London ১০:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মানবাধিকার ও বাক্‌স্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বাংলাদেশ: ড. ইউনূস

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে বর্তমানে নিউইয়র্কে আছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসছবি: বাসস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তাঁর সরকার দেশে মানবাধিকার ও বাক্‌স্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। স্থানীয় সময় বুধবার নিউইয়র্কে একটি হোটেলে শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে এলে তিনি এ কথা বলেন।

বৈঠকে জুলাই-আগস্টের গণ–অভ্যুত্থান এবং শেখ হাসিনার দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের সময় সংঘটিত নৃশংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার ও জবাবদিহি নিয়ে আলোচনা হয়।

মানবাধিকার কর্মকর্তারা স্বৈরশাসকের সময় সংঘটিত প্রায় তিন হাজার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অধিকতর তদন্তের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তাঁরা নিরাপত্তা খাতের সংস্কার, সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রত্যাহার ও নির্বিঘ্নে ন্যায়বিচার প্রাপ্তি এবং শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনামলে গুমের শিকার ব্যক্তিদের আটককেন্দ্রের কার্যক্রমের জবাবদিহি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটসের সভাপতি কেরি কেনেডি ৯ মানবাধিকার কর্মকর্তার প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ডও বৈঠকে যোগ দেন।

ক্যালামার্ড বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত ‘একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠানো যে এটি এক নতুন বাংলাদেশ।’

অধ্যাপক ইউনূস কীভাবে পূর্বের স্বৈরাচারী শাসনামলে নাগরিকদের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার হরণ করা হয়েছিল এবং তাঁর সরকার দেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় এ পর্যন্ত কী করেছে, তা সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ও প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তনের জন্য তাঁর সরকার পুলিশ সংস্কারসংক্রান্ত একটি কমিশনসহ বেশ কয়েকটি কমিশন গঠন করেছে।

অন্তর্বর্তী সরকার তার কর্মকাণ্ডের যেকোনো সমালোচনাকে স্বাগত জানাবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা দেশে বাক্‌স্বাধীনতা বজায় রাখার অঙ্গীকার করেন।

ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘এই সরকার কোনো সমালোচনায় বিচলিত নয়। আসলে আমরা সমালোচনাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। সরকার দেশে কারও কণ্ঠরোধ করবে না।’

হংকংভিত্তিক সাবেক মানবাধিকারকর্মী মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের জ্যেষ্ঠ গবেষক জুলিয়া ব্লেকনারও বৈঠকে কথা বলেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১২:১৫:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৫৩
Translate »

মানবাধিকার ও বাক্‌স্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বাংলাদেশ: ড. ইউনূস

আপডেট : ১২:১৫:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে বর্তমানে নিউইয়র্কে আছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসছবি: বাসস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তাঁর সরকার দেশে মানবাধিকার ও বাক্‌স্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। স্থানীয় সময় বুধবার নিউইয়র্কে একটি হোটেলে শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে এলে তিনি এ কথা বলেন।

বৈঠকে জুলাই-আগস্টের গণ–অভ্যুত্থান এবং শেখ হাসিনার দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের সময় সংঘটিত নৃশংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার ও জবাবদিহি নিয়ে আলোচনা হয়।

মানবাধিকার কর্মকর্তারা স্বৈরশাসকের সময় সংঘটিত প্রায় তিন হাজার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অধিকতর তদন্তের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তাঁরা নিরাপত্তা খাতের সংস্কার, সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রত্যাহার ও নির্বিঘ্নে ন্যায়বিচার প্রাপ্তি এবং শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনামলে গুমের শিকার ব্যক্তিদের আটককেন্দ্রের কার্যক্রমের জবাবদিহি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটসের সভাপতি কেরি কেনেডি ৯ মানবাধিকার কর্মকর্তার প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ডও বৈঠকে যোগ দেন।

ক্যালামার্ড বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত ‘একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠানো যে এটি এক নতুন বাংলাদেশ।’

অধ্যাপক ইউনূস কীভাবে পূর্বের স্বৈরাচারী শাসনামলে নাগরিকদের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার হরণ করা হয়েছিল এবং তাঁর সরকার দেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় এ পর্যন্ত কী করেছে, তা সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ও প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তনের জন্য তাঁর সরকার পুলিশ সংস্কারসংক্রান্ত একটি কমিশনসহ বেশ কয়েকটি কমিশন গঠন করেছে।

অন্তর্বর্তী সরকার তার কর্মকাণ্ডের যেকোনো সমালোচনাকে স্বাগত জানাবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা দেশে বাক্‌স্বাধীনতা বজায় রাখার অঙ্গীকার করেন।

ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘এই সরকার কোনো সমালোচনায় বিচলিত নয়। আসলে আমরা সমালোচনাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। সরকার দেশে কারও কণ্ঠরোধ করবে না।’

হংকংভিত্তিক সাবেক মানবাধিকারকর্মী মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের জ্যেষ্ঠ গবেষক জুলিয়া ব্লেকনারও বৈঠকে কথা বলেন।