দীর্ঘ তিন মাস বিরতির পর কক্সবাজারে টেকনাফের নাফ নদী সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অভ্যন্তর থেকে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে এসেছে। এতে ভূকম্পনের আদলে কেঁপে উঠেছে বসত ঘরসহ নানা স্থাপনা। এ নিয়ে টেকনাফ উপজেলা সদর সহ আশপাশের সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) রাত সাড়ে ১১টার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজির পাড়া সীমান্তের ঠিক ওপারে মিয়ানমার অভ্যন্তর থেকে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে বলে জানান স্থানীয় ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য এনামুল হক।
তিনি জানান, অন্তত তিন মাস বিরতির পর সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অভ্যন্তর থেকে আবারও বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে এসেছে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিকট বিস্ফোরণের প্রথম শব্দটি শোনার পর ৫ থেকে ১০ মিনিট পরই আরেকটি বিকট শব্দ শোনা যায়।
এর আগে, গত বছরের ৬ ডিসেম্বর সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অভ্যন্তরে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। এর দুইদিন পর ৮ ডিসেম্বর দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপসহ সীমান্তের পাশাপাশি অধিকাংশ এলাকায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার দাবি করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছিল। এরপর থেকে আর কোনো বিস্ফোরণের ঘটনায় সীমান্তের বিকট শব্দ শোনা যায়নি। সেই থেকে সীমান্তে অনেকটা যুদ্ধ বিরতির মত পরিস্থিতি বিরাজ করছিল।
স্থানীয় ইউপি সদস্য এনামুল হক বলেন, ‘টেকনাফের নাজিরপাড়া সীমান্তে নাফ নদীর ওপারে মিয়ানমারের মংডু টাউনের সুদাপাড়া ও নাপিতের ডেইল এলাকা। রাতে ওখান থেকেই আকস্মিক পরপর দুইটি বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এতে কেঁপে উঠেছে টেকনাফের বসত ঘরসহ নানা স্থাপনা। এ ঘটনায় কারও কারও বসত ঘরের দেওয়াল ও স্থাপনায় ফাঁটলও ধরেছে। এতে প্রথমে স্থানীয় লোকজন ভূমিকম্প বলে ধারণা করলেও পরে সকলেই বুঝতে পারেন এটি মিয়ানমারের বোমা হামলা। যার বিস্ফোরণের বিকট শব্দ এপারেও ভেসে এসেছে।’
আকস্মিক বিস্ফোরণের বিকট শব্দে নিরাপত্তা নিয়ে সীমান্তের বাসিন্দারা উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় রয়েছেন বলে জানান স্থানীয় এই ইউপি সদস্য।
এ নিয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘ঘটনার পরপর বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সীমান্তের টহল জোরদার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’