London ০৫:০২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গোয়ালিয়রের মাঠে দর্শকের চেয়ে পুলিশ বেশি

শ্রীমান মাধবরাও সিন্ধিয়া স্টেডিয়ামের দুই কিলোমিটার আগে বসেছে প্রথম নিরাপত্তা চৌকি। দ্বিতীয়টি এক কিলোমিটার আগে। মুম্বাই-আগ্রা হাইওয়ে ধরে কোনো ধরনের যানবাহন চলতে দেওয়া হচ্ছে না। পুরো গোয়ালিয়র জুড়েই জারি করা হয়েছে ‘ওয়ান সিক্সটি থ্রি’। অর্থাৎ পাঁচজন লোক একঙ্গে হতে পারবে না। ডিস্ট্রিক কালেক্টর রুচিকা সিং চৌহান জারি করেছেন এ আইন। 

বাংলাদেশ ও ভারত দল গোয়ালিয়রে পৌঁছানোর পরই আইনের এ বিশেষ ধারা কার্যকর করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। হোটেলে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার পাশাপাশি মাঠেও কড়া নিরাপত্তা দিচ্ছে পুলিশ। গতকাল পর্যন্ত হিন্দু মহাসভার ৩০ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় এত কড়াকড়ি, বিসিবি মিডিয়া ম্যানেজার রাবীদ ইমামও প্রেস বক্সে এলেন একজন দেহরক্ষী নিয়ে।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সময় হিন্দুদের নির্যাতন করার অভিযোগ এনে কানপুর ও গোয়ালিয়রের হিন্দু মহাসভা প্রতিবাদ জানায়। কানপুরে টেস্ট আর গোয়ালিয়রে টি২০ ম্যাচ বাতিলের দাবি জানিয়েছিল তারা। কানপুর পর্ব ভালোভাবে শেষ হলেও গোয়ালিয়রে ম্যাচের দিন ৬ অক্টোবর ধর্মঘট ডেকেছে। এই ধর্মঘট অকার্যকর করে দিতে তৎপর গোয়ালিয়র পুলিশ। মধ্যপ্রদেশ থেকে জড়ো করা হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী। 
সিরিজের প্রথম টি২০ শেষ না হওয়া পর্যন্ত চার থেকে পাঁচ হাজার পুলিশ মোতায়েন থাকবে বলে জানায় আয়োজকরা। বুধবার স্থানীয় এক মন্ত্রী মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিব রাওয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সমকালকে তিনি বলেন, ‘গোয়ালিয়রের নতুন স্টেডিয়ামে ম্যাচ আয়োজনের সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ক্রিকেটারদের নিরাপদে রাখতে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে।’

কড়া নিরাপত্তা পাহারায় গতকাল দুপুরে ম্যাচ ভেন্যু মাধবরাও সিন্ধিয়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুশীলন করতে আসে বাংলাদেশ দল। জিম সেশন শেষ করে সেন্টার উইকেটে ব্যাটিং ও বোলিং করেছেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বোলিং দিয়ে শুরু করেন, শেষ ব্যাটিংয়ে। চোট পুনর্বাসনে থাকা এবাদত হোসেন ছাড়া স্কোয়াডের সবাই ব্যাটিং করেছেন প্রথম সেশনে।

গতকাল স্বাগতিক ভারতের অনুশীলন ছিল সন্ধ্যায়। বিকেল ৫টায় স্টেডিয়ামে ঢুকে রাত ৮টা পর্যন্ত টানা সেশন করে হোটেলে ফিরেছে তারা। রাতে সেশন করায় গরমে জর্জরিত হতে হয়নি সূর্যকুমার যাদবদের। আসলে দুপুরে প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা হয়েছিল বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের। ৩৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ফিল লাইক ছিল ৪০ ডিগ্রি। বাংলাদেশ দল গরম থেকে আজ কিছুটা রক্ষা পাবে সন্ধ্যায় অনুশীলন রাখাতে। ফ্ল্যাডলাইটের আলোতে এক সেশন অনুশীলন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে টাইগারদের। 

ভারত তিন সেশনের দুটিই করছে রাতে। তবে এই ক্রিকেট বিনোদনের চেয়েও নিরাপত্তার বাড়াবাড়ি ভোগাচ্ছে বেশি। বাংলাদেশ থেকে সিরিজ কাভার করতে আসা সাংবাদিকদের অনেক পথ হাঁটতে হচ্ছে হোটেলে ফিরতে। শহর থেকে গাড়িতে ৪০ মিনিট দূরত্বের পথ পাড়ি দিতে কঠিন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে যানবাহন না পাওয়ায়।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৭:৫৮:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অক্টোবর ২০২৪
৫০
Translate »

গোয়ালিয়রের মাঠে দর্শকের চেয়ে পুলিশ বেশি

আপডেট : ০৭:৫৮:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অক্টোবর ২০২৪

শ্রীমান মাধবরাও সিন্ধিয়া স্টেডিয়ামের দুই কিলোমিটার আগে বসেছে প্রথম নিরাপত্তা চৌকি। দ্বিতীয়টি এক কিলোমিটার আগে। মুম্বাই-আগ্রা হাইওয়ে ধরে কোনো ধরনের যানবাহন চলতে দেওয়া হচ্ছে না। পুরো গোয়ালিয়র জুড়েই জারি করা হয়েছে ‘ওয়ান সিক্সটি থ্রি’। অর্থাৎ পাঁচজন লোক একঙ্গে হতে পারবে না। ডিস্ট্রিক কালেক্টর রুচিকা সিং চৌহান জারি করেছেন এ আইন। 

বাংলাদেশ ও ভারত দল গোয়ালিয়রে পৌঁছানোর পরই আইনের এ বিশেষ ধারা কার্যকর করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। হোটেলে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার পাশাপাশি মাঠেও কড়া নিরাপত্তা দিচ্ছে পুলিশ। গতকাল পর্যন্ত হিন্দু মহাসভার ৩০ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় এত কড়াকড়ি, বিসিবি মিডিয়া ম্যানেজার রাবীদ ইমামও প্রেস বক্সে এলেন একজন দেহরক্ষী নিয়ে।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সময় হিন্দুদের নির্যাতন করার অভিযোগ এনে কানপুর ও গোয়ালিয়রের হিন্দু মহাসভা প্রতিবাদ জানায়। কানপুরে টেস্ট আর গোয়ালিয়রে টি২০ ম্যাচ বাতিলের দাবি জানিয়েছিল তারা। কানপুর পর্ব ভালোভাবে শেষ হলেও গোয়ালিয়রে ম্যাচের দিন ৬ অক্টোবর ধর্মঘট ডেকেছে। এই ধর্মঘট অকার্যকর করে দিতে তৎপর গোয়ালিয়র পুলিশ। মধ্যপ্রদেশ থেকে জড়ো করা হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী। 
সিরিজের প্রথম টি২০ শেষ না হওয়া পর্যন্ত চার থেকে পাঁচ হাজার পুলিশ মোতায়েন থাকবে বলে জানায় আয়োজকরা। বুধবার স্থানীয় এক মন্ত্রী মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিব রাওয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সমকালকে তিনি বলেন, ‘গোয়ালিয়রের নতুন স্টেডিয়ামে ম্যাচ আয়োজনের সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ক্রিকেটারদের নিরাপদে রাখতে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে।’

কড়া নিরাপত্তা পাহারায় গতকাল দুপুরে ম্যাচ ভেন্যু মাধবরাও সিন্ধিয়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুশীলন করতে আসে বাংলাদেশ দল। জিম সেশন শেষ করে সেন্টার উইকেটে ব্যাটিং ও বোলিং করেছেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বোলিং দিয়ে শুরু করেন, শেষ ব্যাটিংয়ে। চোট পুনর্বাসনে থাকা এবাদত হোসেন ছাড়া স্কোয়াডের সবাই ব্যাটিং করেছেন প্রথম সেশনে।

গতকাল স্বাগতিক ভারতের অনুশীলন ছিল সন্ধ্যায়। বিকেল ৫টায় স্টেডিয়ামে ঢুকে রাত ৮টা পর্যন্ত টানা সেশন করে হোটেলে ফিরেছে তারা। রাতে সেশন করায় গরমে জর্জরিত হতে হয়নি সূর্যকুমার যাদবদের। আসলে দুপুরে প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা হয়েছিল বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের। ৩৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ফিল লাইক ছিল ৪০ ডিগ্রি। বাংলাদেশ দল গরম থেকে আজ কিছুটা রক্ষা পাবে সন্ধ্যায় অনুশীলন রাখাতে। ফ্ল্যাডলাইটের আলোতে এক সেশন অনুশীলন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে টাইগারদের। 

ভারত তিন সেশনের দুটিই করছে রাতে। তবে এই ক্রিকেট বিনোদনের চেয়েও নিরাপত্তার বাড়াবাড়ি ভোগাচ্ছে বেশি। বাংলাদেশ থেকে সিরিজ কাভার করতে আসা সাংবাদিকদের অনেক পথ হাঁটতে হচ্ছে হোটেলে ফিরতে। শহর থেকে গাড়িতে ৪০ মিনিট দূরত্বের পথ পাড়ি দিতে কঠিন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে যানবাহন না পাওয়ায়।