London ০৩:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যমুনায় ঝান্ডা উড়িয়ে নদী দখল করে মাছ শিকার

অনলাইন ডেস্ক

সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে যমুনা নদীর বুকজুড়ে জেগে ওঠা অসংখ্য ছোট বড় বালুচরের ফাঁকে খাঁড়ি ও কোল-কাছার সৃষ্টি হয়েছে। এতে আটকা পড়ছে নদীর বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। তবে এসব মাছ স্থানীয় স্বার্থান্বেষী দখলদাররা ঝান্ডা উড়িয়ে সীমানা দখল নিয়ে আহরণ করছেন। এতে স্থানীয় জেলেসহ অন্যরা নদীর মাছ শিকার করতে পারছে না।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, উপজেলার শুভগাছা ইউনিয়নের ঘাটি শুভগাছায় যমুনা নদীর কয়েকটি স্থানে ঝান্ডা দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া একই উপজেলার তেকানি ইউনিয়নের কিনিরবেড় থেকে উত্তরের কান্তনগর গ্ৰাম পর্যন্ত নদীর প্রায় ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও প্রায় এক কিলোমিটার প্রস্থ কোল (জলাধার) তৈরি হয়েছে। যার চারপাশ বালুচর এবং নদী মূল স্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন।

এই ঝান্ডার চিত্র দেখা গেছে উপজেলার মনসুর নগর, খাসরাজবাড়ী ও নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নের ফুলজোড়সহ যমুনা নদীর বিভিন্ন স্থানে।

অবৈধভাবে নদীতে ঝান্ডা উড়িয়ে এই মাছ শিকার বন্ধের দাবি জানিয়ে আব্দুর করিম নামের এক শিক্ষক জাগো নিউজকে বলেন, কতিপয় কিছু লোক এমন কৌশলে নদী দখল করে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার মাছ বাজারে বিক্রি করছে। কিন্তু প্রকৃত জেলেরা নদীতে জাল ফেলার পানি পাচ্ছে না। এ জন্য তিনি দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

স্থানীয় জেলে হরি দাস অভিযোগ করে বলেন, নদীর যেখানে মাছ সেখানেই ঝান্ডা। এর আশপাশে গেলেই গালিগালাজ, মারধরের শিকার হতে হয়। মাছ ধরার নৌকা তারা নিয়ে যায়। কিছু স্বার্থান্বেষী লোকের নিষেধাজ্ঞায় নদীতে তারা মাছ শিকার করতে পারছেন না। এ সময় তারা প্রভাবশালী স্বার্থান্বেষীদের নাম বললেও নিজেদের নিরাপত্তা বিবেচনায় সংবাদে না লেখার অনুরোধ জানান।

যমুনায় ঝান্ডা উড়িয়ে নদী দখল করে মাছ শিকার

উপজেলার চরাঞ্চলের ৬টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের জনসাধারণের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চিহ্নিত কিছু স্বার্থান্বেষীদের কারণে প্রতিবছর তারা মাছ শিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অনেকে আবার নিজের বাড়ির সামনের নদী তীর থেকেও নিষেধাজ্ঞার কারণে মাছ ধরতে পারেননি জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) অবৈধ গুল্লি জালের মালিক মানিকদিয়া গ্ৰামের ইদ্রিস আলীকে ফোন করে মাছের আড়তদার পরিচয় দিলে তিনি বলেন, বুরুঙ্গী চরে গুল্লিজাল ফেলেছিলাম। ওখানে তেমন বড় মাছ হয়নি। ছোট ইলিশ আর সব ছোট মাছ। আজ জাল তুলে ফেলেছি, কান্তনগরে জাল ফেলার কথা চলছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেওয়ান আকরামুল হক জাগো নিউজকে বলেন, এ বিষয়টি অবগত হয়ে জরুরিভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মৎস্য কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাসান মাহমুদুল হক বলেন, ঝান্ডা উড়িয়ে নদী দখল করে মাছ ধরা অবৈধ। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৯:২২:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
১৫
Translate »

যমুনায় ঝান্ডা উড়িয়ে নদী দখল করে মাছ শিকার

আপডেট : ০৯:২২:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে যমুনা নদীর বুকজুড়ে জেগে ওঠা অসংখ্য ছোট বড় বালুচরের ফাঁকে খাঁড়ি ও কোল-কাছার সৃষ্টি হয়েছে। এতে আটকা পড়ছে নদীর বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। তবে এসব মাছ স্থানীয় স্বার্থান্বেষী দখলদাররা ঝান্ডা উড়িয়ে সীমানা দখল নিয়ে আহরণ করছেন। এতে স্থানীয় জেলেসহ অন্যরা নদীর মাছ শিকার করতে পারছে না।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, উপজেলার শুভগাছা ইউনিয়নের ঘাটি শুভগাছায় যমুনা নদীর কয়েকটি স্থানে ঝান্ডা দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া একই উপজেলার তেকানি ইউনিয়নের কিনিরবেড় থেকে উত্তরের কান্তনগর গ্ৰাম পর্যন্ত নদীর প্রায় ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও প্রায় এক কিলোমিটার প্রস্থ কোল (জলাধার) তৈরি হয়েছে। যার চারপাশ বালুচর এবং নদী মূল স্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন।

এই ঝান্ডার চিত্র দেখা গেছে উপজেলার মনসুর নগর, খাসরাজবাড়ী ও নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নের ফুলজোড়সহ যমুনা নদীর বিভিন্ন স্থানে।

অবৈধভাবে নদীতে ঝান্ডা উড়িয়ে এই মাছ শিকার বন্ধের দাবি জানিয়ে আব্দুর করিম নামের এক শিক্ষক জাগো নিউজকে বলেন, কতিপয় কিছু লোক এমন কৌশলে নদী দখল করে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার মাছ বাজারে বিক্রি করছে। কিন্তু প্রকৃত জেলেরা নদীতে জাল ফেলার পানি পাচ্ছে না। এ জন্য তিনি দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

স্থানীয় জেলে হরি দাস অভিযোগ করে বলেন, নদীর যেখানে মাছ সেখানেই ঝান্ডা। এর আশপাশে গেলেই গালিগালাজ, মারধরের শিকার হতে হয়। মাছ ধরার নৌকা তারা নিয়ে যায়। কিছু স্বার্থান্বেষী লোকের নিষেধাজ্ঞায় নদীতে তারা মাছ শিকার করতে পারছেন না। এ সময় তারা প্রভাবশালী স্বার্থান্বেষীদের নাম বললেও নিজেদের নিরাপত্তা বিবেচনায় সংবাদে না লেখার অনুরোধ জানান।

যমুনায় ঝান্ডা উড়িয়ে নদী দখল করে মাছ শিকার

উপজেলার চরাঞ্চলের ৬টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের জনসাধারণের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চিহ্নিত কিছু স্বার্থান্বেষীদের কারণে প্রতিবছর তারা মাছ শিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অনেকে আবার নিজের বাড়ির সামনের নদী তীর থেকেও নিষেধাজ্ঞার কারণে মাছ ধরতে পারেননি জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) অবৈধ গুল্লি জালের মালিক মানিকদিয়া গ্ৰামের ইদ্রিস আলীকে ফোন করে মাছের আড়তদার পরিচয় দিলে তিনি বলেন, বুরুঙ্গী চরে গুল্লিজাল ফেলেছিলাম। ওখানে তেমন বড় মাছ হয়নি। ছোট ইলিশ আর সব ছোট মাছ। আজ জাল তুলে ফেলেছি, কান্তনগরে জাল ফেলার কথা চলছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেওয়ান আকরামুল হক জাগো নিউজকে বলেন, এ বিষয়টি অবগত হয়ে জরুরিভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মৎস্য কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাসান মাহমুদুল হক বলেন, ঝান্ডা উড়িয়ে নদী দখল করে মাছ ধরা অবৈধ। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।