London ০৪:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান নিষিদ্ধ করলেন বাইডেন

অনলাইন ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলীয় অঞ্চলে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত সোমবার (৬ জানুয়ারি) এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন তিনি। পরিবেশ রক্ষায় এটি বাইডেন প্রশাসনের অন্যতম বড় পদক্ষেপ হলেও সমালোচকরা বলছেন, তার এই সিদ্ধান্ত জ্বালানি রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে দুর্বল করতে পারে।

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার মাত্র দু’সপ্তাহ আগে এমন পদক্ষেপ নিলেন বাইডেন। নির্বাচনী প্রচারণায় আরও বেশি করে তেল-গ্যাস উত্তোলনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ট্রাম্প।

১৯৫৩ সালের আউটার কন্টিনেন্টাল শেল্ফ ল্যান্ডস অ্যাক্ট অনুযায়ী বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূল, উপসাগরীয় মেক্সিকোর পূর্বাঞ্চল এবং আলাস্কার উত্তর বেয়ারিং সাগরের কিছু অংশ থেকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের অনুমতি প্রত্যাহার করেছেন। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় ৬২ কোটি ৫০ লাখ একরের বেশি উপকূলীয় এলাকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

হোয়াইট হাউসের তথ্যমতে, এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ সীমাহীন, যা ভবিষ্যতে এসব অঞ্চলে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করবে।

এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেছেন, এই উপকূলগুলোতে খনন কার্যক্রম অপরিবর্তনীয় ক্ষতির কারণ হতে পারে। এটি আমাদের দেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণে প্রয়োজনীয় নয়। তিনি আরও বলেন, ২০১০ সালের ডিপওয়াটার হরাইজন দুর্ঘটনার মতো বিপর্যয় এড়াতে আমাদের এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে।

ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া

বাইডেন প্রশাসনের জারি করা এই নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে তিনি বলেন, এই নির্বাহী আদেশ জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে একটি ব্যর্থ পরিবেশ নীতি বাস্তবায়নের চেষ্টা। এটি খুব শিগগির বাতিল করা হবে।

আগামী ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন ট্রাম্প।

সমালোচনা ও উদ্বেগ

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাইডেনের এই সিদ্ধান্ত মার্কিন জ্বালানি নীতিতে স্থায়িত্বের অভাব তৈরি করতে পারে এবং আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে দুর্বল করবে।

ইউএস নেভাল পোস্টগ্রাজুয়েট স্কুলের অধ্যাপক ব্রেন্ডা শ্যাফার বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত বিশ্ব জ্বালানি বাজারকে রাশিয়া, ভেনেজুয়েলা ও ইরানের মতো দেশগুলোর ওপর আরও নির্ভরশীল করবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১২:৪১:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫
১৪
Translate »

যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান নিষিদ্ধ করলেন বাইডেন

আপডেট : ১২:৪১:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলীয় অঞ্চলে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত সোমবার (৬ জানুয়ারি) এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন তিনি। পরিবেশ রক্ষায় এটি বাইডেন প্রশাসনের অন্যতম বড় পদক্ষেপ হলেও সমালোচকরা বলছেন, তার এই সিদ্ধান্ত জ্বালানি রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে দুর্বল করতে পারে।

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার মাত্র দু’সপ্তাহ আগে এমন পদক্ষেপ নিলেন বাইডেন। নির্বাচনী প্রচারণায় আরও বেশি করে তেল-গ্যাস উত্তোলনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ট্রাম্প।

১৯৫৩ সালের আউটার কন্টিনেন্টাল শেল্ফ ল্যান্ডস অ্যাক্ট অনুযায়ী বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূল, উপসাগরীয় মেক্সিকোর পূর্বাঞ্চল এবং আলাস্কার উত্তর বেয়ারিং সাগরের কিছু অংশ থেকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের অনুমতি প্রত্যাহার করেছেন। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় ৬২ কোটি ৫০ লাখ একরের বেশি উপকূলীয় এলাকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

হোয়াইট হাউসের তথ্যমতে, এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ সীমাহীন, যা ভবিষ্যতে এসব অঞ্চলে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করবে।

এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেছেন, এই উপকূলগুলোতে খনন কার্যক্রম অপরিবর্তনীয় ক্ষতির কারণ হতে পারে। এটি আমাদের দেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণে প্রয়োজনীয় নয়। তিনি আরও বলেন, ২০১০ সালের ডিপওয়াটার হরাইজন দুর্ঘটনার মতো বিপর্যয় এড়াতে আমাদের এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে।

ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া

বাইডেন প্রশাসনের জারি করা এই নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে তিনি বলেন, এই নির্বাহী আদেশ জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে একটি ব্যর্থ পরিবেশ নীতি বাস্তবায়নের চেষ্টা। এটি খুব শিগগির বাতিল করা হবে।

আগামী ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন ট্রাম্প।

সমালোচনা ও উদ্বেগ

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাইডেনের এই সিদ্ধান্ত মার্কিন জ্বালানি নীতিতে স্থায়িত্বের অভাব তৈরি করতে পারে এবং আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে দুর্বল করবে।

ইউএস নেভাল পোস্টগ্রাজুয়েট স্কুলের অধ্যাপক ব্রেন্ডা শ্যাফার বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত বিশ্ব জ্বালানি বাজারকে রাশিয়া, ভেনেজুয়েলা ও ইরানের মতো দেশগুলোর ওপর আরও নির্ভরশীল করবে।