বিজয়নগরের পাহাড়পুর ইউপি’র চানপুর গ্রামে ছেলের কোপে বাবার হাত বিচ্ছিন্ন, আহত ৬জন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে সরকারি পুকুর নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন। উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের চানপুর গ্রামে ইছামউদ্দিন ও হুমায়ুন কবীরের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পুকুর সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। সেই বিরোধকে কেন্দ্র করেই রোববার সকালে ঘটে যায় হৃদয়বিদারক এক ঘটনা—ছেলের কোপে বাবার হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, সরকারি লিজ নেওয়া একটি পুকুরে ইছামউদ্দিন চুন দিচ্ছিলেন। এ সময় প্রতিপক্ষ হুমায়ুন কবীর, ইদ্রিস মোল্লা ও তার ছেলে মেহেদী ঘটনাস্থলে গিয়ে ইছামউদ্দিনকে ডেকে পাড়ে তুলে মাথায় ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করেন। বাবাকে বাঁচাতে ছুটে আসেন ইছামউদ্দিনের ছেলে আমিনুল ইসলাম। তখন হুমায়ুন ও ইদ্রিস আমিনুলকে ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা আমিনুলের হাত চেপে ধরলে, ইদ্রিসের ছেলে মেহেদী কোপ দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু আমিনুল হাত সরিয়ে ফেলায় সেই কোপ গিয়ে পড়ে ইদ্রিসের হাতে এবং তাঁর হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহায়তায় গুরুতর আহত ইদ্রিসকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এদিকে আহত ইছামউদ্দিন ও আমিনুলকে হাসপাতালে নিতে গেলে হুমায়ুন কবীরের লোকজন স্থানীয় কয়েকটি পয়েন্টে বাধা দেয়। পরে বিজয়নগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ইছামউদ্দিন গত ১৩ বছর ধরে সরকারি লিজ নিয়ে ওই পুকুরে মাছ চাষ ও কৃষিকাজ করে আসছেন। অপরপক্ষ হুমায়ুন কবীররা পুকুরটি তাদের বাবার সম্পত্তি বলে দাবি করছেন। এ নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃক বিএস (Boundary Settlement) বাতিল করে হুমায়ুন কবীরসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, “পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন আছে। এখনো কোনো পক্ষ আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়নি।”