ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের কয়েক দফা সংঘর্ষে আহত ১৪, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী
মুন্সিগঞ্জ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে ছাত্রদলের কয়েক দফা সংঘর্ষে ১০ শিক্ষার্থীসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় এক ছাত্রদল কর্মীসহ দুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকায় রেফার করেছেন চিকিৎসক।
রোববার (৫ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সদর উপজেলার মিরকাদিমে ইন্সটিটিউটের পরীক্ষা চলাকালীন সময় কয়েক দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও আহত শিক্ষার্থীরা জানান, দুপুরে মুন্সিগঞ্জ পলিটেকনিকে পাঁচটি বিভাগের অষ্টম বর্ষের ব্যবহারিক ফাইনাল পরীক্ষায় অংশনেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এ সময় বেশ কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রীকে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এরপর সাধারণ শিক্ষার্থীসহ ছাত্রদল নেতাকর্মীরা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মীদের পরীক্ষা দেয়া নিয়ে আপত্তি জানালে কথা কাটাকাটির জেরে দুই পক্ষের মধ্যে বেঁধে যায় সংঘর্ষ।
পরে খবর পেয়ে ছুটে আসে বহিরাগতরা। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয় সাধারণ শিক্ষার্থীসহ উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজনকে। এরপর ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বাহিনী সদস্যরা। পরে আহতদের উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিলে অবস্থার অবনতি হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে দুজনকে ঢাকায় রেফার করেন চিকিৎসক। পরে বাকী আহতদের চিকিৎসা দেয়া হয় সদর হাসপাতালে।
এ ঘটনায় বিশৃঙ্খলার অভিযোগে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ৯ শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে সেনাবাহিনী। এ ঘটনায় আহতরা হলেন- ছাত্রলীগ কর্মী দুর্জয় আহমেদ (২৪), ছাত্রদল কর্মী আল আমিন রক (১৯), কামরুল হাসান রবিন (২২), তনয় (২২), মেহেদি (২১), রিপন (২১), মোহিত (২১), রাকিবুল (২২), আলিফ (২১) সহ আরও বেশ কয়েকজন।
সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ রয়েছে আহত শিক্ষার্থীদের। আহত ছাত্রলীগ কর্মী দুর্জয় আহমেদ বলেন, আমি একসময় ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছি। তবে আমি কোনো পদে নেই। রোববার পরীক্ষায় অংশ নিতে এলে আমাকে তুলে নিয়ে মারধর করে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা।
অন্যদিকে আহত ছাত্রদল কর্মী আল আমিন রক বলেন, বহিরাগত লোক নিয়ে এসে ছাত্রলীগ কর্মীরা আমাদের এক সহপাঠীর উপর হামলা করে। পরে আমরা প্রতিরোধ করতে গেলে আমাদের সঙ্গে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন।
এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমন ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার কথা জানিয়েছেন মুন্সিগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম। তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ইন্সটিটিউট কর্তৃপক্ষের অভিযোগ অনুযায়ী নেয়া হবে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা।