ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ‘বরফ গলতে শুরু করেছে’ বলে বিশ্বাস করে বিএনপি।
সম্প্রতি ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মার সঙ্গে একটি বৈঠক করেন বিএনপির মহাসচিব। সেই বৈঠকে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কসহ নানা বিষয় তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল।
ওই বৈঠকের পর এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাতকারে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা দুই দেশের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেছি। পানি ভাগাভাগি সমস্যা, সীমান্ত হত্যা, বিদ্যমান বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতার কথা বলেছি। ভারতের প্রধান ইস্যু ছিল নিরাপত্তা সমস্যা। ভারতকে আশ্বস্ত করেছি, আমরা ক্ষমতায় থাকলে এই ভূখণ্ড বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ব্যবহার করতে পারবে না।
গত রোববার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রণয় ভার্মা। বৈঠকে বাংলাদেশ- পানি সমস্যা সমাধান ও সীমান্ত হত্যা বন্ধের বিষয়ে জোর দেয় বিএনপি। অন্যদিকে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার উপর গুরুত্বরোপ করে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকে দুই দেশের মধ্য দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন, বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে যে সম্পর্ক, সেই সম্পর্ক আরও কিভাবে গভীর করা যায়, দৃঢ় করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সমস্যাগুলো রয়েছে সেগুলো তুলে ধরেছি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের পানি সমস্যার দ্রুত সমাধান হওয়া দরকার, সীমান্ত হত্যা বন্ধ করা প্রয়োজন। সেই কথাগুলো বলেছি। সেই সঙ্গে সিকিউরিটির (নিরাপত্তা) যে বিষয়টা আছে সেটাও নিয়ে কথা বলেছি। তারা (ভারতীয় হাইকমিশনার) বলেছেন যে, এই বিষয়গুলোতে তারা সজাগ। তারা চেষ্টা করছেন দ্রুততার সঙ্গে কিভাবে সেই সমস্যাগুলোর সমাধান করা যায়।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তাদের (ভারত) মূল বক্তব্য হচ্ছে, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে চায়। বিশেষ করে এই পরিবর্তনের পরে (ছাত্র-জনতার বিপ্লবে ক্ষমতার পরিবর্তন) নতুন যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আছে তাদের সঙ্গে তারা (ভারতীয় হাইকমিশনার) ইতিমধ্যে যোগাযোগ করেছেন, কথা বলেছেন। বিএনপির সঙ্গেও তারা সম্পর্ক দৃঢ় করতে চান। এই সম্পর্কের মধ্যে কি করে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসা যায় সেটা নিয়ে তারা কাজ করতে আগ্রহী।’
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ ও ভারতীয় উপ-হাইকমিশনার প্রভন বাধে।