London ০৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
সারা দেশে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের মহাসমাবেশ আজ আরও ৫২ ফিলিস্তিনি নিহত গাজায় আক্রমণ আরও জোরদারের নির্দেশ নেতানিয়াহুর ইউক্রেনে সোমবার পর্যন্ত ‘ইস্টার যুদ্ধবিরতি’ ঘোষণা পুতিনের পেঁয়াজ-সয়াবিন তেলের দামে বাজারে অস্বস্তি সোনার দামে নতুন রেকর্ড নাহিদ ইসলাম এক দলকে সরিয়ে আরেক দলকে ক্ষমতায় বসাতে অভ্যুত্থান হয়নি শ্যামনগরে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে তিনজন গুরুতর আহত, কিশোরের অবস্থা আশঙ্কাজনক মনগড়া লোডশেডিংয়ে, চরম বিপাকে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা সাংবাদিক আরিফুলের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও হুমকির প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন কালকিনিতে মুক্তিযোদ্ধা দলের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

দুই আন্দোলনে বিভাজন কেন, প্রশ্ন রিজভীর

অনলাইন ডেস্ক

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন এবং জুলাই-অগাস্টের আন্দোলনের মধ্যে ‘বিভাজনরেখা তৈরি করছে’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার (১৭ মার্চ) নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে তিনি বলেন, “জুলাই-অগাস্টের যে চূড়ান্ত আন্দোলন, এটা তো বিএনপির নেতৃত্বে ১৫ বছরের যে আন্দোলন করেছেন, তার চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ। এই ১৫ বছরের মধ্যে ইলিয়াস নেই, চৌধুরী আলম নেই, সুমন নেই, … অদৃশ্য করা হয়েছে।

কারণ এরা সোচ্চার ছিল অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন এবং ফ্যাসিবাদ থেকে বাংলাদেশের মুক্তির জন্য। এই কারণে ওরা জীবন দিয়েছে, যার একটা চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ দেখলাম শিশু-তরুণ-কিশোররা জুলাই-অগাস্টে জীবন দিয়ে শেখ হাসিনাকে বিদায় করেছে।

রিজভী বলেন, আমি উপদেষ্টা সাহেবদের বলব, আপনারা এই ১৫ বছর ১৬ বছরের আন্দোলন আর জুলাই-অগাস্ট আন্দোলনের মধ্যে বিভাজন রেখা তৈরি করছেন কেন? এটা তো সব রক্তস্রোত একই সমুদ্রের মোহনায় গিয়ে মিলিত হয়েছে এবং মোহনার এই মিলিত স্রোতেই শেখ হাসিনা আজকে পালিয়ে গেছে।

আপনাদেরকে (উপদেষ্টা) বলব, আপনারা যে কয়দিন আছেন, মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করুন। এখন তো মিনিকেট চালের কেজি ৮৫ টাকা, এদিকে আপনারা নজর দিন। পাইজাম আর স্বর্ণা চাল, একেবারে মোটা চাল, সেটার দাম ৫৬/৫৭ টাকা, বিআর-২৮ সেটার দাম ৬২/৬৫ টাকা। এগুলোর দিকে নজর দিন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের উদ্দেশে এই বিএনপি নেতা বলেন, মুহাম্মদ ইউনূস, আপনি প্রধান উপদেষ্টা। মানুষের বিশ্বাস আপনার ওপর। আমরা চাই, আপনার হাত দিয়ে একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত হবে।

আপনি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন, এই ধরনের গভীর বিশ্বাস জনগণের। কিন্তু যদি গড়িমসি হয়, তাহলে তো ভিন্ন মাত্রা নেবে।

‘ছাত্রদের কী সবক দিচ্ছেন?’

রিজভী বলেন, এক উপদেষ্টা ছাত্রদের বলেছেন, ‘তোমরা যেভাবে চালাচ্ছ আমাদেরকে, এভাবে পাঁচ বছর চললে পরে দেশ আরও সুন্দর হবে।’ তার মানে নির্বাচনের দরকার নাই। গণতন্ত্রের আরও যে নিশ্চয়তাগুলো আছে– আইনের শাসন, ন্যায়বিচার এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা- এগুলো তো গণতন্ত্রের উপাদান। এগুলো কি শেষ হয়ে যাবে?

আমি সেই উপদেষ্টাকে বলতে চাই, এটার জন্যই তো লড়াই।কী সবক দিচ্ছেন? তাদেরকে তো ফ্যাসিবাদ অথবা ডিকটেটরশিপের প্রলোভন আপনারা দেখাচ্ছেন। এটা তো ঠিক নয়।

সারাদেশে ধর্ষণকারীদের বিচারের দাবিতে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে নয়া পল্টনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল নয়া পল্টন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

রিজভী বলেন, আজকে যে জনপদের পর জনপদে যে অসন্তোষ পরিস্থিতি তৈরি হয়ে আছে, সেটা শেখ হাসিনার দুঃশাসনের ফসল। এই দুঃশাসনের বিকৃত ফসলের মূল উৎপাটন করে আমাদের সমাজকে পবিত্র সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

সেই ক্ষেত্রে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল একটি অগ্রগণ্য রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে কাজ করবে এই প্রত্যাশা আমি করছি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, আপনারা দেখেছেন, গত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে একের পর এক নারীরা ধর্ষণের শিকার হয়েছে; যারা ধর্ষণকারী তাদের কোনো বিচার হয়নি, এমনকি হত্যাকারী যারা, তাদের কোনো বিচার হয়নি।

কারণ যারা গুম-খুন-হত্যা করেছিল, তারাই কিন্তু সেই সময়ে রক্ষক হিসেবে অন্যদেরকে দিয়ে কাজগুলো করাত।আজকে আমরা এমন একজনের কাছে দায়িত্ব তুলে দিয়েছি, যাকে আমরা মনে করি শান্তির প্রতীক। ড. ইউনূস, তার কাছে আশা করছি আমাদের দেশ নিরাপদে থাকবে, আমাদের মা-বোনেরা নিরাপদে থাকবে, সবাই মুক্ত স্বাধীন কথা বলতে পারবে।

মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সঞ্চালনায় সমাবেশে হেলেন জেরিন খান, জেবা খানসহ মহিলা দলের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১০:২১:১৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫
১৬
Translate »

দুই আন্দোলনে বিভাজন কেন, প্রশ্ন রিজভীর

আপডেট : ১০:২১:১৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন এবং জুলাই-অগাস্টের আন্দোলনের মধ্যে ‘বিভাজনরেখা তৈরি করছে’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার (১৭ মার্চ) নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে তিনি বলেন, “জুলাই-অগাস্টের যে চূড়ান্ত আন্দোলন, এটা তো বিএনপির নেতৃত্বে ১৫ বছরের যে আন্দোলন করেছেন, তার চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ। এই ১৫ বছরের মধ্যে ইলিয়াস নেই, চৌধুরী আলম নেই, সুমন নেই, … অদৃশ্য করা হয়েছে।

কারণ এরা সোচ্চার ছিল অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন এবং ফ্যাসিবাদ থেকে বাংলাদেশের মুক্তির জন্য। এই কারণে ওরা জীবন দিয়েছে, যার একটা চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ দেখলাম শিশু-তরুণ-কিশোররা জুলাই-অগাস্টে জীবন দিয়ে শেখ হাসিনাকে বিদায় করেছে।

রিজভী বলেন, আমি উপদেষ্টা সাহেবদের বলব, আপনারা এই ১৫ বছর ১৬ বছরের আন্দোলন আর জুলাই-অগাস্ট আন্দোলনের মধ্যে বিভাজন রেখা তৈরি করছেন কেন? এটা তো সব রক্তস্রোত একই সমুদ্রের মোহনায় গিয়ে মিলিত হয়েছে এবং মোহনার এই মিলিত স্রোতেই শেখ হাসিনা আজকে পালিয়ে গেছে।

আপনাদেরকে (উপদেষ্টা) বলব, আপনারা যে কয়দিন আছেন, মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করুন। এখন তো মিনিকেট চালের কেজি ৮৫ টাকা, এদিকে আপনারা নজর দিন। পাইজাম আর স্বর্ণা চাল, একেবারে মোটা চাল, সেটার দাম ৫৬/৫৭ টাকা, বিআর-২৮ সেটার দাম ৬২/৬৫ টাকা। এগুলোর দিকে নজর দিন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের উদ্দেশে এই বিএনপি নেতা বলেন, মুহাম্মদ ইউনূস, আপনি প্রধান উপদেষ্টা। মানুষের বিশ্বাস আপনার ওপর। আমরা চাই, আপনার হাত দিয়ে একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত হবে।

আপনি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন, এই ধরনের গভীর বিশ্বাস জনগণের। কিন্তু যদি গড়িমসি হয়, তাহলে তো ভিন্ন মাত্রা নেবে।

‘ছাত্রদের কী সবক দিচ্ছেন?’

রিজভী বলেন, এক উপদেষ্টা ছাত্রদের বলেছেন, ‘তোমরা যেভাবে চালাচ্ছ আমাদেরকে, এভাবে পাঁচ বছর চললে পরে দেশ আরও সুন্দর হবে।’ তার মানে নির্বাচনের দরকার নাই। গণতন্ত্রের আরও যে নিশ্চয়তাগুলো আছে– আইনের শাসন, ন্যায়বিচার এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা- এগুলো তো গণতন্ত্রের উপাদান। এগুলো কি শেষ হয়ে যাবে?

আমি সেই উপদেষ্টাকে বলতে চাই, এটার জন্যই তো লড়াই।কী সবক দিচ্ছেন? তাদেরকে তো ফ্যাসিবাদ অথবা ডিকটেটরশিপের প্রলোভন আপনারা দেখাচ্ছেন। এটা তো ঠিক নয়।

সারাদেশে ধর্ষণকারীদের বিচারের দাবিতে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে নয়া পল্টনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল নয়া পল্টন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

রিজভী বলেন, আজকে যে জনপদের পর জনপদে যে অসন্তোষ পরিস্থিতি তৈরি হয়ে আছে, সেটা শেখ হাসিনার দুঃশাসনের ফসল। এই দুঃশাসনের বিকৃত ফসলের মূল উৎপাটন করে আমাদের সমাজকে পবিত্র সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

সেই ক্ষেত্রে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল একটি অগ্রগণ্য রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে কাজ করবে এই প্রত্যাশা আমি করছি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, আপনারা দেখেছেন, গত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে একের পর এক নারীরা ধর্ষণের শিকার হয়েছে; যারা ধর্ষণকারী তাদের কোনো বিচার হয়নি, এমনকি হত্যাকারী যারা, তাদের কোনো বিচার হয়নি।

কারণ যারা গুম-খুন-হত্যা করেছিল, তারাই কিন্তু সেই সময়ে রক্ষক হিসেবে অন্যদেরকে দিয়ে কাজগুলো করাত।আজকে আমরা এমন একজনের কাছে দায়িত্ব তুলে দিয়েছি, যাকে আমরা মনে করি শান্তির প্রতীক। ড. ইউনূস, তার কাছে আশা করছি আমাদের দেশ নিরাপদে থাকবে, আমাদের মা-বোনেরা নিরাপদে থাকবে, সবাই মুক্ত স্বাধীন কথা বলতে পারবে।

মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সঞ্চালনায় সমাবেশে হেলেন জেরিন খান, জেবা খানসহ মহিলা দলের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।