London ১১:১৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
মেডিকেল ক্যাম্প–রক্তদানে ব্যতিক্রমী আয়োজন, পালিত হলো প্রেসক্লাব আলফাডাঙ্গার ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী দিনব্যাপী সেবামূলক কার্যক্রমে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ পটুয়াখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন ভাই আজাদসহ দুই স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা কালিয়াকৈরে সড়ক দুর্ঘটনায় ট্রাকচালক নিহত রাজশাহীতে চলছে ট্রাফিক সপ্তাহ ২০২৫ কালিয়াকৈর ৫ নং ওয়ার্ড পৌর বি এন পির নির্বাচনী প্রস্তুতি সভা ও মতবিনিময় বিক্ষোভ সমাবেশে ক্ষোভের বিস্ফোরণ: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রহসনমূলক রায়ের প্রতিবাদে লন্ডনে প্রবাসীদের গণজমায়েত রাজশাহীতে চলছে উদ্যোক্তা মেলা গাজীপুর-১ আসন কালিয়াকৈরে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর শীতার্ত মানুষের কষ্ট লাঘবে নানিয়ারচর জোন (১৭ই বেংগল) এর উদ্যোগে বিনামূল্যে শীতবস্ত্র বিতরণ সিরাজগঞ্জ সততা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির পক্ষ থেকে নবনির্বাচিত পরিচালক হাজী মোঃ আব্দুস সাত্তারকে সংবর্ধনা

দুনিয়া ও আখেরাতের যে ৪ নেয়ামত চেয়েছিলেন ইবরাহিম (আ.)

অনলাইন ডেস্ক:

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলার নবি ও খলিল হজরত ইবরাহিমের (আ.) অনেক দোয়া বর্ণিত হয়েছে। এর মধ্যে একটি দোয়ায় ইবরাহিম (আ.) দুনিয়া ও আখেরাতের ৪টি নেয়ামত চেয়েছিলেন; ১. দুনিয়ার জীবনে জ্ঞান ও প্রজ্ঞা। ২. দুনিয়া ও আখেরাতে আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের সঙ্গী হওয়ার তওফিক। ৩. মৃত্যুর পরে দুনিয়ার মানুষের মধ্যে সুনাম ও সুখ্যাতি। অর্থাৎ দুনিয়ায় এমন নেক জীবনে যাপনের তওফিক যেন পরবর্তী কালের মানুষ তাকে স্মরণ করে ও তার প্রশংসা করে। ৪. আখেরাতে জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও জান্নাত লাভ।

দোয়াটি হলো,

رَبِّ هَبْ لِي حُكْمًا وَأَلْحِقْنِي بِالصَّالِحِينَ وَاجْعَل لِّي لِسَانَ صِدْقٍ فِي الْآخِرِينَ وَاجْعَلْنِي مِن وَرَثَةِ جَنَّةِ النَّعِيمِ

উচ্চারণ: রাব্বি হাবলি হুক্‌মাও ওয়া আল হিক্বনি বিস্‌সালিহিন ওয়াজ’আল্লি লিসানা সিদিকিন ফিল্ আখিরীন ওয়াজ’আলনী মিওঁ ওয়ারাছাতি জান্নাতিন্ না’ঈম।

হে আমার রব, আমাকে প্রজ্ঞা দান করুন এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের সাথে শামিল করুন। পরবর্তীদের মধ্যে আমার সুনাম-সুখ্যাতি অব্যাহত রাখুন আর আমাকে সুখময় জান্নাতের অধিকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন। (সুরা শুআরা: ৮৩-৮৫)

বান্দা আল্লাহ তাআলার কাছে তার দুনিয়া ও আখেরাতের যত নেয়ামত চেয়ে থাকে বা চাইতে পারে, এ নেয়ামতগুলো নিঃসন্দেহে সেগুলোর মধ্যে সর্বোত্তম। এ নেয়ামতগুলো লাভ করতে আল্লাহর নবি ইবরাহিমকে (আ.) অনুসরণ করে আমরাও এ দোয়াটি বেশি বেশি পড়তে পারি।

ইবরাহিম (আ.) আল্লাহর নবি এবং তার অত্যন্ত নেক ও প্রিয় একজন বান্দা। তার ইমানের দৃঢ়তা, আল্লাহমুখিতা, একনিষ্ঠতা ছিল অতুলনীয়। তাকে আবুল আম্বিয়া বা নবিদের পিতা বলা হয়। আল্লাহ তাআলা তার বংশের বহু সংখ্যাক ব্যক্তিকে নবুয়্যত দিয়ে সম্মানিত করেছেন। আল্লাহর শেষ নবি হজরত মুহাম্মাদও (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম) তার বংশধর।

কোরআনে আল্লাহ তাআলা নবি ইবরাহিমের (আ.) আনুগত্য ও একনিষ্ঠতার প্রশংসা করেছেন এবং নবিজিকে নির্দেশ দিয়েছেন তার মিল্লাত বা মতাদর্শ অনুসরণ করতে। আল্লাহ তাআলা বলেন,

إِنَّ إِبْرَاهِيمَ كَانَ أُمَّةً قَانِتًا لِلَّهِ حَنِيفًا وَلَمْ يَكُ مِنَ الْمُشْرِكِينَ شَاكِرًا لِأَنْعُمِهِ اجْتَبَاهُ وَهَدَاهُ إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ وَآتَيْنَاهُ فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَإِنَّهُ فِي الْآخِرَةِ لَمِنَ الصَّالِحِينَ ثُمَّ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ أَنِ اتَّبِعْ مِلَّةَ إِبْرَاهِيمَ حَنِيفًا

নিশ্চয় ইবরাহিম ছিলেন এক উম্মত, আল্লাহর একান্ত অনুগত ও একনিষ্ঠ। তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন না। তিনি ছিলেন আল্লাহর অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞ; আল্লাহ তাকে মনোনীত করেছিলেন এবং তাকে পরিচালিত করেছিলেন সঠিক পথে। আমি তাকে দুনিয়াতে কল্যাণ দান করেছিলাম, আর আখেরাতেও তিনি অবশ্যই সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত। তোমার প্রতি ওহি করছি যে, তুমি একনিষ্ঠ ইবরাহিমের মতাদর্শ অনুসরণ কর। (সুরা নাহল: ২০-২৪)

কোরআনের বহু আয়াতে তার নাম এসেছে। কোরআনে একটি সুরাও রয়েছে তার নামে। কাবা নির্মাণ, ছেলেকে কোরবানি করতে নিয়ে যাওয়া, নমরুদের সাথে বিতর্ক, তার জন্য আগুন আরামদায়ক হয়ে যাওয়া ইত্যাদি তার জীবনের বহু ঘটনা কোরআনে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা তার মতো দৃঢ় ইমান ও উত্তম আমল আমাদের দান করুন, আমাদের দুনিয়া ও আখেরাতের জীবন কল্যাণময় করুন। আমিন!

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৬:৫৪:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫
১৮৭
Translate »

দুনিয়া ও আখেরাতের যে ৪ নেয়ামত চেয়েছিলেন ইবরাহিম (আ.)

আপডেট : ০৬:৫৪:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলার নবি ও খলিল হজরত ইবরাহিমের (আ.) অনেক দোয়া বর্ণিত হয়েছে। এর মধ্যে একটি দোয়ায় ইবরাহিম (আ.) দুনিয়া ও আখেরাতের ৪টি নেয়ামত চেয়েছিলেন; ১. দুনিয়ার জীবনে জ্ঞান ও প্রজ্ঞা। ২. দুনিয়া ও আখেরাতে আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের সঙ্গী হওয়ার তওফিক। ৩. মৃত্যুর পরে দুনিয়ার মানুষের মধ্যে সুনাম ও সুখ্যাতি। অর্থাৎ দুনিয়ায় এমন নেক জীবনে যাপনের তওফিক যেন পরবর্তী কালের মানুষ তাকে স্মরণ করে ও তার প্রশংসা করে। ৪. আখেরাতে জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও জান্নাত লাভ।

দোয়াটি হলো,

رَبِّ هَبْ لِي حُكْمًا وَأَلْحِقْنِي بِالصَّالِحِينَ وَاجْعَل لِّي لِسَانَ صِدْقٍ فِي الْآخِرِينَ وَاجْعَلْنِي مِن وَرَثَةِ جَنَّةِ النَّعِيمِ

উচ্চারণ: রাব্বি হাবলি হুক্‌মাও ওয়া আল হিক্বনি বিস্‌সালিহিন ওয়াজ’আল্লি লিসানা সিদিকিন ফিল্ আখিরীন ওয়াজ’আলনী মিওঁ ওয়ারাছাতি জান্নাতিন্ না’ঈম।

হে আমার রব, আমাকে প্রজ্ঞা দান করুন এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের সাথে শামিল করুন। পরবর্তীদের মধ্যে আমার সুনাম-সুখ্যাতি অব্যাহত রাখুন আর আমাকে সুখময় জান্নাতের অধিকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন। (সুরা শুআরা: ৮৩-৮৫)

বান্দা আল্লাহ তাআলার কাছে তার দুনিয়া ও আখেরাতের যত নেয়ামত চেয়ে থাকে বা চাইতে পারে, এ নেয়ামতগুলো নিঃসন্দেহে সেগুলোর মধ্যে সর্বোত্তম। এ নেয়ামতগুলো লাভ করতে আল্লাহর নবি ইবরাহিমকে (আ.) অনুসরণ করে আমরাও এ দোয়াটি বেশি বেশি পড়তে পারি।

ইবরাহিম (আ.) আল্লাহর নবি এবং তার অত্যন্ত নেক ও প্রিয় একজন বান্দা। তার ইমানের দৃঢ়তা, আল্লাহমুখিতা, একনিষ্ঠতা ছিল অতুলনীয়। তাকে আবুল আম্বিয়া বা নবিদের পিতা বলা হয়। আল্লাহ তাআলা তার বংশের বহু সংখ্যাক ব্যক্তিকে নবুয়্যত দিয়ে সম্মানিত করেছেন। আল্লাহর শেষ নবি হজরত মুহাম্মাদও (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম) তার বংশধর।

কোরআনে আল্লাহ তাআলা নবি ইবরাহিমের (আ.) আনুগত্য ও একনিষ্ঠতার প্রশংসা করেছেন এবং নবিজিকে নির্দেশ দিয়েছেন তার মিল্লাত বা মতাদর্শ অনুসরণ করতে। আল্লাহ তাআলা বলেন,

إِنَّ إِبْرَاهِيمَ كَانَ أُمَّةً قَانِتًا لِلَّهِ حَنِيفًا وَلَمْ يَكُ مِنَ الْمُشْرِكِينَ شَاكِرًا لِأَنْعُمِهِ اجْتَبَاهُ وَهَدَاهُ إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ وَآتَيْنَاهُ فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَإِنَّهُ فِي الْآخِرَةِ لَمِنَ الصَّالِحِينَ ثُمَّ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ أَنِ اتَّبِعْ مِلَّةَ إِبْرَاهِيمَ حَنِيفًا

নিশ্চয় ইবরাহিম ছিলেন এক উম্মত, আল্লাহর একান্ত অনুগত ও একনিষ্ঠ। তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন না। তিনি ছিলেন আল্লাহর অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞ; আল্লাহ তাকে মনোনীত করেছিলেন এবং তাকে পরিচালিত করেছিলেন সঠিক পথে। আমি তাকে দুনিয়াতে কল্যাণ দান করেছিলাম, আর আখেরাতেও তিনি অবশ্যই সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত। তোমার প্রতি ওহি করছি যে, তুমি একনিষ্ঠ ইবরাহিমের মতাদর্শ অনুসরণ কর। (সুরা নাহল: ২০-২৪)

কোরআনের বহু আয়াতে তার নাম এসেছে। কোরআনে একটি সুরাও রয়েছে তার নামে। কাবা নির্মাণ, ছেলেকে কোরবানি করতে নিয়ে যাওয়া, নমরুদের সাথে বিতর্ক, তার জন্য আগুন আরামদায়ক হয়ে যাওয়া ইত্যাদি তার জীবনের বহু ঘটনা কোরআনে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা তার মতো দৃঢ় ইমান ও উত্তম আমল আমাদের দান করুন, আমাদের দুনিয়া ও আখেরাতের জীবন কল্যাণময় করুন। আমিন!