চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থীর মুক্তির দাবিতে খাগড়াছড়িস্থ আদিবাসী ছাত্র সমাজের ব্যানারে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করা হয়েছে। একইসঙ্গে রাঙামাটির কাউখালীতে মারমা তরুণীকে ধর্ষণকারীর বিচারের দাবি জানিয়েছেন বিক্ষুব্ধরা।
রোববার (২০ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে শহরের মহাজন পাড়া থেকে মিছিল বের করা হয়। মিছিলকারীরা শহরের প্রধান সড়ক হয়ে খাগড়াছড়ি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনে গিয়ে মানববন্ধন করেন।
তুষণ চাকমার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) কেন্দ্রীয় সভাপতি সুজন চাকমা, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিল(বিএমএসসি) প্রতিনিধি উক্যানু মারমা, ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরামের সদর থানার সভাপতি আকাশ ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সুমতি বিকাশ চাকমা প্রমুখ।
বক্তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপহরণের শিকার পাঁচ শিক্ষার্থীকে মুক্ত করতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। এ ছাড়া কাউখালীতে মারমা তরুণীর ধর্ষণকারীকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান বক্তারা।
অপরদিকে অপহৃত শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে বিজিবি ও পুলিশের একাধিক টিম খাগড়াছড়ির বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে। অভিযানের অংশ হিসেবে কখনো কখনো ব্লক রেইড করা হচ্ছে। অপহরণকারীরা বারবার স্থান পরিবর্তন করার কারণে উদ্ধার অভিযান বিলম্ব হচ্ছে বলে দাবি নিরাপত্তা বাহিনীর।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল জানান, অপহৃতদের উদ্ধারে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে বুধবার থেকেই অভিযান চলছে। অভিযানে প্রযুক্তিগত সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন সড়কে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বৈসাবি উৎসব শেষে ফেরার পথে বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকালে খাগড়াছড়ি-পানছড়ি সড়কের গিরিফুল এলাকা থেকে সন্তু লারমা সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সদস্য চবি শাখার রিশান চাকমাসহ পাঁচ শিক্ষার্থীসহ ছয়জনকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করা হয়। রিশান চাকমা চবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী। অপর অপহৃতরা হলেন- চবির চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী মৈত্রীময় চাকমা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের লংঙি ম্রো ও চারুকলা বিভাগের অলড্রিন ত্রিপুরা। এরা সবাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এ অপহরণের ঘটনায় শুরু থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বিরোধী সশস্ত্র সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টকে (ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপ) দায়ী করে আসছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি। তবে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে দলটি।