জারুল-সোনালুতে বিমোহিত পথচারী

গ্রীষ্মের খরতাপে প্রকৃতি যখন রুক্ষ; তখন পাহাড়ের পথে পথে ফুলের পরশ। সোনালু-জারুল মোহনীয় রূপে চোখ জুড়াচ্ছে পিচঢালা পথে। নানা রকম নয়নাভিরাম ফুলে মুগ্ধ মানুষ। প্রতিদিন অগণিত মানুষকে অভ্যর্থনা জানাতে দাঁড়িয়ে আছে দেশের লাইফ লাইন খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। পাঁপড়ির কোমলতা, দৃষ্টিনন্দন বর্ণচ্ছটা নিয়ে প্রকৃতিকে আরও সুন্দর করে সাজিয়ে তুলেছে। পথিক থমকে দাঁড়িয়ে উপভোগ করছেন জারুল ও সোনালুর বেগুনি-হলুদ রঙের আভা।
সরেজমিনে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাইয়ের উত্তর সোনাপাহাড় থেকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারি পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার এলাকায় সড়ক বিভাজকে বাতাসে দোল খাচ্ছে জারুল ও সোনালু। দুচোখের দৃষ্টি যতদূর যাবে, যেন ফুলের মাঝে আটকে আছে। গাড়িতে করে যাওয়া-আসার পথে অন্যরকম অনুভূতি। মাঝে মাঝে মনে হবে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি নাকি পর্যটন স্পট দিয়ে যাচ্ছি। এই অপরূপ দৃশ্য দেখে বোঝার উপায় নেই।
নৈসর্গিক অঙ্গণে ঝাড়লণ্ঠনের মতো পুষ্পগুচ্ছ-রূপের পসরা সাজিয়ে বসেছে এ দুটি বৃক্ষ। জারুল গাছে বেগুনি রঙের ফুলের বন্যা। চার লেন সড়কের মাঝে জারুল-সোনালুর সৌন্দর্য দেখে মনটাও প্রাণবন্ত হয়ে যায়। এ যেন গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে এক টুকরো রঙিন হিমেল হাওয়া।
ব্যাংকার ইকবাল হাসান রাজু বলেন, ‘প্রতিদিনের পথচলার ক্লান্তি মুছে দেয় এই ফুল। এ যেন এক চমৎকার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা। যাত্রী কিংবা চালক কেউই এ সৌন্দর্যের কাছে নিজেকে না-আটকে থাকতে পারেন না।’
চাকরিজীবী রনি ভৌমিক বলেন, ‘কাজে যাওয়ার পথে এই ফুলের সৌন্দর্য দেখলেই মনটা খুশিতে ভরে যায়। কাজের চাপ ভুলে কিছুটা সময় প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকি।’
তরুণ উদ্যোক্তা ওমর শরীফ বলেন, ‘বৈশাখের এ সময়ে মহাসড়ক যেন অপরূপ রঙে সাজে। প্রতিদিন আসা-যাওয়ার পথে ফুল আর বৃক্ষরাজি দেখে খুব ভালো লাগে। মনটা ভরে যায়।’
মিরসরাই উপজেলার গাছবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা আকিল হোসেন বলেন, ‘সড়ক বিভাজকে ফুলগাছগুলো দেখতে অপূর্ব। তবে বেশি নজর কাড়ছে জারুল ও সোনালু। প্রতি বছর এদিনে সড়ক যেন ফুলে ফুলে সজ্জিত থাকে। অপরূপ দৃশ্য দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়।’
কবি ও কথাশিল্পী মাহমুদ নজরুল বলেন, ‘বৈশাখ মাসে গ্রামগঞ্জসহ রাস্তার ধারে জারুল ও সোনালু গাছ প্রকৃতিকে অপার সৌন্দর্যে ফুটিয়ে তুলেছে। চমৎকার এই ফুল সবারই নজর কাড়ছে প্রতিনিয়ত। বিশেষ করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মনোমুগ্ধকর এক আবেশ তৈরি হয়। প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্য দেখতে খুবই ভালো লাগে।’
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোসলেহ্ উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘সড়কের সৌন্দর্য বাড়াতে নানা রকম ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে। সড়কের পরিবেশ ও যাত্রীদের মনোরম অভিজ্ঞতা তৈরির জন্য এগুলোর নিয়মিত পরিচর্যা করা হয়।’