London ১২:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:

মাহুতকে পিষে মেরে ফেলা হাতি এখন গাজীপুরের সাফারি পার্কে

গাজীপুরের শ্রীপুরের সাফারি পার্কে আনা হাতিটিকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে ট্রাক থেকে নামানো চেষ্টা করা হয়। গতকাল বুধবার বিকেলে তোলা ছবি

হাতিটিকে তখনো ট্রাক থেকে নামানো যায়নি। প্রশিক্ষিত কর্মকর্তারা কিছুটা দূরে ছিলেন সতর্ক অবস্থানে। আরেক পাশে কলাগাছ, ঘাস প্রভৃতি খাদ্য দিয়ে প্রাণীটিকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টায় ব্যস্ত বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মাহুতেরা। কিন্তু কোনোভাবেই সাড়া দিচ্ছিল না এটি। ট্রাক থেকে নামানোর নতুন কৌশল হিসেবে এবার নিজস্ব কিছু সংকেতের (আওয়াজ ও অঙ্গভঙ্গি) প্রয়োগ করলেন তাঁরা। প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় এই বেলায় বুঝি মন গলল তার! হাতিটি সাহেবি ভঙ্গিতে নিজে নিজেই নিচে নেমে এল। হাবভাব দেখে মনেই হচ্ছিল না, মাত্র এক দিন আগেই নিজের মাহুতকে পিষে মেরেছে এটি।

গতকাল বুধবার বিকেলে গাজীপুরের শ্রীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের হাতিশালায় এ দৃশ্য দেখা গেছে। কর্মকর্তারা বলেন, গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে পুরুষ হাতিটিকে পার্কের হাতিশালায় নামানো হয়। এর আগে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থেকে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে একটি ট্রাকে করে প্রাণীটিকে সেখানে আনা হয়েছিল। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন কলাকৌশল প্রয়োগের পর এটিকে নামাতে সক্ষম হন পার্কের মাহুতেরা।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সকালে কোটালীপাড়া উপজেলার হিরন ইউনিয়নের পুলসার গ্রামে হাতিটির পিঠে বসে বিভিন্ন দোকান থেকে চাঁদা তুলছিলেন মাহুত নজরুল ইসলাম। হঠাৎ তাঁকে শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে নিচে ফেলে দেয় প্রাণীটি। একপর্যায়ে তাঁকে আছাড় মেরে এটি পায়ের নিচে পিষতে থাকে। পরে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণে আনেন বন বিভাগের কর্মীরা।

বিশেষ ব্যবস্থাপনায় গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থেকে ট্রাকে করে হাতিটিকে আনা হয়। গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে

বিশেষ ব্যবস্থাপনায় গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থেকে ট্রাকে করে হাতিটিকে আনা হয়। গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ছবি

সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, পার্কটির বন্য প্রাণী চিকিৎসক মুস্তাফিজুর রহমান, ল্যাব টেকনিশিয়ান আতিকুর রহমান ও ওয়াইল্ড লাইফ ইন্সপেক্টর মো. রাজু কোটালীপাড়া থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় হাতিকে সেখানে এনেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পার্কটির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোটালীপাড়ায় পায়ে পিষে মাহুতকে মেরে ফেলার ঘটনাটি জানতে পেরে হাতিটিকে উদ্ধারের নির্দেশনা দেওয়া হয়। আমরা উদ্ধারের পাশাপাশি পার্কে এটিকে নামানোর ক্ষেত্রেও সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর ট্রাক থেকে নিচে নেমে আসে হাতিটি। গতকাল বিকেলে

প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর ট্রাক থেকে নিচে নেমে আসে হাতিটি। গতকাল বিকেলে

সাফারি পার্কটিকে আগে থেকেই আটটি হাতি অবস্থান করছে বলে জানান রফিকুল ইসলাম। তাঁর ভাষ্য, এবার এই পালে যোগ হলো ৯ নম্বর সদস্য।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৫:৩৮:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৫৪
Translate »

মাহুতকে পিষে মেরে ফেলা হাতি এখন গাজীপুরের সাফারি পার্কে

আপডেট : ০৫:৩৮:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গাজীপুরের শ্রীপুরের সাফারি পার্কে আনা হাতিটিকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে ট্রাক থেকে নামানো চেষ্টা করা হয়। গতকাল বুধবার বিকেলে তোলা ছবি

হাতিটিকে তখনো ট্রাক থেকে নামানো যায়নি। প্রশিক্ষিত কর্মকর্তারা কিছুটা দূরে ছিলেন সতর্ক অবস্থানে। আরেক পাশে কলাগাছ, ঘাস প্রভৃতি খাদ্য দিয়ে প্রাণীটিকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টায় ব্যস্ত বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মাহুতেরা। কিন্তু কোনোভাবেই সাড়া দিচ্ছিল না এটি। ট্রাক থেকে নামানোর নতুন কৌশল হিসেবে এবার নিজস্ব কিছু সংকেতের (আওয়াজ ও অঙ্গভঙ্গি) প্রয়োগ করলেন তাঁরা। প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় এই বেলায় বুঝি মন গলল তার! হাতিটি সাহেবি ভঙ্গিতে নিজে নিজেই নিচে নেমে এল। হাবভাব দেখে মনেই হচ্ছিল না, মাত্র এক দিন আগেই নিজের মাহুতকে পিষে মেরেছে এটি।

গতকাল বুধবার বিকেলে গাজীপুরের শ্রীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের হাতিশালায় এ দৃশ্য দেখা গেছে। কর্মকর্তারা বলেন, গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে পুরুষ হাতিটিকে পার্কের হাতিশালায় নামানো হয়। এর আগে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থেকে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে একটি ট্রাকে করে প্রাণীটিকে সেখানে আনা হয়েছিল। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন কলাকৌশল প্রয়োগের পর এটিকে নামাতে সক্ষম হন পার্কের মাহুতেরা।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সকালে কোটালীপাড়া উপজেলার হিরন ইউনিয়নের পুলসার গ্রামে হাতিটির পিঠে বসে বিভিন্ন দোকান থেকে চাঁদা তুলছিলেন মাহুত নজরুল ইসলাম। হঠাৎ তাঁকে শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে নিচে ফেলে দেয় প্রাণীটি। একপর্যায়ে তাঁকে আছাড় মেরে এটি পায়ের নিচে পিষতে থাকে। পরে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণে আনেন বন বিভাগের কর্মীরা।

বিশেষ ব্যবস্থাপনায় গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থেকে ট্রাকে করে হাতিটিকে আনা হয়। গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে

বিশেষ ব্যবস্থাপনায় গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থেকে ট্রাকে করে হাতিটিকে আনা হয়। গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ছবি

সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, পার্কটির বন্য প্রাণী চিকিৎসক মুস্তাফিজুর রহমান, ল্যাব টেকনিশিয়ান আতিকুর রহমান ও ওয়াইল্ড লাইফ ইন্সপেক্টর মো. রাজু কোটালীপাড়া থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় হাতিকে সেখানে এনেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পার্কটির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোটালীপাড়ায় পায়ে পিষে মাহুতকে মেরে ফেলার ঘটনাটি জানতে পেরে হাতিটিকে উদ্ধারের নির্দেশনা দেওয়া হয়। আমরা উদ্ধারের পাশাপাশি পার্কে এটিকে নামানোর ক্ষেত্রেও সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর ট্রাক থেকে নিচে নেমে আসে হাতিটি। গতকাল বিকেলে

প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর ট্রাক থেকে নিচে নেমে আসে হাতিটি। গতকাল বিকেলে

সাফারি পার্কটিকে আগে থেকেই আটটি হাতি অবস্থান করছে বলে জানান রফিকুল ইসলাম। তাঁর ভাষ্য, এবার এই পালে যোগ হলো ৯ নম্বর সদস্য।