London ০২:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছাত্রদল নেতাকে ছিনিয়ে নিতে থানায় হামলা, আহত ৫ পুলিশ

অনলাইন ডেস্ক

রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মোহাম্মদ হোসাইন ওরফে মিথুন (৩৫) নামের এক ছাত্রদল নেতাকে গ্রেফতার করেছে নিউ মার্কেট থানা পুলিশ। গ্রেফতার মিথুনকে বহনকারী পুলিশের গাড়ি নিউমার্কেট থানা প্রাঙ্গণে প্রবেশকালে বাঁধা দেয় তার সমর্থকেরা। মিথুনকে পুলিশের হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নিতে নিউমার্কেট থানায় হামলা করে ছাত্রদল-যুবদলের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী।

হামলায় নিউমার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) তারিক লতিফসহ চার থেকে পাঁচ পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) ভোর রাতে এই ঘটনা ঘটে।

পরবর্তীতে হামলায় জড়িত ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় নিউমার্কেট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওমর ফারুক বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। হামলার বিষয়টি থানার একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতাররা হলেন- বশির ইসলাম (২৮), মোহাম্মদ হাসান (২১), মোহাম্মদ ইমন (২৫), মাসুম মাহমুদ (৩২), মোহাম্মদ আলামিন (৩০) এবং আকবর আলী।

থানা সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ জানুয়ারি রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের সামনে মাল্টিপ্ল্যান দোকান মালিক সমিতির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হককে কুপিয়ে আহত করে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইমন গ্রুপের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে নিউ মার্কেট থানায় মামলা করেন সমিতির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুল হাসান।

ছাত্রদল নেতাকে ছিনিয়ে নিতে থানায় হামলা, আহত ৫ পুলিশ

মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, এই ঘটনায় রিমান্ডে নেওয়া এক আসামি জানায়, তাকে ঘটনাস্থলে যেতে নির্দেশ দিয়েছিলেন ছাত্রদল নেতা মিথুন। ইমন গ্রুপের মূল হোতা সানজিদুল হাসান ইমনের ধানমণ্ডি এলাকার চাঁদা তোলার কাজ করেন মিথুন। সেই মিথুনকে বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে রাজধানীর পূর্বাচল ৩০০ ফিট এলাকা থেকে গ্রেফতার করে নিউ মার্কেট থানায় নিয়ে আসা হয়।

মিথুনকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে মিথুনকে বহনকারী পুলিশের গাড়ি নিউমার্কেট থানা প্রাঙ্গণে প্রবেশকালে মিথুনের সমর্থকদের বাঁধার মুখে পড়ে। এসময় পুলিশ সদস্যরা তাদের সরে যেতে বললেও মিথুনের সমর্থকেরা পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করে তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।

হামলাকারীরা লাঠি, লোহার রড, চাপাতি নিয়ে আক্রমণ করে। এতে নিউ মার্কেট জোনের এসি তারিক লতিফ, উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) আরব আলী, এসআই ফিরোজ আহমেদ, এসআই খন্দকার মেসবাহ সহ চার থেকে পাঁচ জন পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হন। তবে পুলিশের প্রতিরোধে দুর্বৃত্তদের অনেকেই দ্রুত পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে ৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এ বিষয়ে নিউ মার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহসীন উদ্দিন আতিক বলেন, গ্রেফতার মিথুনকে পুলিশের গাড়ি থেকে ছাড়িয়ে নিতে তার সমর্থকেরা চেষ্টা করেছিল, তবে পারেনি। এই ঘটনায় পৃথক একটি মামলা হয়েছে এবং গ্রেফতারদের আদালতে চালান করা হয়েছে।

কার নির্দেশে হামলা হয়েছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, এই ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত করে বের করবেন কার নির্দেশে এই হামলা হয়েছে।

এই ঘটনার একাধিক ভিডিও ফুটেজ এসেছে। এতে দেখা যায়, মিথুনকে বহনকারী পুলিশের গাড়ি নিউমার্কেট থানার সামনে আসলে সেটির গতিরোধ করে তার সমর্থকেরা। এসি তারিক লতিফ গাড়ি থেকে নেমে তাদের সরে যেতে অনুরোধ করেন। এসময় মিথুন সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়।

এক পর্যায়ে মিথুনকে নিয়ে পুলিশ থানা কম্পাউন্ডের ভেতরে চলে গেলেও থানার বাইরে থেকে পুলিশকে উদ্দেশ্য করে হুমকি দিতে দেখা যায় কয়েকজনকে।

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০১:৪০:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫
Translate »

ছাত্রদল নেতাকে ছিনিয়ে নিতে থানায় হামলা, আহত ৫ পুলিশ

আপডেট : ০১:৪০:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫

রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মোহাম্মদ হোসাইন ওরফে মিথুন (৩৫) নামের এক ছাত্রদল নেতাকে গ্রেফতার করেছে নিউ মার্কেট থানা পুলিশ। গ্রেফতার মিথুনকে বহনকারী পুলিশের গাড়ি নিউমার্কেট থানা প্রাঙ্গণে প্রবেশকালে বাঁধা দেয় তার সমর্থকেরা। মিথুনকে পুলিশের হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নিতে নিউমার্কেট থানায় হামলা করে ছাত্রদল-যুবদলের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী।

হামলায় নিউমার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) তারিক লতিফসহ চার থেকে পাঁচ পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) ভোর রাতে এই ঘটনা ঘটে।

পরবর্তীতে হামলায় জড়িত ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় নিউমার্কেট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওমর ফারুক বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। হামলার বিষয়টি থানার একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতাররা হলেন- বশির ইসলাম (২৮), মোহাম্মদ হাসান (২১), মোহাম্মদ ইমন (২৫), মাসুম মাহমুদ (৩২), মোহাম্মদ আলামিন (৩০) এবং আকবর আলী।

থানা সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ জানুয়ারি রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের সামনে মাল্টিপ্ল্যান দোকান মালিক সমিতির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হককে কুপিয়ে আহত করে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইমন গ্রুপের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে নিউ মার্কেট থানায় মামলা করেন সমিতির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুল হাসান।

ছাত্রদল নেতাকে ছিনিয়ে নিতে থানায় হামলা, আহত ৫ পুলিশ

মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, এই ঘটনায় রিমান্ডে নেওয়া এক আসামি জানায়, তাকে ঘটনাস্থলে যেতে নির্দেশ দিয়েছিলেন ছাত্রদল নেতা মিথুন। ইমন গ্রুপের মূল হোতা সানজিদুল হাসান ইমনের ধানমণ্ডি এলাকার চাঁদা তোলার কাজ করেন মিথুন। সেই মিথুনকে বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে রাজধানীর পূর্বাচল ৩০০ ফিট এলাকা থেকে গ্রেফতার করে নিউ মার্কেট থানায় নিয়ে আসা হয়।

মিথুনকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে মিথুনকে বহনকারী পুলিশের গাড়ি নিউমার্কেট থানা প্রাঙ্গণে প্রবেশকালে মিথুনের সমর্থকদের বাঁধার মুখে পড়ে। এসময় পুলিশ সদস্যরা তাদের সরে যেতে বললেও মিথুনের সমর্থকেরা পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করে তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।

হামলাকারীরা লাঠি, লোহার রড, চাপাতি নিয়ে আক্রমণ করে। এতে নিউ মার্কেট জোনের এসি তারিক লতিফ, উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) আরব আলী, এসআই ফিরোজ আহমেদ, এসআই খন্দকার মেসবাহ সহ চার থেকে পাঁচ জন পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হন। তবে পুলিশের প্রতিরোধে দুর্বৃত্তদের অনেকেই দ্রুত পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে ৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এ বিষয়ে নিউ মার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহসীন উদ্দিন আতিক বলেন, গ্রেফতার মিথুনকে পুলিশের গাড়ি থেকে ছাড়িয়ে নিতে তার সমর্থকেরা চেষ্টা করেছিল, তবে পারেনি। এই ঘটনায় পৃথক একটি মামলা হয়েছে এবং গ্রেফতারদের আদালতে চালান করা হয়েছে।

কার নির্দেশে হামলা হয়েছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, এই ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত করে বের করবেন কার নির্দেশে এই হামলা হয়েছে।

এই ঘটনার একাধিক ভিডিও ফুটেজ এসেছে। এতে দেখা যায়, মিথুনকে বহনকারী পুলিশের গাড়ি নিউমার্কেট থানার সামনে আসলে সেটির গতিরোধ করে তার সমর্থকেরা। এসি তারিক লতিফ গাড়ি থেকে নেমে তাদের সরে যেতে অনুরোধ করেন। এসময় মিথুন সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়।

এক পর্যায়ে মিথুনকে নিয়ে পুলিশ থানা কম্পাউন্ডের ভেতরে চলে গেলেও থানার বাইরে থেকে পুলিশকে উদ্দেশ্য করে হুমকি দিতে দেখা যায় কয়েকজনকে।