London ০৯:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারত-পাকিস্তানকে সংলাপের আহ্বান জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের

অনলাইন ডেস্ক:

কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তানকে উত্তেজনা প্রশমনে ও সামরিক সংঘাত এড়াতে সংলাপ এবং কূটনৈতিক পথে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার (৬ মে) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

গত সোমবার নিউইয়র্কে নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে সদস্যরা দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিয়ে আলোচনা করেন। পাকিস্তান জানিয়েছে, সভায় উপস্থাপিত গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, ভারতের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের হুমকি রয়েছে।

পাকিস্তানের বিবৃতিতে বলা হয়, সংঘর্ষ এড়িয়ে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে সদস্যরা সংলাপ ও কূটনীতির প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন।

তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। ইসলামাবাদের অনুরোধেই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরে পর্যটকদের লক্ষ্য করে চালানো এক প্রাণঘাতী হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ভারত এ হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে এবং বলেছে, তিন সন্দেহভাজনের মধ্যে দুজন পাকিস্তানি নাগরিক।

পাকিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, আক্রমণের ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিতে তারা প্রস্তুত।

এরপর দুই দেশের মধ্যে পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বেড়েছে। পাকিস্তান গত তিন দিনে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে এবং ভারতও মঙ্গলবার বিভিন্ন রাজ্যে সিভিল ডিফেন্স মহড়ার পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে, যাতে রয়েছে বিমান হামলার সাইরেন বাজানো ও জনসাধারণকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সোমবার বলেছেন, এ মুহূর্তে সর্বোচ্চ সংযমের প্রয়োজন এবং সংঘাতের কিনারা থেকে সরে আসা জরুরি। সামরিক সংঘাত যেকোনো সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, দুই দেশের পাল্টাপাল্টি ব্যবস্থা — যেমন বাণিজ্য স্থগিত, পানিচুক্তি স্থগিত, আকাশসীমা বন্ধ এবং কূটনীতিক সম্পর্ক কমানো — সংঘাত আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

মুডিজ রেটিং এজেন্সি জানিয়েছে, এই উত্তেজনা পাকিস্তানের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ভারতের ক্ষেত্রেও উচ্চ প্রতিরক্ষা ব্যয় রাজস্ব ঘাটতি বাড়াতে পারে।

কাশ্মীর দীর্ঘদিন ধরেই ভারত-পাকিস্তান বিরোধের মূল কেন্দ্র। ভারত অতীতে একাধিকবার অভিযোগ করেছে যে, পাকিস্তান কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহায়তা করছে। তবে পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১২:২৯:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫
Translate »

ভারত-পাকিস্তানকে সংলাপের আহ্বান জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের

আপডেট : ১২:২৯:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫

কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তানকে উত্তেজনা প্রশমনে ও সামরিক সংঘাত এড়াতে সংলাপ এবং কূটনৈতিক পথে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার (৬ মে) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

গত সোমবার নিউইয়র্কে নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে সদস্যরা দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিয়ে আলোচনা করেন। পাকিস্তান জানিয়েছে, সভায় উপস্থাপিত গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, ভারতের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের হুমকি রয়েছে।

পাকিস্তানের বিবৃতিতে বলা হয়, সংঘর্ষ এড়িয়ে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে সদস্যরা সংলাপ ও কূটনীতির প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন।

তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। ইসলামাবাদের অনুরোধেই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরে পর্যটকদের লক্ষ্য করে চালানো এক প্রাণঘাতী হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ভারত এ হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে এবং বলেছে, তিন সন্দেহভাজনের মধ্যে দুজন পাকিস্তানি নাগরিক।

পাকিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, আক্রমণের ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিতে তারা প্রস্তুত।

এরপর দুই দেশের মধ্যে পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বেড়েছে। পাকিস্তান গত তিন দিনে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে এবং ভারতও মঙ্গলবার বিভিন্ন রাজ্যে সিভিল ডিফেন্স মহড়ার পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে, যাতে রয়েছে বিমান হামলার সাইরেন বাজানো ও জনসাধারণকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সোমবার বলেছেন, এ মুহূর্তে সর্বোচ্চ সংযমের প্রয়োজন এবং সংঘাতের কিনারা থেকে সরে আসা জরুরি। সামরিক সংঘাত যেকোনো সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, দুই দেশের পাল্টাপাল্টি ব্যবস্থা — যেমন বাণিজ্য স্থগিত, পানিচুক্তি স্থগিত, আকাশসীমা বন্ধ এবং কূটনীতিক সম্পর্ক কমানো — সংঘাত আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

মুডিজ রেটিং এজেন্সি জানিয়েছে, এই উত্তেজনা পাকিস্তানের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ভারতের ক্ষেত্রেও উচ্চ প্রতিরক্ষা ব্যয় রাজস্ব ঘাটতি বাড়াতে পারে।

কাশ্মীর দীর্ঘদিন ধরেই ভারত-পাকিস্তান বিরোধের মূল কেন্দ্র। ভারত অতীতে একাধিকবার অভিযোগ করেছে যে, পাকিস্তান কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহায়তা করছে। তবে পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।