নওগাঁর রানীনগরে জেন্ডার সচেতনতা ও নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ বিষয়ক প্রশিক্ষণ সম্পন্ন

নারী-পুরুষের সমান মর্যাদা ও সহাবস্থানের মাধ্যমে একটি শান্তিপূর্ণ ও বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়ে তোলার প্রত্যয়ে নওগাঁর রানীনগরে সম্পন্ন হলো “জেন্ডার সচেতনতা ও নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ” বিষয়ক প্রশিক্ষণ। এফসিডিও’র অর্থায়নে দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের মাল্টি-স্টেকহোল্ডার ইনিশিয়েটিভ ফর পিস অ্যান্ড স্ট্যাবিলিটি (এমআইপিএস) প্রকল্পের আওতায় বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) রানীনগর প্রেসক্লাবের হলরুমে দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।
প্রশিক্ষণে রাজনৈতিক, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী যুব সংগঠনের প্রতিনিধি, উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবং ইয়ুথ পিস অ্যাম্বাসেডর গ্রুপ (YPAG)-এর সদস্যসহ মোট ১৭ জন যুব প্রতিনিধি অংশ নেন। তাদের মধ্যে ৭ জন নারী ও ১০ জন পুরুষ ছিলেন। অংশগ্রহণকারীরা জানান, এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা নিজ নিজ পরিবার, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনে গিয়ে নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিতকরণ এবং নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবেন।
প্রশিক্ষণে নারী-পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে করণীয়, সমাজে নারী-পুরুষের দায়িত্ব ও অবদান, নারীর প্রতি বৈষম্য দূরীকরণ, কুপ্রথা প্রতিরোধ, নেতৃত্বে নারীর অংশগ্রহণ, পারিবারিক সহমর্মিতা এবং সামাজিক সম্প্রীতির গুরুত্বের ওপর বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। অংশগ্রহণকারীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিতে প্রজেক্টরের মাধ্যমে চিত্র উপস্থাপন ও গ্রুপ ওয়ার্কের ব্যবস্থা করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পিএফজির কো-অর্ডিনেটর মোঃ পাভেল রহমান। প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেন দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের রাজশাহী অঞ্চলের এরিয়া কো-অর্ডিনেটর এস এম শফিকুর রহমান ও ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর মোঃ হেলাল উদ্দিন। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন ওয়াইপিএজি সমন্বয়কারী মোঃ সারোয়ার জাহান তৌফিক এবং যুগ্ম সমন্বয়কারী মোছাঃ জুলেখা বানু ও শাকিব আহাম্মেদ রতন।
পিএফজির কো-অর্ডিনেটর মোঃ পাভেল রহমান বলেন, “যুব সমাজকে সচেতন করে তুললেই একটি সহিংসতামুক্ত সমাজ গড়া সম্ভব। আজকের এ প্রশিক্ষণ তরুণদের সেই পথে এগিয়ে নেবে।” দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের এরিয়া কো-অর্ডিনেটর এস এম শফিকুর রহমান বলেন, “নারীর প্রতি সহিংসতা শুধু নারী নয়, পুরো সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই এ বিষয়ে তরুণ প্রজন্মকে সচেতন করতে হবে।” ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর মোঃ হেলাল উদ্দিন বলেন, “যুবক-যুবতীরা যদি পরিবার থেকেই সমান মর্যাদার চর্চা শুরু করেন, তবে ধীরে ধীরে সমাজ থেকে বৈষম্য ও সহিংসতা দূর হয়ে যাবে।”
অনুষ্ঠানের সমাপনীতে অংশগ্রহণকারীদের দিয়ে “নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও সহিংসতাকে না বলি” শীর্ষক শপথবাক্য পাঠ করানো হয়। অংশগ্রহণকারীরা জানান, এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা নারী-পুরুষের সমতা ও পারস্পরিক সম্মান বজায় রাখার বিষয়ে নতুনভাবে ভাবতে শিখেছেন। তারা অঙ্গীকার করেন, নিজ নিজ সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানে গিয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন।
আয়োজকরা আশা করছেন, এ ধরনের কার্যক্রমের মাধ্যমে ভবিষ্যতে রানীনগরকে একটি সম্প্রীতিপূর্ণ ও বৈষম্যমুক্ত উপজেলায় পরিণত করা সম্ভব হবে।