, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, গাম্বিয়া, লাইবেরিয়া, মালাউই, মালি, মৌরিতানিয়া, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, সাও টোমে অ্যান্ড প্রিন্সিপ, ভানুয়াতু এবং জিম্বাবুয়ে।

তালিকা ঘিরে বিতর্ক

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তালিকায় অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর ভ্রমণকারীদের যথাযথভাবে যাচাই করা কঠিন হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে ইচ্ছুক নাগরিকদের পাসপোর্ট ও পরিচয় সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়ের ক্ষেত্রে ঘাটতি থাকায় এসব দেশের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের সুপারিশ করা হয়েছে।

তবে, এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। বিশেষ করে, ভূটানকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ দেশটি শান্তিপূর্ণ এবং নিরাপদ বলে পরিচিত। এছাড়া, রাশিয়া ও ভেনেজুয়েলার মতো দেশগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ।

জানা গেছে, ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে ক্ষমতাগ্রহণের পর কোন কোন দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত তার একটি তালিকা করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর জন্য পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের ৬০ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছিলেন তিনি। অর্থাৎ, সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। এর মধ্যেই নিষেধাজ্ঞার চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করবে প্রশাসন।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই তালিকা হোয়াইট হাউজে পৌঁছানোর আগে আরও কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। বর্তমান নিষেধাজ্ঞার চূড়ান্ত রূপ কী হবে, তা নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৬:৫০:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
১৫
Translate »

যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারে পাকিস্তান-ভুটানসহ ৪৩ দেশ

আপডেট : ০৬:৫০:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে আগের চেয়েও কঠোর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা করছেন। খসড়া তালিকা অনুসারে, ৪৩টি দেশের ওপর বিভিন্ন মাত্রায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে পারে বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। শুক্রবার (১৪ মার্চ) নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের সুপারিশের ভিত্তিতে তৈরি খসড়া তালিকাকে তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রথম ভাগের দেশগুলোর ওপর সম্পূর্ণ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, দ্বিতীয় ভাগের দেশগুলোর ওপর নতুন ভিসা দেওয়া বন্ধ ও তৃতীয় ধাপের দেশগুলোকে ৬০ দিনের সময় দেওয়া হবে ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্বেগ দূর করতে।

‘রেড লিস্ট’

এই তালিকায় রয়েছে মোট ১১টি দেশ। এসব দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ একেবারে নিষিদ্ধ করা হবে।

দেশগুলো হলো: আফগানিস্তান, ভুটান, কিউবা, ইরান, লিবিয়া, উত্তর কোরিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া, ভেনেজুয়েলা ও ইয়েমেন।

‘অরেঞ্জ লিস্ট’

আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে চলা এই তালিকায় রয়েছে ১০টি দেশের নাম। সেগুলো হলো: বেলারুশ, ইরিত্রিয়া, হাইতি, লাওস, মিয়ানমার, পাকিস্তান, রাশিয়া, সিয়েরা লিওন, দক্ষিণ সুদান ও তুর্কমেনিস্তান।

এসব দেশের নাগরিকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে কঠোর বিধিনিষেধ থাকলেও সেটি পুরোপুরি বন্ধ হবে না। ধনী ব্যবসায়িক ভ্রমণকারীদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হতে পারে, কিন্তু অভিবাসী বা পর্যটন ভিসা বন্ধ থাকবে। তাছাড়া, ভিসা পাওয়ার জন্য দেশগুলোর নাগরিকদের বাধ্যতামূলকভাবে সরাসরি সাক্ষাৎকারের মুখোমুখি হতে হবে।

‘ইয়েলো লিস্ট’

এই তালিকায় রয়েছে মোট ২২টি দেশ। এই দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ দূর করার জন্য ৬০ দিন পাবে। যদি এর মধ্যে তারা এসব উদ্বেগ দূর করতে ব্যর্থ হয়, তবে পূর্ণাঙ্গ অথবা আংশিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হতে হবে।

দেশগুলো হলো: অ্যাঙ্গোলা, অ্যান্টিগুয়া এবং বারবুডা, বেনিন, বুরকিনা ফাসো, কম্বোডিয়া, ক্যামেরুন, কেপ ভার্দে, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র, ডমিনিকা, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, গাম্বিয়া, লাইবেরিয়া, মালাউই, মালি, মৌরিতানিয়া, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, সাও টোমে অ্যান্ড প্রিন্সিপ, ভানুয়াতু এবং জিম্বাবুয়ে।

তালিকা ঘিরে বিতর্ক

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তালিকায় অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর ভ্রমণকারীদের যথাযথভাবে যাচাই করা কঠিন হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে ইচ্ছুক নাগরিকদের পাসপোর্ট ও পরিচয় সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়ের ক্ষেত্রে ঘাটতি থাকায় এসব দেশের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের সুপারিশ করা হয়েছে।

তবে, এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। বিশেষ করে, ভূটানকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ দেশটি শান্তিপূর্ণ এবং নিরাপদ বলে পরিচিত। এছাড়া, রাশিয়া ও ভেনেজুয়েলার মতো দেশগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ।

জানা গেছে, ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে ক্ষমতাগ্রহণের পর কোন কোন দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত তার একটি তালিকা করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর জন্য পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের ৬০ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছিলেন তিনি। অর্থাৎ, সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। এর মধ্যেই নিষেধাজ্ঞার চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করবে প্রশাসন।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই তালিকা হোয়াইট হাউজে পৌঁছানোর আগে আরও কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। বর্তমান নিষেধাজ্ঞার চূড়ান্ত রূপ কী হবে, তা নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে।