London ১০:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বৈরুতে হামলা চালানো একেকটি বোমার ওজন ছিল ১ টন

লেবাননে রাজধানী বৈরুতের শহরতলিতে ইসরায়েলের বিমান হামলার দৃশ্য। লেবাননের টায়ার শহর থেকে তোলা, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ছবি : রয়টার্স

এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে লেবাননের রাজধানী বৈরুতসহ দেশটির বিভিন্ন স্থানে বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। গতকাল শুক্রবার রাত থেকে আজ শনিবার সকাল পর্যন্ত হিজবুল্লাহর ১৪০টির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে তারা। এ সময় দক্ষিণ বৈরুতে সংগঠনটির বিভিন্ন ঘাঁটিতেও হামলা চালানো হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, শুক্রবার রাতে দক্ষিণ বৈরুতের হামলা ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল। এদিন হিজবুল্লাহপ্রধান হাসান নাসরুল্লাহও নিহত হয়েছেন।

বৈরুতে গতকাল বিমান হামলায় ইসরায়েল কী ধরনের বোমা ব্যবহার করছে, সে বিষয়ে জানতে আল–জাজিরার পক্ষ থেকে সামরিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক ইলিয়াস ম্যাগনিয়ার সঙ্গে কথা বলা হয়েছে।

ম্যাগনিয়ার বলেন, ‘আমাদের কাছে ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর দেওয়া তথ্য আছে। বাহিনীটি বলছে, তারা ৮৫ টন বিস্ফোরক ব্যবহার করেছে। প্রতিটি বোমাই ছিল এক টন ওজনের। এটি একটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।’

এই বিশ্লেষকের মতে, ‘এসব বোমা হামলার ফলে (গতকাল) বৈরুতে একটি ভূমিকম্পের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। বৈরুতের বিভিন্ন জায়গার মানুষের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তাদের সবার মনে হয়েছে, যেন পাশের ঘরে বোমা পড়ছে। বৈরুতের মতো একটি শহরে এটি সত্যিই একটি ভয়ংকর পরিস্থিতি।’

ম্যাগনিয়ার বলেন, ‘কিন্তু কথা হলো তারা কী ধরনের বোমা ব্যবহার করছে? দুটি বিকল্প হতে পারে। হয়তো শুধু জিবিইউ-৩১ বা শুধু ‘স্পাইস ২০০০’ বোমা ব্যবহার করেছে অথবা দুটোই একসঙ্গে ব্যবহার করেছে।’

লেবানন সীমান্তে মোতায়েনের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইসরায়েলের একটি যুদ্ধ ট্যাংক। উত্তর ইসরায়েলের একটি মহাসড়কে, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

লেবানন সীমান্তে মোতায়েনের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইসরায়েলের একটি যুদ্ধ ট্যাংক। উত্তর ইসরায়েলের একটি মহাসড়কে, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ছবি: এএফপি

এরপর এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ইসরায়েল হয়তো জিবিইউ-৩১ (জয়েন্ট ডিরেক্ট অ্যাটাক মিউনিশন) ব্যবহার করেছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি। ইসরায়েলের অস্ত্রভান্ডারে এই বোমা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র (ইসরায়েলকে এ ধরনের) হাজার হাজার বোমা সরবরাহ করেছে। গাজায় অসংখ্য লক্ষ্যবস্তুতে এসব বোমা ব্যবহার করা হয়েছে। আরেকটি বোমা হলো ‘স্পাইস ২০০০’। এটি ইসরায়েলের সামরিক সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী কোম্পানি রাফায়েলের তৈরি।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক ম্যাগনিয়ার বলেন, ‘আমার মনে হয়, এই দুই ধরনের বোমাই সেখানে ফেলা হয়েছে, যার প্রভাব আমরা দেখতে পেয়েছি। যেমন বৈরুতের শহরতলির ওই স্থানে (হামলার লক্ষ্যবস্তুতে) একটি গর্ত আমরা দেখেছি। ওই স্থানের সব ভবন সেই গর্তে ধসে পড়েছে। ফলে (গর্তে ধসে পড়া ভবন) এর ভেতর থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করতে দীর্ঘ সময় লাগছে।’

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৪:৫৮:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৫৬
Translate »

বৈরুতে হামলা চালানো একেকটি বোমার ওজন ছিল ১ টন

আপডেট : ০৪:৫৮:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

লেবাননে রাজধানী বৈরুতের শহরতলিতে ইসরায়েলের বিমান হামলার দৃশ্য। লেবাননের টায়ার শহর থেকে তোলা, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ছবি : রয়টার্স

এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে লেবাননের রাজধানী বৈরুতসহ দেশটির বিভিন্ন স্থানে বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। গতকাল শুক্রবার রাত থেকে আজ শনিবার সকাল পর্যন্ত হিজবুল্লাহর ১৪০টির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে তারা। এ সময় দক্ষিণ বৈরুতে সংগঠনটির বিভিন্ন ঘাঁটিতেও হামলা চালানো হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, শুক্রবার রাতে দক্ষিণ বৈরুতের হামলা ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল। এদিন হিজবুল্লাহপ্রধান হাসান নাসরুল্লাহও নিহত হয়েছেন।

বৈরুতে গতকাল বিমান হামলায় ইসরায়েল কী ধরনের বোমা ব্যবহার করছে, সে বিষয়ে জানতে আল–জাজিরার পক্ষ থেকে সামরিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক ইলিয়াস ম্যাগনিয়ার সঙ্গে কথা বলা হয়েছে।

ম্যাগনিয়ার বলেন, ‘আমাদের কাছে ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর দেওয়া তথ্য আছে। বাহিনীটি বলছে, তারা ৮৫ টন বিস্ফোরক ব্যবহার করেছে। প্রতিটি বোমাই ছিল এক টন ওজনের। এটি একটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।’

এই বিশ্লেষকের মতে, ‘এসব বোমা হামলার ফলে (গতকাল) বৈরুতে একটি ভূমিকম্পের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। বৈরুতের বিভিন্ন জায়গার মানুষের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তাদের সবার মনে হয়েছে, যেন পাশের ঘরে বোমা পড়ছে। বৈরুতের মতো একটি শহরে এটি সত্যিই একটি ভয়ংকর পরিস্থিতি।’

ম্যাগনিয়ার বলেন, ‘কিন্তু কথা হলো তারা কী ধরনের বোমা ব্যবহার করছে? দুটি বিকল্প হতে পারে। হয়তো শুধু জিবিইউ-৩১ বা শুধু ‘স্পাইস ২০০০’ বোমা ব্যবহার করেছে অথবা দুটোই একসঙ্গে ব্যবহার করেছে।’

লেবানন সীমান্তে মোতায়েনের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইসরায়েলের একটি যুদ্ধ ট্যাংক। উত্তর ইসরায়েলের একটি মহাসড়কে, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

লেবানন সীমান্তে মোতায়েনের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইসরায়েলের একটি যুদ্ধ ট্যাংক। উত্তর ইসরায়েলের একটি মহাসড়কে, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ছবি: এএফপি

এরপর এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ইসরায়েল হয়তো জিবিইউ-৩১ (জয়েন্ট ডিরেক্ট অ্যাটাক মিউনিশন) ব্যবহার করেছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি। ইসরায়েলের অস্ত্রভান্ডারে এই বোমা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র (ইসরায়েলকে এ ধরনের) হাজার হাজার বোমা সরবরাহ করেছে। গাজায় অসংখ্য লক্ষ্যবস্তুতে এসব বোমা ব্যবহার করা হয়েছে। আরেকটি বোমা হলো ‘স্পাইস ২০০০’। এটি ইসরায়েলের সামরিক সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী কোম্পানি রাফায়েলের তৈরি।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক ম্যাগনিয়ার বলেন, ‘আমার মনে হয়, এই দুই ধরনের বোমাই সেখানে ফেলা হয়েছে, যার প্রভাব আমরা দেখতে পেয়েছি। যেমন বৈরুতের শহরতলির ওই স্থানে (হামলার লক্ষ্যবস্তুতে) একটি গর্ত আমরা দেখেছি। ওই স্থানের সব ভবন সেই গর্তে ধসে পড়েছে। ফলে (গর্তে ধসে পড়া ভবন) এর ভেতর থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করতে দীর্ঘ সময় লাগছে।’