চার দশকেরও বেশি সময় দখলে থাকার পর অবশেষে দখলমুক্ত হলো আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জমি। সোমবার (১১ নভেম্বর) বিকেল চারটার দিকে উপজেলা প্রশাসনের পরিচালিত এক অভিযানে সরকারি এই জায়গা পুনঃউদ্ধার করা হয়।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ রোডের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ও ডাকঘরের মাঝামাঝি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রায় ৪৪ শতাংশ সরকারি জমি দীর্ঘদিন ধরে টিনের দোকানঘরে পরিণত ছিল। সেসব অবৈধ স্থাপনা ভেকু দিয়ে অপসারণ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল ইকবাল এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম রায়হানুর রহমান।
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. নিয়াজ মুস্তাফি চৌধুরী, থানার ওসি শাহজালাল আলম, ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা ও প্রশাসনের অন্যান্য সদস্যরা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৯৮২ সালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নতুন ভবন অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হওয়ার পর পুরোনো জায়গাটি ফাঁকা পড়ে ছিল। সেই সুযোগে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি সেখানে দোকানঘর তুলে ব্যবসা শুরু করেন। ধীরে ধীরে পুরো জায়গাই পরিণত হয় এক প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রিত “বাজার এলাকায়”।
সম্প্রতি ওই জায়গার একাংশে রিনিয়া বেগম নামে এক নারী পুরোনো একটি ঘর মেরামত করে বসবাস শুরু করলে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে। এরপরই ইউএনও রাসেল ইকবাল ও এসিল্যান্ড (ভূমি) রায়হানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অবৈধ স্থাপনা সরানোর নির্দেশ দেন।
অপসারণ অভিযানের সময় রিনিয়া বেগমের পক্ষে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরজামাল খসরুসহ কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি এগিয়ে এসে উচ্ছেদ না করার অনুরোধ জানান। তবে সহকারী কমিশনার (ভূমি) দৃঢ় অবস্থান নিয়ে বলেন,
“আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়— সরকারি জমি দখল করে রাখলে তা অবশ্যই অপসারণ করা হবে।”
এর আগে প্রশাসন স্থানীয়দের আশ্বস্ত করেছিল, শুধু একটি ঘর নয়— পুরো সরকারি জায়গাই আইনি প্রক্রিয়ায় দখলমুক্ত করা হবে। সেই অঙ্গীকারেরই বাস্তব রূপ হলো সোমবারের অভিযান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসেল ইকবাল বলেন,
“সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় আমরা আপসহীন। কেউ সরকারি জায়গা দখল করলে তাকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। আলফাডাঙ্গাকে অবৈধ দখলমুক্ত রাখতে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”