পটুয়াখালী সদর উপজেলার অন্তর্ভুক্ত ১২ টি ইউনিয়নের প্রত্যেকটা ইউনিয়নে একটি করে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র করেছে সরকার। নামে মাত্র ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র হলে এগুলোর কোনটিতেই স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে না। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেশিরভাগ কেন্দ্রে কর্মকর্তা কর্মচারীরা ডিউটি টাইমে ডিউটিতে নেই। দুএকজন থাকলেও তারা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবাসিক ভবনে সাংসারিক কাজে ব্যস্ত। কোন কোন কেন্দ্রগুলোতে চলছে জোড়াতালি দিয়ে মেরামতে কাজ। ভিতরের পরিবেশের অবস্থা আরও নাজুক মনে হয় যে পরিত্যক্ত কোন আবাসিক ভবন। স্বাস্থ্য সমস্যায় জর্জরিত বিভিন্ন ইউনিয়নের বাসিন্দারা জানান, আমরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাই না ওখানে ডাক্তার নেই, ঔষধ নেই আমরা অসুস্থ হলে পটুয়াখালী হাসপাতালে যাই সেখানে গিয়ে ও মাঝে মাঝে ডাক্তার পাই না বাধ্য হয়ে ক্লিনিকে ভর্তি হই যে চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে গিয়ে আমরা ঋনগ্রস্ত হয়ে পড়ি। পটুয়াখালী সরকারি মেডিকেল কলেজের সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাঝে মাঝে রোগীর সংখ্যা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে ওয়ার্ডের পাশে ফুটপাতে এমনকি শিশুদের খেলার জোনে বিছানা বিছিয়ে রোগীদের চিকিৎসা নিতে হয়। গত ২০২৪ সালে সন্তান প্রসবকালীন সময়ে ১০০ জন গর্ভবতী নারী প্রান হারান বলে স্থানীয় সুত্রের খবর যার অন্যতম কারন তাদেরকে সঠিক সময়ে চিকিৎসার অভাব । অনেক ইউনিয়নের অবস্থান পটুয়াখালী মেডিকেল থেকে দুরত্ব হওয়ার কারণে ও রাস্তাঘাট অনুন্নত হওয়ার কারণে অসুস্থ রোগীদের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি। ১২ টি ইউনিয়নের মধ্যে কালিকাপুর, লোহালিয়া, কমলাপুর নামক তিন ইউনিয়নে ০৩ জন
সাব এসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে অফিস টাইমে ক্লিনিক ব্যবসার অভিযোগ আছে।
জৈনকাঠি ইউনিয়নের বাসিন্দা সেহকাঠি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পাশে মুদি ব্যবসায়ী আসাদুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ দালানের চাকরি জীবি কর্মকর্তা কর্মচারীরা ফাও ফাও বেতন নেয়, তাদের কোন কাজ নেই। বিভিন্ন ইউনিয়নের বাসিন্দারা জানান, কেন এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন দিচ্ছে সরকার তাদের তো কোন কাজ নাই, দীর্ঘ আট মাস যাবৎ কেন্দ্রে কোন ঔষধ নেই বলে অভিযোগ করেন তারা। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মকর্তা কর্মচারী পদে দায়িত্বরত একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বললে তারা এর সত্যতা স্বীকার করেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পটুয়াখালী সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান ইমরান লন্ডন বিডি টিভি কে বলেন, আমাদের ১২ টি ইউনিয়নের মাত্র ০৩ ইউনিয়নে সাব এসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদের কর্মকর্তা আছেন বাকি ০৯ টি ইউনিয়নে এই পদ সহ অনেক পদ-ই খালি পড়ে আছে যা পূরন হলে এ সংকট কেটে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। ঔষধ সরবরাহ বন্ধের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিগত সাড়ে পাঁচ মাস যাবত ঔষধ সরবরাহ বন্ধ আছে যেটা আমরাও পাচ্ছি না স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঠাবো কি করে। সামনের আগষ্টেই ঔষধ সরবরাহ চালু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।