পটুয়াখালীতে চলতি বছরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের সংঘর্ষে হতাহতের সংখ্যা চরমে

২০১৫ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সাগরকন্যা খ্যাত পটুয়াখালী জেলার জনসংখ্যা ১৫ লক্ষ ৩৫ হাজার ৮৫৪ জন। এর মধ্যে শতকরা ৯১ ভাগ মানুষই ক্ষুদ্র কৃষক। আর কৃষিকাজের প্রধান উৎস চাষযোগ্য আবাদি জমি। আর এ জমি নিয়েই লেগে থাকছে যুগের পর যুগ দ্বন্দ্ব আর এ দ্বন্দ্ব থেকেই শুরু হয় মারামারি, হানাহানি । যার পরিসর বৃদ্ধি পায় বর্ষাকাল তথা এপ্রিল মাস থেকে চলতে থাকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত আউশ, আমন, বোরো যেমন কৃষকদের মৌসুম তেমনি ৬০% কৃষকদের মাঝে নেমে আসে ভয়ানক বিপদের মৌসুম রক্তে ভিজে যায়।
পটুয়াখালী সরকারি মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগ ও সার্জারি বিভাগ যা থেকে বাদ যায়না শিশু, নারী, বৃদ্ধ। রক্তের গন্ধ ও আহাজারির চাপাকান্নায় হাসপাতালে বিরাজ করে সুশাসন নীরবতা কারো মুখে যেন স্বস্তির বিন্দুমাত্র লেশ নেই আছে শুধু দীর্ঘ নিঃশ্বাস। কেউবা মারা গেল স্বজনরা আসামির নাম ধরে উচ্চকন্ঠে অভিশাপ দিচ্ছে। কোনওসময় আবার দু’পক্ষেরই উপস্থিতিতে আহত নিহতদের স্বজনরা একে অপরকে অবিরাম বকে যাচ্ছে অথচ প্রত্যেকের এই জমিজমার নিষ্পত্তি মীমাংসার জন্য মামলার রায়টা আদালতে ঝুলে আছে কারোটা যুগ যুগ বছর কারোটা বিগত কয়েক বছর তাহলে এ নেপথ্যের দায় কি আদালতের উপর বর্তায় সরেজমিনের তথ্য অনুযায়ী পটুয়াখালী জেলার বিজ্ঞ আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম ভূমি রেকর্ড ও জরিপ বিভাগের দুর্বলতা । তাছাড়া আইন ও সালিশ ব্যবস্থার অপ্রতুলতা।ভূমি মালিকানার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার অভাব। ভূমি বিষয়ক জটিল আইনি প্রক্রিয়া।
ভূমি দখলের প্রবণতা। ভূমি নিয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা। ভূমিহীনতা ও দরিদ্রতা। এই জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের কারণে অনেক পরিবার সহিংসতার শিকার হচ্ছে, যা তাদের জীবন, জীবিকা এবং পরিবারকে বিপন্ন করে তুলছে । এই সমস্যা সমাধানে সরকারের ভূমি সংস্কার, ভূমি জরিপ ও রেকর্ড। আধুনিকায়ন, এবং আইনি ব্যবস্থার উন্নয়ন করা প্রয়োজন। পটুয়াখালী সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কতৃপক্ষের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ২৫ সালের জানুয়ারি থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত এই হাসপাতালে মারামারি রোগীর আনুমানিক তিন হাজার থেকে ৩৫০০ চলতি জুলাই মাসে এখন (২১ জুলাই) পর্যন্ত ৩১০ রোগী মারামারির কারণে ভর্তি হয়েছে। যার মধ্য শতকরা ৮০ ভাগই জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সংঘটিত হয়েছে তাহলে এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উপায় কি আছে নাকি লাশ ও আহতদের কান্না অবিরত বইতে থাকবে পটুয়াখালীর আকাশে এমন প্রশ্ন হতাহত ভুক্তভোগী ও স্বজনদের এদেশের আইন, আদালত, বিচারক ও সরকারের কাছে।