London ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৩ মে ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ধর্ষণ মামলায় সদ্য বহিস্কৃত ছাত্রদল নেতা কারাগারে,বানোয়াট-সাজানো-পরিকল্পিত ঘটনা দাবি পরিবারের

জেলা প্রতিনিধি,নেত্রকোণা:

 

 

নেত্রকোণার দুর্গাপুরে বিরিশিরি রিসোর্টে ১৯ বছর বয়সী তরুণীকে ধর্ষণ মামলার আসামি উপজেলা ছাত্রদলের সদ্য বহিস্কৃত যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. ফয়সাল আহমেদ দুর্জয় বর্তমানে কারাগারে আছেন।

গত ২৯ এপ্রিল এ ঘটনায় দুর্গাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন ওই তরুণী। পরের দিন ৩০ এপ্রিল দুর্জয়কে জেলা আদালতে প্রেরণ করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন।

এই ধর্ষণ ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, সাজানো ও পরিকল্পিত ঘটনা উল্লেখ করে দুর্জয়ের মা মোছা. খাদিজা আক্তার নিজের ছেলেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১ মে) সন্ধ্যায় দুর্গাপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন,”আমার পুত্র মো. ফয়সাল আহমেদ দুর্জয় একজন সহজ সরল, নম্রভদ্র স্বভাবের মানুষ। সে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাথে জড়িত থেকে সুনামের সাথে রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। কোন সময়ই সে কোন ধরণের অসামাজিক এবং সামাজিক বিশৃঙ্খলার সাথে জড়িত ছিল না। কিছুদিন ধরে তাকে বিভিন্নভাবে মান-সম্মান নষ্ট করার জন্য বা সামাজিকভাবে হেস্তনেস্ত করার জন্য কতিপয় ব্যক্তি, বন্ধু দাবী করে তার সাথে মেলামেশা করে আসছিলো যা আমার পুত্র বুঝে উঠতে পারেনি।”

তিনি আরও বলেন,”সম্প্রতি আমার পুত্রকে জড়িয়ে ধর্ষণ কার্যক্রমের যে নাটক সাজিয়ে মামলায় জড়িয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, সাজানো এবং পরিকল্পিত ঘটনা। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। মূলত যে নারী আমার পুত্র দুর্জয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে সে প্রকৃতপক্ষে একজন দুশ্চরিত্রা মেয়ে ও একজন কলগার্ল। এই খবরও আমরা জেনেছি। এই মেয়েটি অর্থাৎ প্রমি আক্তার এটাই তার চরিত্র ও ব্যবসা। সে মেয়েটি ও মুন্না মিয়া উভয়েই সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ এর সক্রিয় কর্মী। সম্প্রতি নাটকীয় ঘটনার পর ওই মেয়ে অর্থাৎ প্রমি আক্তারের অসামাজিক এবং কু-কর্মের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) প্রকাশ পেয়েছে। যা সকলেই অবগত আছেন। এতেই প্রমাণিত হয় এই মেয়েটি কলগার্ল।”

দুর্গাপুর থানার ওসিকে দোষারোপ করে মোছা. খাদিজা আক্তার লিখিত বক্তব্যে বলেন,”মামলার বাদী প্রমি আক্তারের জবানবন্দি অনুযায়ী আপনারা (সাংবাদিকবৃন্দ) মামলার এফআইআরটি পড়লে বুঝতে পারবেন যে, গত ২৮ এপ্রিল থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত মুন্নার সাথে রিসোর্টে অবস্থান করে আসছে। স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে গেলে দুর্গাপুর থানার ওসি মাহমুদুল হাসান রিসোর্টে গিয়ে তাদেরকে থানায় নিয়ে আসে এবং প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে উৎকোচের বিনিময়ে ছাত্রলীগ কর্মী মুন্নাকে বাঁচানোর জন্য আমার ছেলেকে ফাঁসিয়ে দেয়। প্রকৃত ধর্ষণকারী মুন্নাকে দুর্গাপুর থানার গত বছরের ২২ নভেম্বর তারিখের পুরাতন একটি মামলায় গ্রেফতার দেখায়। উৎকোচের বিনিময়ে ওসি মাহমুদুল হাসানের সহযোগিতায় ধর্ষণ নাটকটি মঞ্চায়িত হয়েছে। সেজন্যই ছাত্রলীগ নেতা ও প্রকৃত ধর্ষণকারী মুন্নাকে রক্ষা করে ছাত্রদল নেতা ফয়সাল আহমেদ দুর্জয়কে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।”

দুর্জয়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তাকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জোর দাবী জানান মোছা. খাদিজা আক্তার।

সংবাদ সম্মেলনে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে প্রকাশ্য দিবালোকে। আমরা আইনের ভিতরে থেকে যা ঘটেছে সে বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছি। অভিযুক্ত আসামির বিরুদ্ধে ভিকটিম বাদী হয়ে যে মামলা দিয়েছে আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে সে মামলা রুজু করে আদালতে প্রেরণ করেছি।

তিনি আরও বলেন, ভুক্তভোগী পরিবার বা বিবাদী পক্ষ তাদের অধিকার আছে সংবাদ সম্মেলন করে তারা তাদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করছে। মামলাটি তদন্তাধীন, প্রকৃত ঘটনা এই তদন্তের মাধ্যমে বের হয়ে আসবে।

এদিকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২৯ এপ্রিল রাতেই ফয়সাল আহমেদ দুর্জয়কে ছাত্রদলের পদ থেকে বহিস্কার করা হয়।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৪:৪৫:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫
Translate »

ধর্ষণ মামলায় সদ্য বহিস্কৃত ছাত্রদল নেতা কারাগারে,বানোয়াট-সাজানো-পরিকল্পিত ঘটনা দাবি পরিবারের

আপডেট : ০৪:৪৫:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫

 

 

নেত্রকোণার দুর্গাপুরে বিরিশিরি রিসোর্টে ১৯ বছর বয়সী তরুণীকে ধর্ষণ মামলার আসামি উপজেলা ছাত্রদলের সদ্য বহিস্কৃত যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. ফয়সাল আহমেদ দুর্জয় বর্তমানে কারাগারে আছেন।

গত ২৯ এপ্রিল এ ঘটনায় দুর্গাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন ওই তরুণী। পরের দিন ৩০ এপ্রিল দুর্জয়কে জেলা আদালতে প্রেরণ করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন।

এই ধর্ষণ ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, সাজানো ও পরিকল্পিত ঘটনা উল্লেখ করে দুর্জয়ের মা মোছা. খাদিজা আক্তার নিজের ছেলেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১ মে) সন্ধ্যায় দুর্গাপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন,”আমার পুত্র মো. ফয়সাল আহমেদ দুর্জয় একজন সহজ সরল, নম্রভদ্র স্বভাবের মানুষ। সে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাথে জড়িত থেকে সুনামের সাথে রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। কোন সময়ই সে কোন ধরণের অসামাজিক এবং সামাজিক বিশৃঙ্খলার সাথে জড়িত ছিল না। কিছুদিন ধরে তাকে বিভিন্নভাবে মান-সম্মান নষ্ট করার জন্য বা সামাজিকভাবে হেস্তনেস্ত করার জন্য কতিপয় ব্যক্তি, বন্ধু দাবী করে তার সাথে মেলামেশা করে আসছিলো যা আমার পুত্র বুঝে উঠতে পারেনি।”

তিনি আরও বলেন,”সম্প্রতি আমার পুত্রকে জড়িয়ে ধর্ষণ কার্যক্রমের যে নাটক সাজিয়ে মামলায় জড়িয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, সাজানো এবং পরিকল্পিত ঘটনা। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। মূলত যে নারী আমার পুত্র দুর্জয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে সে প্রকৃতপক্ষে একজন দুশ্চরিত্রা মেয়ে ও একজন কলগার্ল। এই খবরও আমরা জেনেছি। এই মেয়েটি অর্থাৎ প্রমি আক্তার এটাই তার চরিত্র ও ব্যবসা। সে মেয়েটি ও মুন্না মিয়া উভয়েই সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ এর সক্রিয় কর্মী। সম্প্রতি নাটকীয় ঘটনার পর ওই মেয়ে অর্থাৎ প্রমি আক্তারের অসামাজিক এবং কু-কর্মের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) প্রকাশ পেয়েছে। যা সকলেই অবগত আছেন। এতেই প্রমাণিত হয় এই মেয়েটি কলগার্ল।”

দুর্গাপুর থানার ওসিকে দোষারোপ করে মোছা. খাদিজা আক্তার লিখিত বক্তব্যে বলেন,”মামলার বাদী প্রমি আক্তারের জবানবন্দি অনুযায়ী আপনারা (সাংবাদিকবৃন্দ) মামলার এফআইআরটি পড়লে বুঝতে পারবেন যে, গত ২৮ এপ্রিল থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত মুন্নার সাথে রিসোর্টে অবস্থান করে আসছে। স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে গেলে দুর্গাপুর থানার ওসি মাহমুদুল হাসান রিসোর্টে গিয়ে তাদেরকে থানায় নিয়ে আসে এবং প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে উৎকোচের বিনিময়ে ছাত্রলীগ কর্মী মুন্নাকে বাঁচানোর জন্য আমার ছেলেকে ফাঁসিয়ে দেয়। প্রকৃত ধর্ষণকারী মুন্নাকে দুর্গাপুর থানার গত বছরের ২২ নভেম্বর তারিখের পুরাতন একটি মামলায় গ্রেফতার দেখায়। উৎকোচের বিনিময়ে ওসি মাহমুদুল হাসানের সহযোগিতায় ধর্ষণ নাটকটি মঞ্চায়িত হয়েছে। সেজন্যই ছাত্রলীগ নেতা ও প্রকৃত ধর্ষণকারী মুন্নাকে রক্ষা করে ছাত্রদল নেতা ফয়সাল আহমেদ দুর্জয়কে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।”

দুর্জয়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তাকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জোর দাবী জানান মোছা. খাদিজা আক্তার।

সংবাদ সম্মেলনে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে প্রকাশ্য দিবালোকে। আমরা আইনের ভিতরে থেকে যা ঘটেছে সে বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছি। অভিযুক্ত আসামির বিরুদ্ধে ভিকটিম বাদী হয়ে যে মামলা দিয়েছে আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে সে মামলা রুজু করে আদালতে প্রেরণ করেছি।

তিনি আরও বলেন, ভুক্তভোগী পরিবার বা বিবাদী পক্ষ তাদের অধিকার আছে সংবাদ সম্মেলন করে তারা তাদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করছে। মামলাটি তদন্তাধীন, প্রকৃত ঘটনা এই তদন্তের মাধ্যমে বের হয়ে আসবে।

এদিকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২৯ এপ্রিল রাতেই ফয়সাল আহমেদ দুর্জয়কে ছাত্রদলের পদ থেকে বহিস্কার করা হয়।