London ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
চারঘাটে ডোবা থেকে যুবকের লা’শ উদ্ধার কালিয়াকৈরে ভুল রক্ত পুশে সিজারের রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ কালিয়াকৈর উপজেলা সূত্রাপুর এলাকায় চলন্ত অ্যাম্বুলেন্সে আগুনে পুড়ে ছাই কালিয়াকৈর ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারনে চরম ভোগান্তিতে দৈনন্দিন জনজীবন কালিয়া হরিপুরে নারীদের ফ্যামিলি কার্ড কার্যক্রমে তৃণমূল নারীদের জাগরণে ইব্রাহিম মোল্লা রাণীনগরে মৌসুমীর উদ্যোগে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত বিএনপির নতুন সদস্য সংহের ফরম বিতরন ও নবায়ন কমসুচি ধানখেত থেকে নারীর লাশ উদ্ধার সিরাজগঞ্জে চুরির মহামারি: সাংবাদিকের মোটরসাইকেল চুরি, নাগরিকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ কালিয়াকৈরে হাজী বাড়ী ফুটবল প্রিমিয়ার লীগের ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত

মাদ্রাসা রক্ষায় ফেসবুক লাইভে সুপারের কান্না জড়িত আর্তনাদ

ফরিদপুর প্রতিনিধি :

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় নদীভাঙনে বিলীন হওয়ার পথে মাদ্রাসা, মসজিদ ও ঘরবাড়ী।

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের চরখোলাবাড়ীয়া গ্রামে মধুমতী নদীর ভয়াবহ ভাঙনে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে এলাকাবাসী। ইতোমধ্যে একটি মসজিদসহ বহু বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এখন ভাঙনের মুখে এনবিডিসি আল হেরা দাখিল মাদ্রাসা, সমাজসেবা অধিদপ্তর নিবন্ধিত এতিমখানা, দিগনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চর খোলাবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কিছু সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা।

গত বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) আল হেরা দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুর রব ফেসবুক লাইভে এসে কান্নাজড়িত কণ্ঠে সরকারের কাছে সহায়তা চান। লাইভে তিনি বলেন, “এই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর সানোয়ার হোসেন সবসময় বলতেন— সাহায্য করার মালিক একমাত্র আল্লাহ। মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার এক বছরের মধ্যেই আমাদের বিল হয়, এমপিও হয়— কোনো প্রকার টাকা-পয়সা লাগে নাই। এটি নবীর ঘর। আমরা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছি, তাঁরা আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু নদীর ভাঙনের তীব্রতা এতটাই বেড়েছে যে, যদি এখনই জিও ব্যাগ ডাম্পিং না করা হয়, এই প্রতিষ্ঠানগুলো টিকে থাকবে না। সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, দ্রুত জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে স্থায়ী বাঁধের ব্যবস্থা করা হোক।”

লাইভের পুরো সময়জুড়ে তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকেন, যেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নদীগর্ভে বিলীন না হয়।

স্থানীয়দের ভাষ্য, আল হেরা দাখিল মাদ্রাসার নামে নতুন একটি ভবনের টেন্ডার ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। যদি পুরো প্রতিষ্ঠানটি নদীতে বিলীন হয়ে যায়, সরকারের নতুন এই অবকাঠামোগত বিনিয়োগও নদীগর্ভে হারিয়ে যাবে।

বুড়াইচ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, “আমার নিজের বাড়ি গত কয়েক বছরে তিনবার নদীতে গেছে। এখন কোনো মতে টিকে আছি। যে অবস্থায় নদী আছে, তাতে যে কোনো সময় মাদ্রাসা, এতিমখানা আর বিদ্যালয়গুলো পুরোপুরি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।”

এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল ইকবাল বলেন, “স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা হয়েছে— জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের প্রস্তুতি চলছে।”

স্থানীয়দের দাবি, নদীর এই ভাঙন যদি এখনই ঠেকানো না যায়, মধুমতীর পাড় ঘেঁষে থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও শত শত পরিবারের শেষ আশ্রয়টুকুও নদীগর্ভে হারিয়ে যাবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৩:৩১:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫
১৭
Translate »

মাদ্রাসা রক্ষায় ফেসবুক লাইভে সুপারের কান্না জড়িত আর্তনাদ

আপডেট : ০৩:৩১:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় নদীভাঙনে বিলীন হওয়ার পথে মাদ্রাসা, মসজিদ ও ঘরবাড়ী।

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের চরখোলাবাড়ীয়া গ্রামে মধুমতী নদীর ভয়াবহ ভাঙনে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে এলাকাবাসী। ইতোমধ্যে একটি মসজিদসহ বহু বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এখন ভাঙনের মুখে এনবিডিসি আল হেরা দাখিল মাদ্রাসা, সমাজসেবা অধিদপ্তর নিবন্ধিত এতিমখানা, দিগনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চর খোলাবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কিছু সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা।

গত বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) আল হেরা দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুর রব ফেসবুক লাইভে এসে কান্নাজড়িত কণ্ঠে সরকারের কাছে সহায়তা চান। লাইভে তিনি বলেন, “এই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর সানোয়ার হোসেন সবসময় বলতেন— সাহায্য করার মালিক একমাত্র আল্লাহ। মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার এক বছরের মধ্যেই আমাদের বিল হয়, এমপিও হয়— কোনো প্রকার টাকা-পয়সা লাগে নাই। এটি নবীর ঘর। আমরা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছি, তাঁরা আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু নদীর ভাঙনের তীব্রতা এতটাই বেড়েছে যে, যদি এখনই জিও ব্যাগ ডাম্পিং না করা হয়, এই প্রতিষ্ঠানগুলো টিকে থাকবে না। সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, দ্রুত জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে স্থায়ী বাঁধের ব্যবস্থা করা হোক।”

লাইভের পুরো সময়জুড়ে তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকেন, যেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নদীগর্ভে বিলীন না হয়।

স্থানীয়দের ভাষ্য, আল হেরা দাখিল মাদ্রাসার নামে নতুন একটি ভবনের টেন্ডার ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। যদি পুরো প্রতিষ্ঠানটি নদীতে বিলীন হয়ে যায়, সরকারের নতুন এই অবকাঠামোগত বিনিয়োগও নদীগর্ভে হারিয়ে যাবে।

বুড়াইচ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, “আমার নিজের বাড়ি গত কয়েক বছরে তিনবার নদীতে গেছে। এখন কোনো মতে টিকে আছি। যে অবস্থায় নদী আছে, তাতে যে কোনো সময় মাদ্রাসা, এতিমখানা আর বিদ্যালয়গুলো পুরোপুরি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।”

এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল ইকবাল বলেন, “স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা হয়েছে— জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের প্রস্তুতি চলছে।”

স্থানীয়দের দাবি, নদীর এই ভাঙন যদি এখনই ঠেকানো না যায়, মধুমতীর পাড় ঘেঁষে থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও শত শত পরিবারের শেষ আশ্রয়টুকুও নদীগর্ভে হারিয়ে যাবে।