London ০৩:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
নাহিদ ইসলাম এক দলকে সরিয়ে আরেক দলকে ক্ষমতায় বসাতে অভ্যুত্থান হয়নি শ্যামনগরে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে তিনজন গুরুতর আহত, কিশোরের অবস্থা আশঙ্কাজনক মনগড়া লোডশেডিংয়ে, চরম বিপাকে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা সাংবাদিক আরিফুলের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও হুমকির প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন কালকিনিতে মুক্তিযোদ্ধা দলের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত ৮ অঞ্চলে বজ্রবৃষ্টির আভাস রোববার সারা দেশে মহাসমাবেশের ঘোষণা কারিগরি শিক্ষার্থীদের ইতিহাসের সর্বোত্তম নির্বাচন করবে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান উপদেষ্টা কাতার সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গী ৪ নারী খেলোয়াড় কালই বুঝতে পারবেন-কী করতে পারি

মনগড়া লোডশেডিংয়ে, চরম বিপাকে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা

আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:

 

ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট এখন প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা। সামান্য বাতাস কিংবা হালকা বৃষ্টিতেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ চলে যায়। এ অবস্থায় উপজেলাবাসী অসহায় হয়ে পড়েছেন। চলমান এসএসসি পরীক্ষার সময় এমন বিদ্যুৎ পরিস্থিতি বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ তৈরি করেছে।

আলফাডাঙ্গা উপজেলায় ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদ—বুড়াইচ, গোপালপুর, আলফাডাঙ্গা, টগরবন্দ, বানা ও পাচুড়িয়া এবং একটি পৌরসভা রয়েছে। এসব এলাকায় একই ধরনের লোডশেডিং চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, এখানে কোনো নির্দিষ্ট সময়সূচি ছাড়াই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে, যা একপ্রকার মনগড়া লোডশেডিং।

এসএসসি পরীক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, “রাতে পড়তে বসলে প্রায়ই বিদ্যুৎ চলে যায়। পুরো প্রস্তুতি বিঘ্নিত হচ্ছে। পরীক্ষার সময় এমন বিদ্যুৎ বিভ্রাট মানসিক চাপে ফেলছে আমাদের।”

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বর্তমানে দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেমন অস্থির, তেমনি এর প্রভাব মাঠ পর্যায়ে সেবাদানকারীদের মাঝেও পড়ছে। অনেকেই মনে করছেন, কেন্দ্রীয়ভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতির পাশাপাশি স্থানীয় কর্মকর্তারা ইচ্ছেমতো এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং করে চলেছেন। ফলে কারো কারো এলাকায় একটানা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না, আবার কোথাও খুব দ্রুত বিদ্যুৎ ফিরেও আসে।

আলফাডাঙ্গা বাজারের ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বলেন, “আমরা দেখছি, পৌরসভায় বিদ্যুৎ আছে, অথচ আমাদের এলাকায় নেই। এটা বুঝতেই পারছি—বিদ্যুৎ অফিসে যারা বসে আছেন, তারা নিজেদের মতো করে বিদ্যুৎ দিচ্ছেন। তদারকি নেই, জবাবদিহিতা নেই।”

আর এক, এস এস সি পরিক্ষার্থী সুর্বনা খানম বলেন এই তীব্র গরমে একটু বাতাস হলেই বিদ্যুৎ চলে যায় তো আর আসে না, আমরা মেয়েরা তো ঘর থেকে বাহিরে বাহিরে গিয়ে ঘুরা ঘুরি করতে পারি না, এই তীব্র গরমে আমার এক বান্ধবী হেলেঞ্চাহাটী কটুরাকান্দী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী সে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে তার পরিক্ষা দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। এস এসসির হলে মোমবাতি জ্বালিয়ে পরিক্ষা দেওয়া লেগেছে।

ফরিদপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জি এম) এস এম নাসির উদ্দিন বলেন , “বিভিন্ন এলাকায় পুরনো লাইন এবংগ্রীড থেকে দুরত্ব বেশি হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে, ঝড়,বৃষ্টিতে গাছপালার কারনে লাইনে ক্ষতিগ্রস্ত হয় একারনে অনেক সময় লাইন বন্ধ থাকে। তার পরও আমি চেষ্টা করবো যাতে এ ধরনের সমস্যায় না পড়তে হয়। ট্রান্সফরমার দুর্বল হওয়ায় কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। তবে আমাদের সীমিত সক্ষমতার মধ্যেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।”

এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, বিষয়টি নিয়ে বারবার পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় অব্যবস্থা ও অনিয়ম থেকেই যাচ্ছে।

আলফাডাঙ্গাবাসীর দাবি, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ সংকটের মধ্যে স্থানীয় পর্যায়ে যেন কোনো কর্মকর্তা ইচ্ছেমতো লোডশেডিং না করতে পারেন, তার জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও তদারকি ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। নাহলে এসএসসি পরীক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণ পর্যন্ত সবাই এই মনগড়া সিদ্ধান্তের বলি হচ্ছে।

 

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১১:১১:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
Translate »

মনগড়া লোডশেডিংয়ে, চরম বিপাকে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা

আপডেট : ১১:১১:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

 

ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট এখন প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা। সামান্য বাতাস কিংবা হালকা বৃষ্টিতেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ চলে যায়। এ অবস্থায় উপজেলাবাসী অসহায় হয়ে পড়েছেন। চলমান এসএসসি পরীক্ষার সময় এমন বিদ্যুৎ পরিস্থিতি বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ তৈরি করেছে।

আলফাডাঙ্গা উপজেলায় ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদ—বুড়াইচ, গোপালপুর, আলফাডাঙ্গা, টগরবন্দ, বানা ও পাচুড়িয়া এবং একটি পৌরসভা রয়েছে। এসব এলাকায় একই ধরনের লোডশেডিং চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, এখানে কোনো নির্দিষ্ট সময়সূচি ছাড়াই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে, যা একপ্রকার মনগড়া লোডশেডিং।

এসএসসি পরীক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, “রাতে পড়তে বসলে প্রায়ই বিদ্যুৎ চলে যায়। পুরো প্রস্তুতি বিঘ্নিত হচ্ছে। পরীক্ষার সময় এমন বিদ্যুৎ বিভ্রাট মানসিক চাপে ফেলছে আমাদের।”

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বর্তমানে দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেমন অস্থির, তেমনি এর প্রভাব মাঠ পর্যায়ে সেবাদানকারীদের মাঝেও পড়ছে। অনেকেই মনে করছেন, কেন্দ্রীয়ভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতির পাশাপাশি স্থানীয় কর্মকর্তারা ইচ্ছেমতো এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং করে চলেছেন। ফলে কারো কারো এলাকায় একটানা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না, আবার কোথাও খুব দ্রুত বিদ্যুৎ ফিরেও আসে।

আলফাডাঙ্গা বাজারের ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বলেন, “আমরা দেখছি, পৌরসভায় বিদ্যুৎ আছে, অথচ আমাদের এলাকায় নেই। এটা বুঝতেই পারছি—বিদ্যুৎ অফিসে যারা বসে আছেন, তারা নিজেদের মতো করে বিদ্যুৎ দিচ্ছেন। তদারকি নেই, জবাবদিহিতা নেই।”

আর এক, এস এস সি পরিক্ষার্থী সুর্বনা খানম বলেন এই তীব্র গরমে একটু বাতাস হলেই বিদ্যুৎ চলে যায় তো আর আসে না, আমরা মেয়েরা তো ঘর থেকে বাহিরে বাহিরে গিয়ে ঘুরা ঘুরি করতে পারি না, এই তীব্র গরমে আমার এক বান্ধবী হেলেঞ্চাহাটী কটুরাকান্দী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী সে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে তার পরিক্ষা দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। এস এসসির হলে মোমবাতি জ্বালিয়ে পরিক্ষা দেওয়া লেগেছে।

ফরিদপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জি এম) এস এম নাসির উদ্দিন বলেন , “বিভিন্ন এলাকায় পুরনো লাইন এবংগ্রীড থেকে দুরত্ব বেশি হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে, ঝড়,বৃষ্টিতে গাছপালার কারনে লাইনে ক্ষতিগ্রস্ত হয় একারনে অনেক সময় লাইন বন্ধ থাকে। তার পরও আমি চেষ্টা করবো যাতে এ ধরনের সমস্যায় না পড়তে হয়। ট্রান্সফরমার দুর্বল হওয়ায় কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। তবে আমাদের সীমিত সক্ষমতার মধ্যেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।”

এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, বিষয়টি নিয়ে বারবার পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় অব্যবস্থা ও অনিয়ম থেকেই যাচ্ছে।

আলফাডাঙ্গাবাসীর দাবি, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ সংকটের মধ্যে স্থানীয় পর্যায়ে যেন কোনো কর্মকর্তা ইচ্ছেমতো লোডশেডিং না করতে পারেন, তার জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও তদারকি ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। নাহলে এসএসসি পরীক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণ পর্যন্ত সবাই এই মনগড়া সিদ্ধান্তের বলি হচ্ছে।