“জোনাকী” ঘরে আশার আলো, আশ্রয় পেলেন বিধবা শাহিনুর

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের বারাংকুলা মধ্যপাড়ায় নতুন ঘরে উঠেছেন এক অসহায় বিধবা নারী। স্বামীহারা জীবনের ছায়ায় ছায়ায় হেঁটে চলা শাহিনুর বেগম আজ আশ্রয় পেয়েছেন ‘জোনাকী’ নামক এক স্বপ্নের ঘরে।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে যায় শাহিনুরের বসতভিটা। সব কিছু হারিয়ে একমুঠো সন্তান নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন পথের ধারে। চার সন্তানের জননী শাহিনুর—তিন মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে ছিলেন চরম বিপদের মুখে।
সংবাদ পেয়ে ছুটে আসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রাসেল ইকবাল। ছাই হয়ে যাওয়া টিনের ঘরের ধ্বংসস্তূপের পাশে কান্নায় ভেঙে পড়া শাহিনুরকে দেখে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন—”আপনাকে আমি মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেব।”
প্রতিশ্রুতি বাস্তবে রূপ নিতে সময় লাগেনি। গত ১৫ মার্চ শুরু হয় ঘর নির্মাণের কাজ। আজ ৩০ এপ্রিল বুধবার, ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানিয়ে শাহিনুর বেগমের হাতে স্বপ্নের ঘরের চাবি তুলে দেন ইউএনও রাসেল ইকবাল।
ঘরের নাম দেওয়া হয়েছে “জোনাকী”—যেন অন্ধকার জীবনে একটু আলোর ঝিলিক।
ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) রায়হানুর রহমান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাগর হোসেন সৌকত ও স্থানীয় ইউপি সদস্য সোহেল ফকির।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থ বছরের টি.আর. (১মও ২য় পর্যায়ের) বরাদ্দ থেকে ২ লক্ষ টাকার একটি প্রকল্পের মাধ্যমে নির্মিত হয়েছে ঘরটি।
এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রাসেল ইকবাল বলেন, শাহিনুর বেগমের বসতঘরে আকষ্মিক অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ পেয়ে ছুটে গিয়ে দেখি, ঘরের সকল মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। তাঁদের বুকফাটা আর্তনাদ আর আহাজারি। শাহিনুরের ঘর পোড়া গল্পে আমরা যুক্ত হই সরকারি অর্থে নতুন ঘর নির্মাণের প্রতিশ্রুতি নিয়ে। তাঁর নতুন
“স্বপ্নের নাম দেই ‘জোনাকী’। সে আজ আপন আলোয় আলোকিত। ঘরটি শাহিনুরের স্বপ্ন হয়ে জোনাকীর মত মিটমিট করে জ্বলুক সেই প্রত্যাশা করি।”
সন্তানদের নিয়ে চোখে পানি ও মুখে হাসি নিয়ে শাহিনুর বলেন, “আমার জীবনটা যেন নতুন করে শুরু হলো। আল্লাহ ইউএনও স্যারকে ভালো রাখুন।