চলন্ত বাসে ডাকাতি-শ্লীলতাহানি মূলহোতা আলমগীর ৬, তার ভাই রাজীব ৫ দিনের রিমান্ডে

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে রাজশাহীগামী চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় মূল হোতাসহ দুজনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রুমি খাতুন তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আসামিরা হলেন মূলহোতা ডাকাত দলের সর্দার মো. আলমগীর শেখ (৩৪) ও তার ভাই রাজীব হোসেন শেখ (২১)। আলমগীরের ছয়দিন ও রাজীবের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
এরআগে সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে নেত্রকোনা এবং ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) এসআই আহসানুজ্জামান রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, চলন্ত বাসে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার শহিদুল ইসলামের পাঁচদিনের রিমান্ড চলছে। রিমান্ডে তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। মূলহোতা আলমগীরকে নেত্রকোনার পূর্বাধলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে আলমগীরের তথ্যের ভিত্তিতে তার ভাই রাজীবকে গ্রেফতার করা হয় ঢাকার আশুলিয়া থেকে।
আন্তঃজেলা ডাকাতচক্রের প্রধান আলমগীর শেখ। তিনি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করে আসছিলেন। প্রাথমিকভাবে চলন্ত বাসে ডাকাতির বিষয়টি স্বীকার করেছেন আলমগীর।
এরআগে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সাভারের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তিন ডাকাতকে গ্রেফতার করে। এর মধ্যে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় গ্রেফতার সবুজ ও শরীফুজ্জামানের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রট নওরিন করিম। অন্যদিকে, গ্রেফতার শহিদুল ইসলামের পাঁচদিনের রিমান্ড চলছে।
এ ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার কারণে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার ডিউটি অফিসার এএসআই আতিকুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বাসে ডাকাতির তিনদিন পর শুক্রবার ভোরে মির্জাপুর থানায় নাটোরের বাসিন্দা ওমর আলী নামের এক যাত্রী বাদী মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ৮-৯ জনকে আসামি করা হয়।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দিনগত মধ্যরাতে ইউনিক রোড রয়েলসের বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় ঢাকার গাবতলী থেকে বাসটি ছাড়ে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাসটিতে ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কয়েকজনকে রক্তাক্ত করে ডাকাতি শুরু করে। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বাসটিকে বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে ডাকাতি ও নারীর শ্লীলতাহানি করার পর টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের নির্জন স্থানে বাস থামিয়ে ডাকাতদল নেমে যায়।
ডাকাতরা বাস থেকে নেমে যাওয়ার পর চালক বাসটি নিয়ে গন্তব্যে যেতে অস্বীকৃতি জানান। পরে যাত্রীদের চাপের মুখে চালক বাস নিয়ে পুনরায় যাত্রা শুরু করেন। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার পর যাত্রীরা বাসটি নাটোরের বড়াইগ্রাম থানায় নিয়ে যান। এসময় ডাকাতিতে জড়িত সন্দেহে বাসের চালক বাবলু আলী (৩০), সুপারভাইজার সুমন ইসলাম (৩৩) ও হেলপার মাহবুব আলমকে (২৮) আটক করে ৫৪ ধারায় মামলা দিয়ে নাটোর আদালতে পাঠায় বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ। পরে তারা আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান। বুধবার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর প্রশাসন নড়েচড়ে বসে।