London ১০:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
কেন্দ্রের কতিপয় নেতার অযাচিত হস্তক্ষেপে , নাটোরে বিএনপির ভগ্ন দশা! ফরিদপুর-১ আসনে নির্বাচনী সমীকরণে নয়া উত্তাপ: নতুন প্রার্থীকে ঘিরে গণআলোড়ন, মাঠে বাড়ছে প্রত্যাশা ও প্রতিযোগিতা ব্যারিস্টার কায়সার কামালের উদ্যোগে চোখের আলো ফিরে পাচ্ছেন তারা শরিতুল্যাহ মাস্টার তিস্তা সেতু’ নামকরণের দাবিতে গাইবান্ধাবাসীর মানববন্ধন দুর্গাপুরে বসতঘর থেকে স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার,এলাকায় চাঞ্চল্য কালিয়াকৈরে সড়ক দুর্ঘটনায় ওষুধ ব্যবসায়ী নিহত নিরাপদ পারাপারের জন্য: বদলগাছী থানার মোড়ে ফুটওভার ব্রিজের দাবী শিক্ষার্থীদের আত্রাই ইউটিউবার রানার বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর প্রতারণার অভিযোগ মিরাটে আরপিএ’র ব্যতিক্রমী ফ্রি-মেডিকেল ক্যাম্প রাজশাহীতে বই পড়ে পুরস্কার পেল ছাত্র -ছাত্রীরা

ফরিদপুর-১ আসনে নির্বাচনী সমীকরণে নয়া উত্তাপ: নতুন প্রার্থীকে ঘিরে গণআলোড়ন, মাঠে বাড়ছে প্রত্যাশা ও প্রতিযোগিতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ফরিদপুর-১ আসনে (আলফাডাঙ্গা-বোয়ালমারী-মধুখালী) রাজনীতির মাঠ ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ এখনও মাঠে সক্রিয় নয়, অন্যদিকে বিএনপি ও ইসলামি জোট ঘরানার দলগুলো এখন নিজেদের অবস্থান পোক্ত করতে মরিয়া। আর এর মাঝেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন অধ্যাপক ডা. শহিদুল বারী—যাঁকে ঘিরেই এখন চায়ের দোকানে জনগণের মুখে উচ্চারিত হচ্ছে নতুন এক সম্ভাবনার নাম।

দুপুর থেকে সন্ধ্যা—চা-সিগারেটের ভাঁজে আলাপের আগুন এখন একটি বাক্যে থমকে যাচ্ছে: “যদি ডা. শহিদুল বারী প্রার্থী হয়, তবেই তো নির্বাচনী লড়াই জমবে!”

এই কথাটা শুধু কথার কথা নয়, বরং মাঠপর্যায়ের মনস্তাত্ত্বিক এক অভিব্যক্তি। শহিদুল বারীর পারিবারিক রাজনৈতিক ইতিহাস, তাঁর নিজস্ব পেশাগত মর্যাদা এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে চলাফেরার ধরণ এই বিশ্বাসের ভিত্তি।

পেশাগত জীবনে তিনি ঢাকার সিটি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তাঁর পিতা ভাষাসৈনিক শামসুল বারী মিয়া মোহন ছিলেন এ অঞ্চলে বিএনপির সাংগঠনিক বীজ রোপণকারী। শহিদুল বারীর জন্মস্থান বোয়ালমারীর রূপাপাত ইউনিয়নের দেউল গ্রামে হলেও ভৌগোলিকভাবে সেটি আলফাডাঙ্গা উপজেলার একদম সন্নিকটে। ফলে তাঁর সামাজিক সম্পর্ক ও রাজনৈতিক চর্চা দুই উপজেলাতেই প্রসারিত। জনমনে বিশ্বাস—এই দুই উপজেলার সমর্থনই তাঁকে শক্তিশালী প্রার্থী করে তুলতে পারে।

অন্যদিকে, ইসলামী সমমনা দলগুলো আসন্ন নির্বাচনে একটি অভিন্ন প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। সেই জোটের তরফ থেকে অধ্যাপক ড. ইলিয়াস মোল্লার নাম প্রায় নিশ্চিত। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান এবং মধুখালী উপজেলার সন্তান এই প্রার্থী ইতোমধ্যেই ইসলামপন্থী ভোটারদের মাঝে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেছেন।

এদিকে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে আরও যে নামগুলো আলোচনায় আছে, তারা হলো:

শামসুদ্দিন মিয়া (ঝুনু), সাবেক ভিপি, বোয়ালমারী সরকারি কলেজ

খন্দকার নাসিরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি, জাতীয়তাবাদী কৃষক দল

ড. শাহাবুদ্দিন আহমেদ, সহ-সভাপতি, অস্ট্রেলিয়া বিএনপি

আবুল কালাম আজাদ, ডেনমার্ক বিএনপির নেতা

মোঃ সাহাবুদ্দিন মিয়া (নিউটন), সহ-সভাপতি, ফরিদপুর জেলা মৎস্যজীবী দল

জয়দেব রায়, সাবেক ছাত্রদল নেতা

এছাড়া, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে ডা. বায়জিদ আহমেদ (শাহেদ)-এর প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে, যদিও দলটির সাংগঠনিক অবকাঠামো এ অঞ্চলে এখনও দুর্বল।

বিশ্লেষকদের মতে, যদি বিএনপি শহিদুল বারীকে প্রার্থী করে, আর ইসলামী জোটের তরফে প্রার্থী হন ড. ইলিয়াস মোল্লা—তাহলে ফরিদপুর-১ আসনে এবার দেখা যাবে দুই উচ্চশিক্ষিত, পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির প্রার্থীর মুখোমুখি লড়াই। যারা রাজনৈতিক দল নয়, বরং ব্যক্তিগত গ্রহণযোগ্যতা, সততা ও জনসম্পৃক্ততা দিয়ে ভোটারদের আকর্ষণ করতে সক্ষম হবেন।

নির্বাচন যত এগোচ্ছে, ততই পরিষ্কার হচ্ছে—এই আসনের নির্বাচনী যুদ্ধ হবে ধারণার বাইরে নতুন এক বাস্তবতা নিয়ে। কে এগিয়ে, তা বলা না গেলেও ভোটারদের মুখে একটি কথা এখন স্পষ্ট: “লড়াই হবে যদি প্রার্থী হয় শহিদুল বারী!”

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৪:১৭:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫
Translate »

ফরিদপুর-১ আসনে নির্বাচনী সমীকরণে নয়া উত্তাপ: নতুন প্রার্থীকে ঘিরে গণআলোড়ন, মাঠে বাড়ছে প্রত্যাশা ও প্রতিযোগিতা

আপডেট : ০৪:১৭:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ফরিদপুর-১ আসনে (আলফাডাঙ্গা-বোয়ালমারী-মধুখালী) রাজনীতির মাঠ ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ এখনও মাঠে সক্রিয় নয়, অন্যদিকে বিএনপি ও ইসলামি জোট ঘরানার দলগুলো এখন নিজেদের অবস্থান পোক্ত করতে মরিয়া। আর এর মাঝেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন অধ্যাপক ডা. শহিদুল বারী—যাঁকে ঘিরেই এখন চায়ের দোকানে জনগণের মুখে উচ্চারিত হচ্ছে নতুন এক সম্ভাবনার নাম।

দুপুর থেকে সন্ধ্যা—চা-সিগারেটের ভাঁজে আলাপের আগুন এখন একটি বাক্যে থমকে যাচ্ছে: “যদি ডা. শহিদুল বারী প্রার্থী হয়, তবেই তো নির্বাচনী লড়াই জমবে!”

এই কথাটা শুধু কথার কথা নয়, বরং মাঠপর্যায়ের মনস্তাত্ত্বিক এক অভিব্যক্তি। শহিদুল বারীর পারিবারিক রাজনৈতিক ইতিহাস, তাঁর নিজস্ব পেশাগত মর্যাদা এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে চলাফেরার ধরণ এই বিশ্বাসের ভিত্তি।

পেশাগত জীবনে তিনি ঢাকার সিটি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তাঁর পিতা ভাষাসৈনিক শামসুল বারী মিয়া মোহন ছিলেন এ অঞ্চলে বিএনপির সাংগঠনিক বীজ রোপণকারী। শহিদুল বারীর জন্মস্থান বোয়ালমারীর রূপাপাত ইউনিয়নের দেউল গ্রামে হলেও ভৌগোলিকভাবে সেটি আলফাডাঙ্গা উপজেলার একদম সন্নিকটে। ফলে তাঁর সামাজিক সম্পর্ক ও রাজনৈতিক চর্চা দুই উপজেলাতেই প্রসারিত। জনমনে বিশ্বাস—এই দুই উপজেলার সমর্থনই তাঁকে শক্তিশালী প্রার্থী করে তুলতে পারে।

অন্যদিকে, ইসলামী সমমনা দলগুলো আসন্ন নির্বাচনে একটি অভিন্ন প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। সেই জোটের তরফ থেকে অধ্যাপক ড. ইলিয়াস মোল্লার নাম প্রায় নিশ্চিত। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান এবং মধুখালী উপজেলার সন্তান এই প্রার্থী ইতোমধ্যেই ইসলামপন্থী ভোটারদের মাঝে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেছেন।

এদিকে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে আরও যে নামগুলো আলোচনায় আছে, তারা হলো:

শামসুদ্দিন মিয়া (ঝুনু), সাবেক ভিপি, বোয়ালমারী সরকারি কলেজ

খন্দকার নাসিরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি, জাতীয়তাবাদী কৃষক দল

ড. শাহাবুদ্দিন আহমেদ, সহ-সভাপতি, অস্ট্রেলিয়া বিএনপি

আবুল কালাম আজাদ, ডেনমার্ক বিএনপির নেতা

মোঃ সাহাবুদ্দিন মিয়া (নিউটন), সহ-সভাপতি, ফরিদপুর জেলা মৎস্যজীবী দল

জয়দেব রায়, সাবেক ছাত্রদল নেতা

এছাড়া, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে ডা. বায়জিদ আহমেদ (শাহেদ)-এর প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে, যদিও দলটির সাংগঠনিক অবকাঠামো এ অঞ্চলে এখনও দুর্বল।

বিশ্লেষকদের মতে, যদি বিএনপি শহিদুল বারীকে প্রার্থী করে, আর ইসলামী জোটের তরফে প্রার্থী হন ড. ইলিয়াস মোল্লা—তাহলে ফরিদপুর-১ আসনে এবার দেখা যাবে দুই উচ্চশিক্ষিত, পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির প্রার্থীর মুখোমুখি লড়াই। যারা রাজনৈতিক দল নয়, বরং ব্যক্তিগত গ্রহণযোগ্যতা, সততা ও জনসম্পৃক্ততা দিয়ে ভোটারদের আকর্ষণ করতে সক্ষম হবেন।

নির্বাচন যত এগোচ্ছে, ততই পরিষ্কার হচ্ছে—এই আসনের নির্বাচনী যুদ্ধ হবে ধারণার বাইরে নতুন এক বাস্তবতা নিয়ে। কে এগিয়ে, তা বলা না গেলেও ভোটারদের মুখে একটি কথা এখন স্পষ্ট: “লড়াই হবে যদি প্রার্থী হয় শহিদুল বারী!”