তারেক রহমানের যোগ্য উত্তরসূরি হওয়ার প্রশ্নে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্ব ও মূল্যবোধের গুরুত্ব
তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে একবার লেখা হয়েছিল, "তারেক রহমান কি জিয়ার যোগ্য উত্তরসূরি হতে পারবেন?" এই প্রশ্নের মাধ্যমেই উঠে আসে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন—একজন যোগ্য উত্তরসূরি হতে কী কী গুণ থাকা প্রয়োজন?
জার্মানির মতো দেশগুলোতে ট্রেনে ভ্রমণকালে বই পড়া একটি সাধারণ দৃশ্য। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এমন দৃশ্য বিরল, এমনকি বিমানে ভ্রমণের সময়ও। দেশের রাজনীতিবিদদের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাসও চোখে পড়ে না। তবে জিয়াউর রহমান ছিলেন ব্যতিক্রম। তাঁর প্রতিটি মুহূর্ত—গাড়িতে যাত্রার সময়ও—বই পড়ায় নিবেদিত থাকত।
জিয়াউর রহমানের ব্যক্তিগত জীবন ও নীতির গল্পগুলো তাঁর সাদাসিধে চরিত্রকে তুলে ধরে। যেমন, তাঁর শ্বশুরের পরিচয় না জানার কারণে একজন সামরিক কর্মকর্তার পোস্টিং প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার গুঞ্জন ছিল। কিন্তু তাঁর যোগ্যতাকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়। আবার, আত্মীয়স্বজনদের মাধ্যমে তদবিরের প্রচেষ্টায় তিনি অসন্তুষ্ট হতেন এবং এমন ঘটনাকে কঠোরভাবে নাকচ করতেন।
দেশের মানুষের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপনে তিনি ছিলেন নিবেদিত। মাওলানা ভাসানীর মতোই তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে মানুষের কথা শুনতেন। প্রটোকল ভেঙে সাধারণ মানুষ তাঁর সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে পারত। আজকের রাজনীতিতে এই মানসিকতা প্রায় অনুপস্থিত।
জিয়াউর রহমানের সমালোচনামূলক দিকগুলো নিয়েও কথা হয়েছে, বিশেষত ৪,৫০০ সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করার অভিযোগ। তবে ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাত্র ৮৮টি মামলা দায়ের হয়েছিল। অনেক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্যে আইনানুগ প্রক্রিয়া মেনেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
তাঁর পরিকল্পনার ফলাফল আজও বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অর্থনীতিতে দৃশ্যমান। খালখনন প্রকল্প বা জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের প্রচার—এই সব উদ্যোগ তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্বের সাক্ষী। তাঁর সময় তরুণ মেধাবীদের দিয়ে রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়টি আজও প্রাসঙ্গিক।
জিয়াউর রহমানের সাদাসিধে জীবনযাপন, সৎ নীতি, এবং দেশপ্রেম তাঁকে জনগণের হৃদয়ে জায়গা করে দিয়েছিল। তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়ার অনেক কিছুই আছে, যা শুধু তাঁর উত্তরসূরিদের জন্য নয়, বরং পুরো জাতির জন্য প্রাসঙ্গিক।