London ০৪:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুরস্কার ও অক্সিলিয়ারি ফোর্সে নিয়োগ পাচ্ছেন ডাকাত ধরা ৫ শ্রমিক

অনলাইন ডেস্ক:

রাজধানীর ধানমন্ডিতে ‘অলংকার নিকেতন’ জুয়েলার্সের মালিক এম এ হান্নান আজাদের বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় চারজনকে আটকের পুরস্কার পাচ্ছেন পাঁচ শ্রমিক। সাহসিকতার জন্য সেই পাঁচ শ্রমিককে পাঁচ হাজার টাকা করে পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছে ডিএমপি।

একই সঙ্গে এই পাঁচ শ্রমিককে পুলিশের অক্সিলিয়ারি ফোর্স হিসেবে নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

এর আগে বুধবার (২৬ মার্চ) ভোরে ধানমন্ডিতে ‘অলংকার নিকেতন’ জুয়েলার্সের মালিক এম এ হান্নান আজাদের বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি হয়। ডাকাতরা র‍্যাব, ম্যাজিস্ট্রেট ও ছাত্র পরিচয়ে এম এ হান্নান আজাদের বাসা ও ওই ভবনের একটি অফিস থেকে প্রায় ৩৭ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। ওই সময় পাশের নির্মাণাধীন ভবনের এই পাঁচজন শ্রমিক জীবন বাজি রেখে চার ডাকাতকে ধরে ফেলেন। পরে আরও দুই ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুরস্কার ও অক্সিলিয়ারি ফোর্সে নিয়োগ পাচ্ছেন ডাকাত ধরা ৫ শ্রমিকগ্রেফতার ছয় ডাকাত

সংবাদ সম্মেলনে ডিসি তালেবুর রহমান বলেন, ধানমন্ডিতে ডাকাতির ঘটনায় ডাকাতদের প্রতিরোধ করা এবং তাদের ধরতে সহায়তা করায় পাঁচজন শ্রমিকের নাম পাওয়া গেছে। সাহসিকতার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী পাঁচ শ্রমিকের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে পুরষ্কারের ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া এই পাঁচজনকে অক্সিলিয়ারি ফোর্স হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ঢাকার নিরাপত্তা পরিদর্শনে মাঝেমধ্যেই বের হচ্ছেন। এর মধ্যে চেকপোস্ট-টহল জোরদার করা হয়েছে। কিন্তু বাসা-বাড়িতে এভাবে ডাকাতির ঘটনা মাঝেমধ্যেই দেখা যাচ্ছে। এটি গোয়েন্দা ব্যর্থতা নাকি চেকপোস্ট-টহলে যারা দায়িত্বরত তাদের গাফিলতি?

এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসি তালেবুর রহমান বলেন, চলমান রমজান ও আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ডিএমপি বিস্তারিত নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এ সময় টহল জোরদার, কৌশলগত জায়গায় তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া দু’একটি যে ঘটনা ঘটছে সেগুলোর সঙ্গে সঙ্গে উদঘাটন করে আসামি গ্রেফতার করা হচ্ছে। পুলিশ অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। এর মধ্যে কেউ যদি অপরাধ করে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এরই মধ্যে যেসব ঘটনা ঘটেছে সেগুলো উদঘাটন করা হয়েছে।

র‍্যাব, ম্যাজিস্ট্রেট ও ছাত্র পরিচয়ে এমন দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় নগরবাসী কীভাবে বুঝবে কোন অভিযান ভুয়া আর কোন অভিযান সত্য? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ধানমন্ডির ডাকাতির ঘটনায় সেখানকার বাসার মালিক ৯৯৯-এ কল করেন। এরপর সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ যায়। আমরা জনগকে বারবার অনুরোধ করছি, আপনাদের সামনে যদি এমন ঘটনা ঘটে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ৯৯৯-এ কল করবেন।

পুরস্কার ও অক্সিলিয়ারি ফোর্সে নিয়োগ পাচ্ছেন ডাকাত ধরা ৫ শ্রমিকডাকাতিতে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ও উদ্ধার করা টাকা, মোবাইল ফোন

সংবাদ সম্মেলনে রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলমকে প্রশ্ন করা হয়, ডাকাতদল র‍্যাবসহ বিভিন্ন বাহিনীর পরিচয় দিয়েছে, তারা আদৌ এসব বাহিনীর সদস্য কি না- জবাবে ডিসি মাসুদ আলম বলেন, ডাকাতদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। ডাকাতিতে তাদের ২৫ থেকে ৩০ জনের টিম জড়িত। তাদের মূল পরিচয় উদঘাটন করে বিস্তারিত জানানো হবে। প্রাথমিকভাবে গ্রেফতার ছয় ডাকাত এলোপাতাড়ি তথ্য দিয়েছেন, তাদের রিমান্ডে নিয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

তিনি বলেন, গত বছরের শেষদিকে অলংকার নিকেতন জুয়েলার্স থেকে প্রায় সাড়ে সাত হাজার ভরি স্বর্ণ চুরি হয়েছিল। এ ঘটনায় মামলাও হয় তেজগাঁও থানায়। এরপর ২৬ মার্চ ভোরে ধানমন্ডিতে ওই জুয়েলার্সের মালিকের বাসায় ডাকাতদল ডাকাতি করে। দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ও নগদ টাকাসহ সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের ছয় সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ধানমন্ডি থানা পুলিশ।

গ্রেফতাররা হলেন- ফরহাদ বীন মোশারফ (৩৩), ইয়াছিন হাসান (২২), মোবাশ্বের আহাম্মেদ (২৩) ও ওয়াকিল মাহমুদ (২৬), আবদুল্লাহ (৩২), সুমন (২৯), আবদুল্লাহ (৩২) ও গাড়িচালক সুমন (২৯)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত র‌্যাব লেখা কালো রঙের দুটি জ্যাকেট, তিনটি কালো রঙের র‌্যাব লেখা ক্যাপ, দুটি মাইক্রোবাস, পাঁচটি মোবাইল ফোন, একটি লোহার তৈরি ছেনি, একটি লাল রঙের পুরোনো স্লাই রেঞ্জ ও নগদ ৪৫ হাজার ১০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৮:০৯:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫
১৪
Translate »

পুরস্কার ও অক্সিলিয়ারি ফোর্সে নিয়োগ পাচ্ছেন ডাকাত ধরা ৫ শ্রমিক

আপডেট : ০৮:০৯:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫

রাজধানীর ধানমন্ডিতে ‘অলংকার নিকেতন’ জুয়েলার্সের মালিক এম এ হান্নান আজাদের বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় চারজনকে আটকের পুরস্কার পাচ্ছেন পাঁচ শ্রমিক। সাহসিকতার জন্য সেই পাঁচ শ্রমিককে পাঁচ হাজার টাকা করে পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছে ডিএমপি।

একই সঙ্গে এই পাঁচ শ্রমিককে পুলিশের অক্সিলিয়ারি ফোর্স হিসেবে নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

এর আগে বুধবার (২৬ মার্চ) ভোরে ধানমন্ডিতে ‘অলংকার নিকেতন’ জুয়েলার্সের মালিক এম এ হান্নান আজাদের বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি হয়। ডাকাতরা র‍্যাব, ম্যাজিস্ট্রেট ও ছাত্র পরিচয়ে এম এ হান্নান আজাদের বাসা ও ওই ভবনের একটি অফিস থেকে প্রায় ৩৭ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। ওই সময় পাশের নির্মাণাধীন ভবনের এই পাঁচজন শ্রমিক জীবন বাজি রেখে চার ডাকাতকে ধরে ফেলেন। পরে আরও দুই ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুরস্কার ও অক্সিলিয়ারি ফোর্সে নিয়োগ পাচ্ছেন ডাকাত ধরা ৫ শ্রমিকগ্রেফতার ছয় ডাকাত

সংবাদ সম্মেলনে ডিসি তালেবুর রহমান বলেন, ধানমন্ডিতে ডাকাতির ঘটনায় ডাকাতদের প্রতিরোধ করা এবং তাদের ধরতে সহায়তা করায় পাঁচজন শ্রমিকের নাম পাওয়া গেছে। সাহসিকতার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী পাঁচ শ্রমিকের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে পুরষ্কারের ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া এই পাঁচজনকে অক্সিলিয়ারি ফোর্স হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ঢাকার নিরাপত্তা পরিদর্শনে মাঝেমধ্যেই বের হচ্ছেন। এর মধ্যে চেকপোস্ট-টহল জোরদার করা হয়েছে। কিন্তু বাসা-বাড়িতে এভাবে ডাকাতির ঘটনা মাঝেমধ্যেই দেখা যাচ্ছে। এটি গোয়েন্দা ব্যর্থতা নাকি চেকপোস্ট-টহলে যারা দায়িত্বরত তাদের গাফিলতি?

এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসি তালেবুর রহমান বলেন, চলমান রমজান ও আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ডিএমপি বিস্তারিত নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এ সময় টহল জোরদার, কৌশলগত জায়গায় তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া দু’একটি যে ঘটনা ঘটছে সেগুলোর সঙ্গে সঙ্গে উদঘাটন করে আসামি গ্রেফতার করা হচ্ছে। পুলিশ অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। এর মধ্যে কেউ যদি অপরাধ করে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এরই মধ্যে যেসব ঘটনা ঘটেছে সেগুলো উদঘাটন করা হয়েছে।

র‍্যাব, ম্যাজিস্ট্রেট ও ছাত্র পরিচয়ে এমন দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় নগরবাসী কীভাবে বুঝবে কোন অভিযান ভুয়া আর কোন অভিযান সত্য? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ধানমন্ডির ডাকাতির ঘটনায় সেখানকার বাসার মালিক ৯৯৯-এ কল করেন। এরপর সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ যায়। আমরা জনগকে বারবার অনুরোধ করছি, আপনাদের সামনে যদি এমন ঘটনা ঘটে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ৯৯৯-এ কল করবেন।

পুরস্কার ও অক্সিলিয়ারি ফোর্সে নিয়োগ পাচ্ছেন ডাকাত ধরা ৫ শ্রমিকডাকাতিতে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ও উদ্ধার করা টাকা, মোবাইল ফোন

সংবাদ সম্মেলনে রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলমকে প্রশ্ন করা হয়, ডাকাতদল র‍্যাবসহ বিভিন্ন বাহিনীর পরিচয় দিয়েছে, তারা আদৌ এসব বাহিনীর সদস্য কি না- জবাবে ডিসি মাসুদ আলম বলেন, ডাকাতদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। ডাকাতিতে তাদের ২৫ থেকে ৩০ জনের টিম জড়িত। তাদের মূল পরিচয় উদঘাটন করে বিস্তারিত জানানো হবে। প্রাথমিকভাবে গ্রেফতার ছয় ডাকাত এলোপাতাড়ি তথ্য দিয়েছেন, তাদের রিমান্ডে নিয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

তিনি বলেন, গত বছরের শেষদিকে অলংকার নিকেতন জুয়েলার্স থেকে প্রায় সাড়ে সাত হাজার ভরি স্বর্ণ চুরি হয়েছিল। এ ঘটনায় মামলাও হয় তেজগাঁও থানায়। এরপর ২৬ মার্চ ভোরে ধানমন্ডিতে ওই জুয়েলার্সের মালিকের বাসায় ডাকাতদল ডাকাতি করে। দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ও নগদ টাকাসহ সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের ছয় সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ধানমন্ডি থানা পুলিশ।

গ্রেফতাররা হলেন- ফরহাদ বীন মোশারফ (৩৩), ইয়াছিন হাসান (২২), মোবাশ্বের আহাম্মেদ (২৩) ও ওয়াকিল মাহমুদ (২৬), আবদুল্লাহ (৩২), সুমন (২৯), আবদুল্লাহ (৩২) ও গাড়িচালক সুমন (২৯)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত র‌্যাব লেখা কালো রঙের দুটি জ্যাকেট, তিনটি কালো রঙের র‌্যাব লেখা ক্যাপ, দুটি মাইক্রোবাস, পাঁচটি মোবাইল ফোন, একটি লোহার তৈরি ছেনি, একটি লাল রঙের পুরোনো স্লাই রেঞ্জ ও নগদ ৪৫ হাজার ১০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।