London ০৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বৈরুত হামলায় কী ধরনের বোমা ব্যবহার করেছে ইসরায়েল?

এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে লেবাননের রাজধানী বৈরুতসহ দেশটির বিভিন্ন স্থানে বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত হিজবুল্লাহর ১৪০টির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে তারা। এ সময় দক্ষিণ বৈরুতে সংগঠনটির বিভিন্ন ঘাঁটিতেও হামলা চালানো হয়েছে। 

ইসরায়েলের মিডিয়া বলছে, শুক্রবার বৈরুতের হামলায় প্রায় ৮৫টি তথাকথিত ‘বাঙ্কার-বাস্টার’ বোমা ব্যবহার করা হয়েছে। ‘গ্রাউন্ড পেনিট্রেশন মিইনিশন’ নামে পরিচিত এই ক্ষেপণাস্ত্র বিস্ফোরণের আগে মাটির গভীরে ঢুকে যায়। এ ক্ষেপণাস্ত্রের ভূগর্ভস্থ স্থাপনা এবং কঠিন কংক্রিট ভবন ধ্বংস করার ক্ষমতা রয়েছে। এর প্রতিটির ওজন ২০০০ থেকে ৪০০০ পাউন্ডের মধ্যে। এ ‘বাঙ্কার-বাস্টার’ মাটির ৩০ মিটার গভীর বা ছয় মিটার কংক্রিট ভেদ করতে সক্ষম এবং শকওয়েভ তৈরির মাধ্যমে আশপাশের অন্যান্য কাঠামোও ধ্বংস করে দিতে পারে। 

জেনেভা কনভেনশন জনবহুল এবং নির্বিচারে হতাহতের ঝুঁকির কারণে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এই বোমার ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।

ইসরায়েলে পুরোদমে হামলা শুরুর সপ্তাহ খানেক আগে লেবাননে পেজার এবং ওয়াকিটকিসহ নানা ধরনের তারহীন ডিভাইজে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। দু’টি আলাদা ঘটনায় হাজার হাজার পেজার এবং রেডিও ডিভাইস বিস্ফোরিত হওয়ায় কমপক্ষে ৩৭ জন নিহত এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।

বৈরুতে বিমান হামলায় ইসরায়েল কী ধরনের বোমা ব্যবহার করছে, সে বিষয়ে জানতে আলজাজিরার পক্ষ থেকে সামরিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক ইলিয়াস ম্যাগনিয়ার সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। ম্যাগনিয়ার বলেন, ‘আমাদের কাছে ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর দেওয়া তথ্য আছে। বাহিনীটি বলছে, তারা ৮৫ টন বিস্ফোরক ব্যবহার করেছে। প্রতিটি বোমাই ছিল এক টন ওজনের। এটি একটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।’

এই বিশ্লেষকের মতে, ‘এসব বোমা হামলার ফলে বৈরুতে একটি ভূমিকম্পের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। বৈরুতের বিভিন্ন জায়গার মানুষের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তাদের সবার মনে হয়েছে, যেন পাশের ঘরে বোমা পড়ছে। বৈরুতের মতো একটি শহরে এটি সত্যিই একটি ভয়ংকর পরিস্থিতি।’

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৮:২৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৪৭
Translate »

বৈরুত হামলায় কী ধরনের বোমা ব্যবহার করেছে ইসরায়েল?

আপডেট : ০৮:২৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে লেবাননের রাজধানী বৈরুতসহ দেশটির বিভিন্ন স্থানে বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত হিজবুল্লাহর ১৪০টির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে তারা। এ সময় দক্ষিণ বৈরুতে সংগঠনটির বিভিন্ন ঘাঁটিতেও হামলা চালানো হয়েছে। 

ইসরায়েলের মিডিয়া বলছে, শুক্রবার বৈরুতের হামলায় প্রায় ৮৫টি তথাকথিত ‘বাঙ্কার-বাস্টার’ বোমা ব্যবহার করা হয়েছে। ‘গ্রাউন্ড পেনিট্রেশন মিইনিশন’ নামে পরিচিত এই ক্ষেপণাস্ত্র বিস্ফোরণের আগে মাটির গভীরে ঢুকে যায়। এ ক্ষেপণাস্ত্রের ভূগর্ভস্থ স্থাপনা এবং কঠিন কংক্রিট ভবন ধ্বংস করার ক্ষমতা রয়েছে। এর প্রতিটির ওজন ২০০০ থেকে ৪০০০ পাউন্ডের মধ্যে। এ ‘বাঙ্কার-বাস্টার’ মাটির ৩০ মিটার গভীর বা ছয় মিটার কংক্রিট ভেদ করতে সক্ষম এবং শকওয়েভ তৈরির মাধ্যমে আশপাশের অন্যান্য কাঠামোও ধ্বংস করে দিতে পারে। 

জেনেভা কনভেনশন জনবহুল এবং নির্বিচারে হতাহতের ঝুঁকির কারণে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এই বোমার ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।

ইসরায়েলে পুরোদমে হামলা শুরুর সপ্তাহ খানেক আগে লেবাননে পেজার এবং ওয়াকিটকিসহ নানা ধরনের তারহীন ডিভাইজে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। দু’টি আলাদা ঘটনায় হাজার হাজার পেজার এবং রেডিও ডিভাইস বিস্ফোরিত হওয়ায় কমপক্ষে ৩৭ জন নিহত এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।

বৈরুতে বিমান হামলায় ইসরায়েল কী ধরনের বোমা ব্যবহার করছে, সে বিষয়ে জানতে আলজাজিরার পক্ষ থেকে সামরিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক ইলিয়াস ম্যাগনিয়ার সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। ম্যাগনিয়ার বলেন, ‘আমাদের কাছে ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর দেওয়া তথ্য আছে। বাহিনীটি বলছে, তারা ৮৫ টন বিস্ফোরক ব্যবহার করেছে। প্রতিটি বোমাই ছিল এক টন ওজনের। এটি একটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।’

এই বিশ্লেষকের মতে, ‘এসব বোমা হামলার ফলে বৈরুতে একটি ভূমিকম্পের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। বৈরুতের বিভিন্ন জায়গার মানুষের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তাদের সবার মনে হয়েছে, যেন পাশের ঘরে বোমা পড়ছে। বৈরুতের মতো একটি শহরে এটি সত্যিই একটি ভয়ংকর পরিস্থিতি।’