ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার ধুলজুড়ি গ্রামের সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ড নিয়ে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এলাকা। ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার হওয়া শাকিল আহমেদের মুক্তির দাবিতে এবং সাধারণ মানুষকে হয়রানির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (১ মে) সকাল ১১টায় মানববন্ধন করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও মন্দির কমিটির সদস্যরা।
ধুলজুড়ি বাজার সংলগ্ন সড়কে এই মানববন্ধনে অংশ নেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজন, এলাকাবাসী ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। বক্তারা বলেন, “আমাদের মন্দির ও ঘরে আগুন দিয়ে যাঁরা সমাজে বিভ্রান্তি ছড়াতে চায়, তাদের বিচার চাই। কিন্তু সে বিচারের নামে নিরীহ মানুষ ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে টার্গেট করে হয়রানি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না।”
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সার্বজনীন দূর্গামন্দির কমিটির সভাপতি দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস ,ক্ষতিগ্রস্ত সুজন সরকার, দেবাশীষ রায়, স্থানীয় বাসিন্দা মুকুন্দ পাল,ধুলজুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃনিজাম উদ্দিন প্রমুখ। তাঁরা অভিযোগ করেন, ঘটনার প্রকৃত তদন্ত না করে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে একটি পক্ষ সাধারণ মানুষকে টার্গেট করছে।
উল্লেখ্য, গত ২৯ এপ্রিল রাতে ধুলজুড়ি গ্রামে হিন্দু মন্দির, করাতকল, গোয়ালঘর ও রান্নাঘরে একযোগে আগুন দেওয়া হয়। ঘটনার পর ৩০ এপ্রিল রাতে কৃষকদল নেতা জাহিদ শেখসহ চারজনকে গ্রেফতার করে যৌথ বাহিনী। তাঁদের মধ্যে একজন শাকিল আহমেদ, যিনি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিনের ছেলে এবং এলাকার পরিচিত মুখ।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা অভিযোগ করেন, শাকিল আহমেদ এলাকার একজন শিক্ষিত ও সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য যুবক। রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁরা বলেন, “ঘটনার প্রকৃত তদন্ত হোক, কিন্তু নিরীহ ও নির্দোষদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে।”
এদিকে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তদন্তে যা প্রমাণিত হচ্ছে, সে অনুযায়ীই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কারও বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন মামলা হচ্ছে না।
মানববন্ধন থেকে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়—যাতে প্রকৃত দোষী শনাক্ত হয়, এবং নিরপরাধ কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয়।
ধুলজুড়ির এই অগ্নিকাণ্ড ও তা ঘিরে চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনা এখন পুরো উপজেলায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।