London ১২:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাদারীপুরে প্রশিক্ষণার্থী নার্সকে মারধরের অভিযোগ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে, প্রতিবাদে কর্মবিরতি

মাদারীপুর জেলা হাসপাতালের মারধর ও লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে প্রশিক্ষণার্থী নার্সেরা কর্মবিরতি পালন করেন। রোববার দুপুরে হাসপাতালের সভাকক্ষে

মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে প্রশিক্ষণার্থী একজন নার্সকে দায়িত্ব পালনের সময় মারধরের অভিযোগ উঠেছে কর্তব্যরত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। আজ রোববার দুপুরে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। প্রতিবাদে হাসপাতালে কর্মবিরতির ডাক দিয়ে বিক্ষোভ করেন সরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

ভুক্তভোগী নার্সের নাম কেয়া বিশ্বাস। হাসপাতালের সহকারী সার্জন মুনমুন নাহারের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। বেলা একটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলছিল। রাত আটটায় স্টুডেন্ট নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা একটি সভা করে এ বিষয়ে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে দৈনিক চারটি পালায় সরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউটের ৭৫ জন করে প্রশিক্ষণার্থী নার্স কাজ করেন। প্রশিক্ষণার্থী নার্সদের অভিযোগ, আজ সকালে সরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী কেয়া বিশ্বাসের দায়িত্ব পড়ে হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে। দায়িত্ব পালনের সময় চিকিৎসক মুনমুন নাহার তাঁকে রোগীর ব্যবস্থাপত্র সংযুক্ত ক্লিপবোর্ড দিয়ে মারধর ও লাঞ্ছিত করেন।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই চিকিৎসকের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। প্রথমে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তার কক্ষ ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। পরে তাঁরা তত্ত্বাবধায়কের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়ার ঘোষণা দেন প্রশিক্ষণার্থী নার্সেরা।

স্টুডেন্ট নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাব্বির আহসান বলেন, ‘আজ কেয়া বিশ্বাস একা নয়, পুরো নার্সিং সমাজ চিকিৎসকদের দ্বারা নির্যাতন ও লাঞ্ছনার শিকার। আমাদের দাবি, ওই চিকিৎসকের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে প্রশিক্ষণার্থী নার্সদের নির্যাতন ও লাঞ্ছনা বন্ধ করতে হবে।’

মারধরের শিকার কেয়া বিশ্বাস বলেন, চিকিৎসক মুনমুন ৬১২ নম্বর কক্ষের রাউন্ড শেষ করে তাঁকে রোগীর ব্যবস্থাপত্র ও ফাইল আনতে বলেন। তিনি দ্রুত সেটা নিয়ে আসেন। তারপর কোনো কারণ ছাড়াই তাঁকে ক্লিপবোর্ড দিয়ে আঘাত করেন, লাঞ্ছিত করেন। কেয়া আরও বলেন, ‘আমরা এখানে শিখতে এসেছি। রোগীদের সেবা দিতে এসেছি। মার খেতে আসি নাই। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। তিনি কেন আমার সঙ্গে এমন অসদাচরণ করবেন?’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চিকিৎসক মুনমুন নাহার বলেন, ‘আমি কেন প্রশিক্ষণার্থী নার্সকে মারতে যাব? এটা ভুল বোঝানো হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ কেন, সেটাও আমি জানি না।’

এদিকে শিক্ষানবিশ প্রশিক্ষণার্থী কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ চলতে থাকায় ব্যাহত হচ্ছে হাসপাতালের কার্যক্রম। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জন মুনীর আহমদ বলেন, এক প্রশিক্ষণার্থী নার্সকে দায়িত্বরত একজন সহকারী সার্জন ক্লিপবোর্ড দিয়ে পিঠে একটি আঘাত করেছেন। অভিযোগটি তিনি শুনেছেন। তবে এটা ঘটনা বড় নয়। তাঁরা আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধান করতে কাজ করছেন। এ ঘটনার পরে প্রশিক্ষণার্থী নার্সেরা কর্মবিরতি করায় দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০১:১৫:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৬৬
Translate »

মাদারীপুরে প্রশিক্ষণার্থী নার্সকে মারধরের অভিযোগ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে, প্রতিবাদে কর্মবিরতি

আপডেট : ০১:১৫:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মাদারীপুর জেলা হাসপাতালের মারধর ও লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে প্রশিক্ষণার্থী নার্সেরা কর্মবিরতি পালন করেন। রোববার দুপুরে হাসপাতালের সভাকক্ষে

মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে প্রশিক্ষণার্থী একজন নার্সকে দায়িত্ব পালনের সময় মারধরের অভিযোগ উঠেছে কর্তব্যরত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। আজ রোববার দুপুরে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। প্রতিবাদে হাসপাতালে কর্মবিরতির ডাক দিয়ে বিক্ষোভ করেন সরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

ভুক্তভোগী নার্সের নাম কেয়া বিশ্বাস। হাসপাতালের সহকারী সার্জন মুনমুন নাহারের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। বেলা একটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলছিল। রাত আটটায় স্টুডেন্ট নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা একটি সভা করে এ বিষয়ে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে দৈনিক চারটি পালায় সরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউটের ৭৫ জন করে প্রশিক্ষণার্থী নার্স কাজ করেন। প্রশিক্ষণার্থী নার্সদের অভিযোগ, আজ সকালে সরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী কেয়া বিশ্বাসের দায়িত্ব পড়ে হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে। দায়িত্ব পালনের সময় চিকিৎসক মুনমুন নাহার তাঁকে রোগীর ব্যবস্থাপত্র সংযুক্ত ক্লিপবোর্ড দিয়ে মারধর ও লাঞ্ছিত করেন।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই চিকিৎসকের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। প্রথমে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তার কক্ষ ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। পরে তাঁরা তত্ত্বাবধায়কের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়ার ঘোষণা দেন প্রশিক্ষণার্থী নার্সেরা।

স্টুডেন্ট নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাব্বির আহসান বলেন, ‘আজ কেয়া বিশ্বাস একা নয়, পুরো নার্সিং সমাজ চিকিৎসকদের দ্বারা নির্যাতন ও লাঞ্ছনার শিকার। আমাদের দাবি, ওই চিকিৎসকের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে প্রশিক্ষণার্থী নার্সদের নির্যাতন ও লাঞ্ছনা বন্ধ করতে হবে।’

মারধরের শিকার কেয়া বিশ্বাস বলেন, চিকিৎসক মুনমুন ৬১২ নম্বর কক্ষের রাউন্ড শেষ করে তাঁকে রোগীর ব্যবস্থাপত্র ও ফাইল আনতে বলেন। তিনি দ্রুত সেটা নিয়ে আসেন। তারপর কোনো কারণ ছাড়াই তাঁকে ক্লিপবোর্ড দিয়ে আঘাত করেন, লাঞ্ছিত করেন। কেয়া আরও বলেন, ‘আমরা এখানে শিখতে এসেছি। রোগীদের সেবা দিতে এসেছি। মার খেতে আসি নাই। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। তিনি কেন আমার সঙ্গে এমন অসদাচরণ করবেন?’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চিকিৎসক মুনমুন নাহার বলেন, ‘আমি কেন প্রশিক্ষণার্থী নার্সকে মারতে যাব? এটা ভুল বোঝানো হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ কেন, সেটাও আমি জানি না।’

এদিকে শিক্ষানবিশ প্রশিক্ষণার্থী কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ চলতে থাকায় ব্যাহত হচ্ছে হাসপাতালের কার্যক্রম। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জন মুনীর আহমদ বলেন, এক প্রশিক্ষণার্থী নার্সকে দায়িত্বরত একজন সহকারী সার্জন ক্লিপবোর্ড দিয়ে পিঠে একটি আঘাত করেছেন। অভিযোগটি তিনি শুনেছেন। তবে এটা ঘটনা বড় নয়। তাঁরা আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধান করতে কাজ করছেন। এ ঘটনার পরে প্রশিক্ষণার্থী নার্সেরা কর্মবিরতি করায় দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে।