London ১১:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
চারঘাটে ডোবা থেকে যুবকের লা’শ উদ্ধার কালিয়াকৈরে ভুল রক্ত পুশে সিজারের রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ কালিয়াকৈর উপজেলা সূত্রাপুর এলাকায় চলন্ত অ্যাম্বুলেন্সে আগুনে পুড়ে ছাই কালিয়াকৈর ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারনে চরম ভোগান্তিতে দৈনন্দিন জনজীবন কালিয়া হরিপুরে নারীদের ফ্যামিলি কার্ড কার্যক্রমে তৃণমূল নারীদের জাগরণে ইব্রাহিম মোল্লা রাণীনগরে মৌসুমীর উদ্যোগে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত বিএনপির নতুন সদস্য সংহের ফরম বিতরন ও নবায়ন কমসুচি ধানখেত থেকে নারীর লাশ উদ্ধার সিরাজগঞ্জে চুরির মহামারি: সাংবাদিকের মোটরসাইকেল চুরি, নাগরিকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ কালিয়াকৈরে হাজী বাড়ী ফুটবল প্রিমিয়ার লীগের ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত

বাঘায় বিধবা নারীর সন্তান প্রসব

মো: গোলাম কিবরিয়া,রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি

স্বামী মারা যাওয়ার প্রায় ৯ বছর পর সন্তান জন্ম দিয়েছেন এক বিধবা নারীর। এ ঘটনা জানাজানির পর ওই বিধবা নারীর ঘরে ভিড় করেছেন শত শত স্থানীয় বাসিন্দা। তাদের রোষের মুখে এক পর্যায়ে নবজাতকের পিতৃ পরিচয় প্রকাশ করেন বিধবা নারী কারিমন বেওয়া। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য করে ।

রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাজশাহীল বাঘা উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের কালুহাটি পশ্চিম পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

করিমন বেওয়ার দাবি, তার গর্ভে জন্ম নেওয়া এই সন্তানের বাবা সাবেক ইউপি সদস্য শুকচান্দ আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় থানা পুলিশ ও সংবাদকর্মীরা। এর আগেই আত্মগোপনে চলে যান অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৯ বছর আগে দুই ছেলে সন্তান ও এক মেয়ে সন্তান রেখে মারা যান কালুহাটি পশ্চিমপাড়া গ্রামের আকছেদ আলী। এরপর সন্তানদের নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়েন বিধবা নারী কারিমন বেওয়া (৩৫)। খেয়ে না খেয়ে চলতে থাকে কারিমন বেওয়ার জীবনযুদ্ধ। এরই মাঝে ঢাল হয়ে পাশে দাঁড়ান প্রতিবেশী সাবেক ইউপি সদস্য শুকচান্দ আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম। এক পযার্য়ে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন দুজনে। বিয়ের আশ্বাসে একাধিকবার অবৈধ শারীরিক সম্পর্কে জড়ান। সম্পর্কের জেরে গর্ভবতী হয়ে পড়েন ওই বিধবা নারী। গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় চেষ্টা করে ব্যর্থ হন সাইফুল ইসলাম।

রোববার সন্ধ্যার আগে নিজ বাড়িতেই এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন কারিমন বেগম। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসলে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। বর্তমানে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ওই নারী নিজ বাড়িতেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

কারিমন বেগম বলেন, ২০১৬ সালে আমার স্বামী আকছেদ মারা যান। দুই ছেলে সন্তান ও এক কন্যা সন্তান নিয়ে কোনোমতে খেয়ে না খেয়ে চলছিলাম। সাইফুল ইসলাম বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে আমি গর্ভবতী হই। সে আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে বলে। আজকে আমার একটি পুত্র সন্তান হয়েছে। বিয়ে করার কথা বলে সাইফুল আমার সঙ্গে যে অন্যায় করেছে, আমি তার বিচার চাই। এই নবজাতক সন্তানের পিতৃ পরিচয় চাই।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২০ বছর আগে নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার তালহাড়া গ্রামের কাবির উদ্দিনের মেয়ে কারিমন বেগমের সঙ্গে কালুহাটি পশ্চিম পাড়া গ্রামের আকছেদ আলীর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর দুই ছেলে সন্তান ও এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন কারিমন বেগম। বর্তমানে তার বড় ছেলে উচ্চ মাধ্যমিক ২য় বর্ষের ছাত্র, মেজ ছেলে ৮ম শ্রেণি,মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। ২০১৬ সালে আকছেদ আলী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর দুই ছেলে সন্তান ও এক কন্যা সন্তান নিয়ে নিজ স্বামীর বাড়িতেই বসবাস করেন তিনি।

ঘটনার সত্যতা জানতে অভিযুক্ত সাইফুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। এ সময় সাইফুলের স্ত্রী বলেন, ‘আমার স্বামী নির্দোষ, আমার স্বামীর নামে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। কারিমন বেগমের একাধিক মানুষের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে।’

৮ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শামীম সরদার বলেন, আকছেদ আলী মারা যাওয়ার পরে তার বিধবা স্ত্রী নিজ বাড়িতেই পুত্র সন্তান জন্ম দেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসলে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

ওই নারীর ভাসুরের ছেলে মাসুদ রানা বলেন, চাচা মারা যাওয়ার পর প্রায় প্রতিদিন রাতে কারিমন বেগমের বাড়ির আশে পাশে ঘোরা ফেরা করতে দেখা যেত অভিযুক্ত সাইফুল ইসলামকে। সাইফুল যে অন্যায়টা করেছে, আমরা তার বিচার চাই ও নবজাতক সন্তানের স্বীকৃতি চাই।

চারঘাট মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি রাতেই জানতে পেরেছি। কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৩:৩৪:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
২১
Translate »

বাঘায় বিধবা নারীর সন্তান প্রসব

আপডেট : ০৩:৩৪:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

স্বামী মারা যাওয়ার প্রায় ৯ বছর পর সন্তান জন্ম দিয়েছেন এক বিধবা নারীর। এ ঘটনা জানাজানির পর ওই বিধবা নারীর ঘরে ভিড় করেছেন শত শত স্থানীয় বাসিন্দা। তাদের রোষের মুখে এক পর্যায়ে নবজাতকের পিতৃ পরিচয় প্রকাশ করেন বিধবা নারী কারিমন বেওয়া। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য করে ।

রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাজশাহীল বাঘা উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের কালুহাটি পশ্চিম পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

করিমন বেওয়ার দাবি, তার গর্ভে জন্ম নেওয়া এই সন্তানের বাবা সাবেক ইউপি সদস্য শুকচান্দ আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় থানা পুলিশ ও সংবাদকর্মীরা। এর আগেই আত্মগোপনে চলে যান অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৯ বছর আগে দুই ছেলে সন্তান ও এক মেয়ে সন্তান রেখে মারা যান কালুহাটি পশ্চিমপাড়া গ্রামের আকছেদ আলী। এরপর সন্তানদের নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়েন বিধবা নারী কারিমন বেওয়া (৩৫)। খেয়ে না খেয়ে চলতে থাকে কারিমন বেওয়ার জীবনযুদ্ধ। এরই মাঝে ঢাল হয়ে পাশে দাঁড়ান প্রতিবেশী সাবেক ইউপি সদস্য শুকচান্দ আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম। এক পযার্য়ে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন দুজনে। বিয়ের আশ্বাসে একাধিকবার অবৈধ শারীরিক সম্পর্কে জড়ান। সম্পর্কের জেরে গর্ভবতী হয়ে পড়েন ওই বিধবা নারী। গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় চেষ্টা করে ব্যর্থ হন সাইফুল ইসলাম।

রোববার সন্ধ্যার আগে নিজ বাড়িতেই এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন কারিমন বেগম। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসলে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। বর্তমানে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ওই নারী নিজ বাড়িতেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

কারিমন বেগম বলেন, ২০১৬ সালে আমার স্বামী আকছেদ মারা যান। দুই ছেলে সন্তান ও এক কন্যা সন্তান নিয়ে কোনোমতে খেয়ে না খেয়ে চলছিলাম। সাইফুল ইসলাম বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে আমি গর্ভবতী হই। সে আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে বলে। আজকে আমার একটি পুত্র সন্তান হয়েছে। বিয়ে করার কথা বলে সাইফুল আমার সঙ্গে যে অন্যায় করেছে, আমি তার বিচার চাই। এই নবজাতক সন্তানের পিতৃ পরিচয় চাই।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২০ বছর আগে নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার তালহাড়া গ্রামের কাবির উদ্দিনের মেয়ে কারিমন বেগমের সঙ্গে কালুহাটি পশ্চিম পাড়া গ্রামের আকছেদ আলীর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর দুই ছেলে সন্তান ও এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন কারিমন বেগম। বর্তমানে তার বড় ছেলে উচ্চ মাধ্যমিক ২য় বর্ষের ছাত্র, মেজ ছেলে ৮ম শ্রেণি,মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। ২০১৬ সালে আকছেদ আলী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর দুই ছেলে সন্তান ও এক কন্যা সন্তান নিয়ে নিজ স্বামীর বাড়িতেই বসবাস করেন তিনি।

ঘটনার সত্যতা জানতে অভিযুক্ত সাইফুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। এ সময় সাইফুলের স্ত্রী বলেন, ‘আমার স্বামী নির্দোষ, আমার স্বামীর নামে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। কারিমন বেগমের একাধিক মানুষের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে।’

৮ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শামীম সরদার বলেন, আকছেদ আলী মারা যাওয়ার পরে তার বিধবা স্ত্রী নিজ বাড়িতেই পুত্র সন্তান জন্ম দেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসলে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

ওই নারীর ভাসুরের ছেলে মাসুদ রানা বলেন, চাচা মারা যাওয়ার পর প্রায় প্রতিদিন রাতে কারিমন বেগমের বাড়ির আশে পাশে ঘোরা ফেরা করতে দেখা যেত অভিযুক্ত সাইফুল ইসলামকে। সাইফুল যে অন্যায়টা করেছে, আমরা তার বিচার চাই ও নবজাতক সন্তানের স্বীকৃতি চাই।

চারঘাট মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি রাতেই জানতে পেরেছি। কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।