নাটোরে বিএনপি’র ব্যানার-ফেস্টুনে প্রতিপক্ষের ভূতের আছর

উত্তরাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ জেলা নাটোরে বিএনপি’র ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে চলছে অদ্ভুত এক তান্ডব। স্থানীয়ভাবে চিহ্নিত এক নেতার নির্দেশনা অনুযায়ী দীর্ঘদিন ধরেই অন্য কারো পোস্টার, ব্যানার বা ফেস্টুন লাগাতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি সেখানে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কিংবা সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবিসহ ব্যানারও টাঙানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দলীয় নেতা- কর্মীদের অভিযোগ, ওই নেতার পোস্টার ছাড়া অন্য কোনো প্রচারণামূলক ব্যানার টাঙানো হলে তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে বা ভাড়াটে ক্যাডারদের দিয়ে অপসারণ করা হচ্ছে।
সম্প্রতি ঈদুল আজহার সময় নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য ও “আমরা বিএনপি পরিবার”-এর উপদেষ্টা, পরিচ্ছন্ন ও ত্যাগী রাজনীতিক মোঃ আবুল কাশেম-এর পক্ষ থেকে শহীদ জিয়া, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবিসংবলিত শুভেচ্ছা ব্যানার ও ফেস্টুন শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে লাগানো হয়। কিন্তু রাতের আঁধারে সেগুলো ছিঁড়ে ফেলে দুর্বৃত্তরা।
একইভাবে, দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা সাইবার দলের সাধারণ সম্পাদক ও যুবদল নেতা গুলমেরাজ হেলমেট, প্রচার সম্পাদক মোঃ শফিকুল ইসলাম মালেক, জেলা ছাত্রদল নেতা মোঃ কাউছার আলী ও সিরাজদ্দৌলা কলেজ ছাত্রদলের নেতা মীর হাবীব-এর উদ্যোগে বিভিন্ন স্থানে ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো হয়। কিন্তু সেগুলোও রাতের আঁধারে ছিঁড়ে ফেলা হয়। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সাধারণ নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, এসব কর্মকাণ্ড প্রমাণ করে, একটি কুচক্রী মহল দলের প্রতি নিষ্ঠাবান নয়, বরং ব্যক্তিপূজা ও স্বার্থসিদ্ধির রাজনীতিতে মত্ত।
এ ঘটনায় নাটোর জুড়ে নিন্দা ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, এই জনবিচ্ছিন্ন চক্র হয়তো খুব শিগগিরই গণবয়কটের শিকার হবে।
এদিকে পূর্ব ঘোষিত ৩১ দফা কর্মসূচি প্রচারের লক্ষ্যে গত ৬ সেপ্টেম্বর দত্তপাড়ায় নিজ বাসভবনে উঠান বৈঠকের আয়োজন করেন মোঃ আবুল কাশেম। পরে প্রায় ১০ হাজার লোকের উপস্থিতিতে উঠান বৈঠকটি জনসভায় রূপ নেয়। অন্যদিকে, ওই সভা ভণ্ডুল করতে কাছেই আরেকটি সভার আয়োজন করে আরেকটি গ্রুপ। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সাবেক ভূমি উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস দুলু নেতৃত্বাধীন সেই সভায় উপস্থিতি ছিল অত্যন্ত হতাশাজনক—মাত্র ৭/৮শ জনের সমাগম ঘটে।
ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলার ঘটনায় যুবদল নেতা গুলমেরাজ হেলমেট বলেন, “যারা দলীয় আদর্শ ছেড়ে ব্যক্তি পূজায় মত্ত, তারাই এ ধরনের জঘন্য কাজ করতে পারে।”
যুবদল প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মালেকের ভাষ্য, “এটা আসলে দলীয় ভাবমূর্তি নষ্টের আওয়ামী চক্রান্ত, যার বাস্তবায়ন করছে মুখোশধারী কিছু চাটুকার।”
ছাত্রদল নেতা কাউছার আলী বলেন, “যারা ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলার সঙ্গে জড়িত, তাদের ধরতে পারলে জনতার আদালতে শাস্তি দেওয়া হবে।”
আরেক নেতা মীর হাবীব দৃঢ় কণ্ঠে জানান, “কোনভাবেই এদের ছাড় দেওয়া হবে না।”