London ০৫:৩১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জবি শিক্ষার্থীর ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

অনলাইন ডেস্ক

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে জুতা পায়ে উঠতে না বলার সূত্র ধরে রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আকাশ আলী, তামান্না তাবাসসুম ও আবুল বাসারের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন ও ভাষা শহীদ রফিক ভবনের সামনে রসায়ন বিভাগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, আমরা জুলাই অভ্যুত্থানের পূর্বে ছাত্রলীগকে যেমন আচরণ করতে দেখেছি আজকে অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এসে দেখতে পারছি ছাত্রদল একই আচরণ করছে। পুনরায় কেউ যদি ফ্যাসিস্ট আচরণ করেন তাহলে পুনরায় ১৫ জুলাইয়ের ডাক দেওয়া হবে।

মানববন্ধনে রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আকরাম হোসেন বলেন, যদি এ ঘটনায় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আমরা প্রশাসন ও যে দলের  প্রশ্রয়ে এ ঘটনা ঘটেছে তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন গড়ে তুলব। সেই সঙ্গে আমরা ক্লাস বর্জনের ডাক দেব।

রসায়ন বিভাগের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তামান্না তাবাসসুম বলেন, গতকাল আমাদের ওপর হামলা হয়। আমরা প্রক্টরের কাছে গিয়েছিলাম, তারা আমাদের কোনো সহযোগিতা করে নাই। আমরা তাহলে কার কাছে যাবো? আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহান প্রামানিক বলেন, ১৫ জুলাই ঢাবিতে ছাত্রলীগকে বের করতে আধা ঘণ্টা লাগেনি। প্রয়োজনে ১৫ জুলাই আরেকটা হবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। আবার না হয় যুদ্ধ হবে, আমার মাটি শুদ্ধ হবে। আমরা আমার মাটিকে শুদ্ধ করেই ঘরে ফিরব।

জাস্টিস ফর জুলাইয়ের আহ্বায়ক সজিবুর রহমান বলেন, একটি সংগঠন বলেছে আমরা যেন তাদের ভুলভ্রান্তিগুলো ধরিয়ে দেই। কিন্তু সেই দলেরই একজন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হিউম্যান রাইটস সোসাইটি এর প্রোগ্রামে ভিন্ন একটি দলের ট্যাগ দিয়ে সেখানে অপ্রীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। সেই একই কর্মী গতকাল শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করলো। তার মানে সেই সংগঠনের ভুল ধরিয়ে দেওয়ার কথা গুলো শুধুই মেকি। আমরা এখনও দেখতে পারছি জুলাই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছাত্রলীগের কারও বিচার হয়নি। যার ফলে একটি দল মনে করছে তারাও তাদের কাজের বিচার হবে না।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হিউম্যান রাইটস সোসাইটি এর সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ মাসুদ বলেন, ছাত্রলীগ যেমন আচরণ করেছে, আমরা দেখতে পারছি ছাত্রদলও একই আচরণ করছে। আমরা এটা মোটেও আশা করি না। তাদের আমরা আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে দেখতে চাই। আমরা প্রশাসনের অবহেলা দেখতে পারছি এ ঘটনায়। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আলিম আরিফ বলেন, এক পলাতক ফ্যাসিস্ট হাসিনার দল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিক্রি করে হত্যা-ধর্ষণ করেছে। আমরা এক নব্য ফ্যাসিস্টদের দেখতে পাচ্ছি যারা জুলাইয়ের চেতনা বিক্রি করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে। আমরা আপনাদের অনুরোধ করবো শিক্ষার্থীদের পালস বুঝে রাজনীতি করেন। আমরা প্রশাসনকে বলবো, তারা যেন এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. তাজাম্মুল হক বলেন, সকালে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট ছয় সদস্যের কমিটিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গতকাল বুধবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মার্কেটিং বিভাগের দুই শিক্ষার্থী জুতা পায়ে উঠলে রসায়ন বিভাগের দুই শিক্ষার্থী তার প্রতিবাদ করায় তাদের ওপর হামলা চালায় মার্কেটিং বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ হামলার নেতৃত্ব দেন ছাত্রদল কর্মী মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক কুমার দাস। হামলায় আরও যুক্ত ছিলেন, মাহফুজুর রহমান চৌধুরী মাহী(১৭ ব্যাচ), আয়ান(১৮ ব্যাচ), আরিফ(১৮ ব্যাচ), রাতুল(১৭ব্যাচ),আসিফসহ (১৮ ব্যাচ) আরও ১৫ জন ছিল।

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১২:৫৫:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫
Translate »

জবি শিক্ষার্থীর ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

আপডেট : ১২:৫৫:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে জুতা পায়ে উঠতে না বলার সূত্র ধরে রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আকাশ আলী, তামান্না তাবাসসুম ও আবুল বাসারের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন ও ভাষা শহীদ রফিক ভবনের সামনে রসায়ন বিভাগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, আমরা জুলাই অভ্যুত্থানের পূর্বে ছাত্রলীগকে যেমন আচরণ করতে দেখেছি আজকে অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এসে দেখতে পারছি ছাত্রদল একই আচরণ করছে। পুনরায় কেউ যদি ফ্যাসিস্ট আচরণ করেন তাহলে পুনরায় ১৫ জুলাইয়ের ডাক দেওয়া হবে।

মানববন্ধনে রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আকরাম হোসেন বলেন, যদি এ ঘটনায় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আমরা প্রশাসন ও যে দলের  প্রশ্রয়ে এ ঘটনা ঘটেছে তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন গড়ে তুলব। সেই সঙ্গে আমরা ক্লাস বর্জনের ডাক দেব।

রসায়ন বিভাগের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তামান্না তাবাসসুম বলেন, গতকাল আমাদের ওপর হামলা হয়। আমরা প্রক্টরের কাছে গিয়েছিলাম, তারা আমাদের কোনো সহযোগিতা করে নাই। আমরা তাহলে কার কাছে যাবো? আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহান প্রামানিক বলেন, ১৫ জুলাই ঢাবিতে ছাত্রলীগকে বের করতে আধা ঘণ্টা লাগেনি। প্রয়োজনে ১৫ জুলাই আরেকটা হবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। আবার না হয় যুদ্ধ হবে, আমার মাটি শুদ্ধ হবে। আমরা আমার মাটিকে শুদ্ধ করেই ঘরে ফিরব।

জাস্টিস ফর জুলাইয়ের আহ্বায়ক সজিবুর রহমান বলেন, একটি সংগঠন বলেছে আমরা যেন তাদের ভুলভ্রান্তিগুলো ধরিয়ে দেই। কিন্তু সেই দলেরই একজন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হিউম্যান রাইটস সোসাইটি এর প্রোগ্রামে ভিন্ন একটি দলের ট্যাগ দিয়ে সেখানে অপ্রীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। সেই একই কর্মী গতকাল শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করলো। তার মানে সেই সংগঠনের ভুল ধরিয়ে দেওয়ার কথা গুলো শুধুই মেকি। আমরা এখনও দেখতে পারছি জুলাই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছাত্রলীগের কারও বিচার হয়নি। যার ফলে একটি দল মনে করছে তারাও তাদের কাজের বিচার হবে না।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হিউম্যান রাইটস সোসাইটি এর সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ মাসুদ বলেন, ছাত্রলীগ যেমন আচরণ করেছে, আমরা দেখতে পারছি ছাত্রদলও একই আচরণ করছে। আমরা এটা মোটেও আশা করি না। তাদের আমরা আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে দেখতে চাই। আমরা প্রশাসনের অবহেলা দেখতে পারছি এ ঘটনায়। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আলিম আরিফ বলেন, এক পলাতক ফ্যাসিস্ট হাসিনার দল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিক্রি করে হত্যা-ধর্ষণ করেছে। আমরা এক নব্য ফ্যাসিস্টদের দেখতে পাচ্ছি যারা জুলাইয়ের চেতনা বিক্রি করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে। আমরা আপনাদের অনুরোধ করবো শিক্ষার্থীদের পালস বুঝে রাজনীতি করেন। আমরা প্রশাসনকে বলবো, তারা যেন এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. তাজাম্মুল হক বলেন, সকালে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট ছয় সদস্যের কমিটিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গতকাল বুধবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মার্কেটিং বিভাগের দুই শিক্ষার্থী জুতা পায়ে উঠলে রসায়ন বিভাগের দুই শিক্ষার্থী তার প্রতিবাদ করায় তাদের ওপর হামলা চালায় মার্কেটিং বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ হামলার নেতৃত্ব দেন ছাত্রদল কর্মী মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক কুমার দাস। হামলায় আরও যুক্ত ছিলেন, মাহফুজুর রহমান চৌধুরী মাহী(১৭ ব্যাচ), আয়ান(১৮ ব্যাচ), আরিফ(১৮ ব্যাচ), রাতুল(১৭ব্যাচ),আসিফসহ (১৮ ব্যাচ) আরও ১৫ জন ছিল।