London ০৩:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পেরেক দিয়ে উপড়ানো হয় যুবকের দুই চোখ, কাটা হয় রগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ফরিদপুরের কানাইপুরে ওবায়দুর খান নামের এক যুবকের দুই চোখ পেরেক দিয়ে উপড়ে এবং পায়ের রগ কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মরদেহ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুরের কানাইপুর বাজার এলাকায় এ বিক্ষোভ করেন তারা।

বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ, গত শুক্রবার বিকালে নিহত ওবায়দুর খানকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ছোট ভাই খায়রুজ্জামান খাজা। এ সময় তার দুই চোখে পেরেকে ঢুকিয়ে উপড়ে ফেলা হয় এবং পায়ের রগ কেটে ভেঙে ফেলা হয়। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। ওবায়দুর সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের ঝাউখোলা গ্রামের বিল্লাল খানের ছোট ছেলে এবং পেশায় কৃষি ও কাঠ মিস্ত্রির কাজ করতেন। তার পাঁচ মাসের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহ মুহাম্মদ আলতাফ হোসেন ও তার ভাই খায়রুজ্জামান খাজা সহ সকলকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান তারা।

পরিবার ও স্বজনরা জানান, ঘটনার দিন বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে কানাইপুর বিসিক শিল্পনগরীর মমতাজ ফিলিং স্টেশনে মোটরসাইকেলের তেল কিনতে যায় ওবায়দুর। পেছন থেকে একটি প্রাইভেটকারে সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত স্থানীয় খায়রুজ্জামান খাজার নেতৃত্বে ১০-১২ জন মিলে তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরে ফরিদপুর জুট ফাইবার্স মিলের পেছনে খাজার বাড়ির পাশে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করা হয়।

এ সময় তার দুই চোখে লোহার পেরেক দিয়ে তুলে ফেলা হয় এবং বাম পায়ের রগ কেটে ভেঙে ফেলা হয়। পরে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়। রাত ৯টায় গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে ভাঙ্গা-ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ের টোলপ্লাজা এলাকা থেকে মারা যায় সে।

নিহতের বাবা বিল্লাল খান বলেন, ‘আমরা বিএনপির কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফের লোক। শুক্রবার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছার মিটিংয়ে যাওয়ার জন্য খাজা আমাদের বলে যায়। আমরা ওই মিটিংয়ে না যাওয়ার কারণেই আমার ছেলেকে তুইল্যা নিয়ে মাইর‍্যা ফেলায়ছে। আমি এই হত্যার বিচার চাই। ওর (খাজা) ফাঁসি না হলে আরও মানুষ মরবে। খাজা আর আলতাব চেয়ারম্যান অর্ডার দিয়েই আমার ছেলেকে মারছে।’

এ বিষয়ে শনিবার সন্ধ্যায় কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, ‘মরদেহ দাফন শেষে পরিবারকে আসতে বলা হয়েছে, রাতেই হত্যা মামলা হিসেবে নেওয়া হবে। এ ছাড়া জড়িতদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত আছে।’

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১২:১৭:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫
১১
Translate »

পেরেক দিয়ে উপড়ানো হয় যুবকের দুই চোখ, কাটা হয় রগ

আপডেট : ১২:১৭:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫

ফরিদপুরের কানাইপুরে ওবায়দুর খান নামের এক যুবকের দুই চোখ পেরেক দিয়ে উপড়ে এবং পায়ের রগ কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মরদেহ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুরের কানাইপুর বাজার এলাকায় এ বিক্ষোভ করেন তারা।

বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ, গত শুক্রবার বিকালে নিহত ওবায়দুর খানকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ছোট ভাই খায়রুজ্জামান খাজা। এ সময় তার দুই চোখে পেরেকে ঢুকিয়ে উপড়ে ফেলা হয় এবং পায়ের রগ কেটে ভেঙে ফেলা হয়। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। ওবায়দুর সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের ঝাউখোলা গ্রামের বিল্লাল খানের ছোট ছেলে এবং পেশায় কৃষি ও কাঠ মিস্ত্রির কাজ করতেন। তার পাঁচ মাসের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহ মুহাম্মদ আলতাফ হোসেন ও তার ভাই খায়রুজ্জামান খাজা সহ সকলকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান তারা।

পরিবার ও স্বজনরা জানান, ঘটনার দিন বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে কানাইপুর বিসিক শিল্পনগরীর মমতাজ ফিলিং স্টেশনে মোটরসাইকেলের তেল কিনতে যায় ওবায়দুর। পেছন থেকে একটি প্রাইভেটকারে সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত স্থানীয় খায়রুজ্জামান খাজার নেতৃত্বে ১০-১২ জন মিলে তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরে ফরিদপুর জুট ফাইবার্স মিলের পেছনে খাজার বাড়ির পাশে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করা হয়।

এ সময় তার দুই চোখে লোহার পেরেক দিয়ে তুলে ফেলা হয় এবং বাম পায়ের রগ কেটে ভেঙে ফেলা হয়। পরে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়। রাত ৯টায় গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে ভাঙ্গা-ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ের টোলপ্লাজা এলাকা থেকে মারা যায় সে।

নিহতের বাবা বিল্লাল খান বলেন, ‘আমরা বিএনপির কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফের লোক। শুক্রবার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছার মিটিংয়ে যাওয়ার জন্য খাজা আমাদের বলে যায়। আমরা ওই মিটিংয়ে না যাওয়ার কারণেই আমার ছেলেকে তুইল্যা নিয়ে মাইর‍্যা ফেলায়ছে। আমি এই হত্যার বিচার চাই। ওর (খাজা) ফাঁসি না হলে আরও মানুষ মরবে। খাজা আর আলতাব চেয়ারম্যান অর্ডার দিয়েই আমার ছেলেকে মারছে।’

এ বিষয়ে শনিবার সন্ধ্যায় কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, ‘মরদেহ দাফন শেষে পরিবারকে আসতে বলা হয়েছে, রাতেই হত্যা মামলা হিসেবে নেওয়া হবে। এ ছাড়া জড়িতদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত আছে।’