London ০৮:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:

পুলিশের ওপর হামলা করে আ. লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিলেন নেতাকর্মীরা

অনলাইন ডেস্ক

পাবনার সুজানগরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল ওহাবকে ছিনিয়ে নিয়েছেন নেতাকর্মীরা। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় হওয়া দুটি মামলার আসামি। এ ঘটনায় আট পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের মথুরাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আব্দুল ওহাব মথুরাপুর এলাকার মৃত জাহেদ আলী শেখের ছেলে। তিনি সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক পৌর মেয়র ও সদ্য বিলুপ্ত হওয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি পাবনা সদর থানা ও ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামি।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ জানায়, বিকেলে আব্দুল ওহাবের বাড়ি-সংলগ্ন মথুরাপুর স্কুলের মসজিদে আছরের নামাজ শেষে বের হলে সুজানগর থানার পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে গাড়িতে ওঠায়। এ সময় পুলিশের গাড়িটি ঘিরে ধরেন বেশ কয়েকজন লোক। তারা আব্দুল ওহাবকে ছেড়ে দিতে বলেন, কিন্তু তাতে পুলিশ রাজি না হলে কয়েকশ লোক জড়ো হয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে হামলা ও ভাঙচুর করে তাকে গাড়ি থেকে জোর করে ছিনিয়ে নেন। এ সময় ধস্তাধস্তিতে টিমে অংশ নেওয়া আটজন পুলিশ সদস্য আহত হন।

সুজানগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব শেখ মো. আব্দুর রউফ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটা পুলিশের দুর্বলতার প্রকাশ। এত কম পুলিশ সদস্য ওখানে যাওয়া ঠিক হয়নি। আরও শক্তিশালী হয়ে সেখানে যাওয়া উচিত ছিল। এ ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

সুজানগর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক মো. হেসাব উদ্দিন বলেন, পুলিশের গাফিলতিতে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে ছাড়িয়ে নিরো ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জও করেনি। বন্দুক দিয়ে গুলিও করেনি। পুলিশ কোনো প্রতিরোধ ব্যবস্থা করেনি। অথচ আগে জামায়াত-বিএনপির লোকজনের ওপর কোনো কারণ ছাড়াই লাঠিচার্জ ও গুলি করত। এ ঘটনায় আমরা হতভম্ব হয়ে যাচ্ছি। একজন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এখনো বাসায় আরাম-আয়েশে দিন কাটাচ্ছেন। নেতাকর্মীদের বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। অথচ পুলিশ আজকে ধরতে গিয়ে ছেড়ে দিতে বাধ্য হলো। পুলিশের কঠোর হওয়া দরকার ছিল। পুলিশে হাসিনার লোক রয়েছে, এটাই আজকের প্রমাণ।

এ ঘটনায় আব্দুল ওহাবের বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তার তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সুজানগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আব্দুল ওহাবের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী মামলা রয়েছে। তাকে আমরা গ্রেপ্তার করি কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা ও ভ্যানগাড়ি ভাঙচুর করে ছিনিয়ে নিয়েছে। যেহেতু তারা পুলিশের কাজে বাধা দিয়েছে এজন্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় পুলিশের আটজন সদস্য আহত হয়েছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০২:৫০:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
Translate »

পুলিশের ওপর হামলা করে আ. লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিলেন নেতাকর্মীরা

আপডেট : ০২:৫০:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

পাবনার সুজানগরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল ওহাবকে ছিনিয়ে নিয়েছেন নেতাকর্মীরা। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় হওয়া দুটি মামলার আসামি। এ ঘটনায় আট পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের মথুরাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আব্দুল ওহাব মথুরাপুর এলাকার মৃত জাহেদ আলী শেখের ছেলে। তিনি সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক পৌর মেয়র ও সদ্য বিলুপ্ত হওয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি পাবনা সদর থানা ও ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামি।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ জানায়, বিকেলে আব্দুল ওহাবের বাড়ি-সংলগ্ন মথুরাপুর স্কুলের মসজিদে আছরের নামাজ শেষে বের হলে সুজানগর থানার পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে গাড়িতে ওঠায়। এ সময় পুলিশের গাড়িটি ঘিরে ধরেন বেশ কয়েকজন লোক। তারা আব্দুল ওহাবকে ছেড়ে দিতে বলেন, কিন্তু তাতে পুলিশ রাজি না হলে কয়েকশ লোক জড়ো হয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে হামলা ও ভাঙচুর করে তাকে গাড়ি থেকে জোর করে ছিনিয়ে নেন। এ সময় ধস্তাধস্তিতে টিমে অংশ নেওয়া আটজন পুলিশ সদস্য আহত হন।

সুজানগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব শেখ মো. আব্দুর রউফ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটা পুলিশের দুর্বলতার প্রকাশ। এত কম পুলিশ সদস্য ওখানে যাওয়া ঠিক হয়নি। আরও শক্তিশালী হয়ে সেখানে যাওয়া উচিত ছিল। এ ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

সুজানগর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক মো. হেসাব উদ্দিন বলেন, পুলিশের গাফিলতিতে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে ছাড়িয়ে নিরো ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জও করেনি। বন্দুক দিয়ে গুলিও করেনি। পুলিশ কোনো প্রতিরোধ ব্যবস্থা করেনি। অথচ আগে জামায়াত-বিএনপির লোকজনের ওপর কোনো কারণ ছাড়াই লাঠিচার্জ ও গুলি করত। এ ঘটনায় আমরা হতভম্ব হয়ে যাচ্ছি। একজন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এখনো বাসায় আরাম-আয়েশে দিন কাটাচ্ছেন। নেতাকর্মীদের বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। অথচ পুলিশ আজকে ধরতে গিয়ে ছেড়ে দিতে বাধ্য হলো। পুলিশের কঠোর হওয়া দরকার ছিল। পুলিশে হাসিনার লোক রয়েছে, এটাই আজকের প্রমাণ।

এ ঘটনায় আব্দুল ওহাবের বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তার তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সুজানগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আব্দুল ওহাবের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী মামলা রয়েছে। তাকে আমরা গ্রেপ্তার করি কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা ও ভ্যানগাড়ি ভাঙচুর করে ছিনিয়ে নিয়েছে। যেহেতু তারা পুলিশের কাজে বাধা দিয়েছে এজন্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় পুলিশের আটজন সদস্য আহত হয়েছেন।