প্রেসিডেন্ট যুদ্ধাহত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দেবে ইন্দোনেশিয়া

ইসরায়েলি আগ্রাসনে আহত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দেবে ইন্দোনেশিয়া। গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের এ কথা জানান দেশটির প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো।
তিনি জানান, প্রথম ধাপে এই সংখ্যা হাজারখানেক হতে পারে। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে আহতদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দিতে প্রস্তুত ইন্দোনেশিয়া।’
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার (১০ এপ্রিল) মধ্যপ্রাচ্য সফরে যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। এই সফরে তুরস্ক, কাতার, জর্ডান, মিসর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁর।
ইসরায়েলি আগ্রাসনের শিকার ফিলিস্তিনিদের কীভাবে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া যায়, সে বিষয়ে ফিলিস্তিন ও অন্য মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে কথা বলতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান প্রাবোও সুবিয়ান্তো।
তিনি বলেন, ‘আমরা আহত গাজাবাসী ও অনাথ শিশুদের সরিয়ে নিতে প্রস্তুত। সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত এবং গাজার পরিস্থিতি তাদের প্রত্যাবর্তনের জন্য নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত তারা সাময়িকভাবে ইন্দোনেশিয়ায় থাকবে।’ বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া বরাবরই ফিলিস্তিন ইস্যুতে সরব।
বিভিন্ন সময়ে দফায় দফায় ফিলিস্তিনে মানবিক সহায়তা পাঠিয়েছে জাকার্তা। প্রাবোও সুবিয়ান্তো বলেন, এই সংঘাতের সমাধানে ইন্দোনেশিয়া তার ভূমিকা আরও বাড়াতে চায়। তবে এটি সহজ নয়।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিদের নিরাপত্তা এবং তাদের স্বাধীনতাকে সমর্থনের ক্ষেত্রে ইন্দোনেশিয়ার প্রতিশ্রুতি সরকারকে আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করতে অনুপ্রাণিত করছে।
গত বছর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের আগে প্রাবোও সুবিয়ান্তো বলেন, প্রয়োজনে গাজায় শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠাতে চায় তার দেশ।
ফিলিস্তিনিদের তাড়িয়ে দিয়ে গাজা দখলের যে পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্র করেছে তারও কঠোর সমালোচনা করেছে জাকার্তা। ট্রাম্পের ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার যেকোনো প্রচেষ্টাকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যানের ঘোষণাও দেয় ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত বছর অক্টোবরে গাজায় শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর কথাও বলেছিলেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট।
ইন্দোনেশিয়ার সাময়িকভাবে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার প্রতিশ্রুতি বাস্তবে কতটা কার্যকর হবে, তা এখনো অস্পষ্ট।
ইসরায়েল যেভাবে গাজা সংকট ‘সমাধান’ করার নামে আগ্রাসী অবস্থান নিচ্ছে তাতে গাজা কবে নাগাদ আবার নিরাপদ হবে, কিংবা আদৌ সেই শরণার্থীরা আর ফিরে যেতে পারবে কি না-তা নিয়ে সংশয় রয়েই যায়।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, গাজার বর্তমান পরিস্থিতিতে এটা অনেকটা নিশ্চিত যে, এই ‘সাময়িক’ আশ্রয়ের ব্যবস্থাই শেষ পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে যেতে পারে।