London ০৩:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
নাহিদ ইসলাম এক দলকে সরিয়ে আরেক দলকে ক্ষমতায় বসাতে অভ্যুত্থান হয়নি শ্যামনগরে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে তিনজন গুরুতর আহত, কিশোরের অবস্থা আশঙ্কাজনক মনগড়া লোডশেডিংয়ে, চরম বিপাকে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা সাংবাদিক আরিফুলের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও হুমকির প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন কালকিনিতে মুক্তিযোদ্ধা দলের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত ৮ অঞ্চলে বজ্রবৃষ্টির আভাস রোববার সারা দেশে মহাসমাবেশের ঘোষণা কারিগরি শিক্ষার্থীদের ইতিহাসের সর্বোত্তম নির্বাচন করবে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান উপদেষ্টা কাতার সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গী ৪ নারী খেলোয়াড় কালই বুঝতে পারবেন-কী করতে পারি

টিকা নেই, গাজায় পোলিওজনিত পঙ্গুত্বের ঝুঁকিতে ৬ লক্ষাধিক শিশু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

দ্বিতীয় দফায় সামরিক অভিযান শুরুর পর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় পোলিও টিকার চালান প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। এতে ফিলিস্তিনের এই ভূখণ্ডে বর্তমানে পোলিওজনিত পঙ্গুত্বের ঝুঁকিতে রয়েছে অন্তত ৬ লাখ ২ হাজার শিশু।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রোববার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী গাজার শিশুদের পরোক্ষভাবে টার্গেটে পরিণতা করছে। তারা গাজায় পোলিও টিকার চালান প্রবেশ করতে দিচ্ছে না।”

গাজা উপত্যকা উপত্যকা কার্যত বর্তমানে পোলিও টাইম বোমার ওপর আছে। যদি এখন এখানে কোনো শিশুর পোলিও হয়, তাহলে তা খুব অল্প সময়ের মধ্যে মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়বে। এই মুহূর্তে গাজায় পোলিওজনিত পঙ্গুত্বের ঝুঁকিতে আছে অন্তত ৬ লাখ ২ হাজার শিশু।”

“আন্তর্জাতিক বিশ্বের প্রতি অনুরোধ, ইসরায়েল যেন গাজায় পোলিও টিকার চালান প্রবেশ করতে দেয় এবং টিকাকর্মীদের ওপর হামলা না করে— সেজন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করুণ। আমরা পূর্ণ সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।”

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ। ওই বছর ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।

জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল। কিন্তু বিরতির দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ। দ্বিতীয় দফার এ অভিযানে গত ২০ দিনে গাজায় নিহত হয়েছেন ১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি।

ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ৫০ হাজার ৭ শতাধিক ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।

এদিকে যে ২৫১ জন জিম্মিকে হামাসের যোদ্ধারা ধরে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে এখনও অন্তত ৩৫ জন জীবিত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আইডিএফ ঘোষণা দিয়েছে যে সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করা হবে।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

তবে নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করা এই অভিযানের লক্ষ্য এবং লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে গাজায়।

সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১১:৫৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫
১২
Translate »

টিকা নেই, গাজায় পোলিওজনিত পঙ্গুত্বের ঝুঁকিতে ৬ লক্ষাধিক শিশু

আপডেট : ১১:৫৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫

দ্বিতীয় দফায় সামরিক অভিযান শুরুর পর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় পোলিও টিকার চালান প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। এতে ফিলিস্তিনের এই ভূখণ্ডে বর্তমানে পোলিওজনিত পঙ্গুত্বের ঝুঁকিতে রয়েছে অন্তত ৬ লাখ ২ হাজার শিশু।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রোববার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী গাজার শিশুদের পরোক্ষভাবে টার্গেটে পরিণতা করছে। তারা গাজায় পোলিও টিকার চালান প্রবেশ করতে দিচ্ছে না।”

গাজা উপত্যকা উপত্যকা কার্যত বর্তমানে পোলিও টাইম বোমার ওপর আছে। যদি এখন এখানে কোনো শিশুর পোলিও হয়, তাহলে তা খুব অল্প সময়ের মধ্যে মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়বে। এই মুহূর্তে গাজায় পোলিওজনিত পঙ্গুত্বের ঝুঁকিতে আছে অন্তত ৬ লাখ ২ হাজার শিশু।”

“আন্তর্জাতিক বিশ্বের প্রতি অনুরোধ, ইসরায়েল যেন গাজায় পোলিও টিকার চালান প্রবেশ করতে দেয় এবং টিকাকর্মীদের ওপর হামলা না করে— সেজন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করুণ। আমরা পূর্ণ সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।”

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ। ওই বছর ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।

জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল। কিন্তু বিরতির দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ। দ্বিতীয় দফার এ অভিযানে গত ২০ দিনে গাজায় নিহত হয়েছেন ১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি।

ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ৫০ হাজার ৭ শতাধিক ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।

এদিকে যে ২৫১ জন জিম্মিকে হামাসের যোদ্ধারা ধরে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে এখনও অন্তত ৩৫ জন জীবিত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আইডিএফ ঘোষণা দিয়েছে যে সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করা হবে।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

তবে নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করা এই অভিযানের লক্ষ্য এবং লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে গাজায়।

সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি