London ০৩:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
মেডিকেল ক্যাম্প–রক্তদানে ব্যতিক্রমী আয়োজন, পালিত হলো প্রেসক্লাব আলফাডাঙ্গার ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী দিনব্যাপী সেবামূলক কার্যক্রমে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ পটুয়াখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন ভাই আজাদসহ দুই স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা কালিয়াকৈরে সড়ক দুর্ঘটনায় ট্রাকচালক নিহত রাজশাহীতে চলছে ট্রাফিক সপ্তাহ ২০২৫ কালিয়াকৈর ৫ নং ওয়ার্ড পৌর বি এন পির নির্বাচনী প্রস্তুতি সভা ও মতবিনিময় বিক্ষোভ সমাবেশে ক্ষোভের বিস্ফোরণ: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রহসনমূলক রায়ের প্রতিবাদে লন্ডনে প্রবাসীদের গণজমায়েত রাজশাহীতে চলছে উদ্যোক্তা মেলা গাজীপুর-১ আসন কালিয়াকৈরে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর শীতার্ত মানুষের কষ্ট লাঘবে নানিয়ারচর জোন (১৭ই বেংগল) এর উদ্যোগে বিনামূল্যে শীতবস্ত্র বিতরণ সিরাজগঞ্জ সততা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির পক্ষ থেকে নবনির্বাচিত পরিচালক হাজী মোঃ আব্দুস সাত্তারকে সংবর্ধনা

গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে কসবায় মানববন্ধন, ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তা আইনের দাবি

মোঃ বিল্লাল সরকার, ব্রাম্মনাড়ীয়া

গাজীপুরে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ–এর জেলা প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান তুহিনকে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে হত্যা করার ঘটনায় জাতির বিবেক হিসেবে পরিচিত সাংবাদিক সমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ গভীর শোক ও ক্ষোভে আবদ্ধ। তার এই নির্মম মৃত্যু দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার প্রতি বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে ও ন্যায়বিচারের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় রবিবার বিকেলে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

কসবা সুপার মার্কেটের সামনে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে স্থানীয় সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি সবুজ খান জয় সভাপতিত্ব করেন এবং সাধারণ সম্পাদক আশরাফ উজ্জ্বল সঞ্চালনা করেন। এতে কসবা থানা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোবারক হোসেন চৌধুরী নাছির, কসবা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল খায়ের স্বপন, সাংবাদিক ফোরামের উপদেষ্টা আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল, গণ অধিকার পরিষদের কসবা উপজেলা সভাপতি মাওলানা হিজবুল্লাহ হেলালী, অন্যান্য সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন।

বক্তারা তুহিনের মৃত্যুকে এক ভয়াবহ ও নৃশংস হত্যাকাণ্ড হিসেবে আখ্যায়িত করেন। বলেন, সাংবাদিক তুহিন সম্প্রতি চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন। সেই সাহসিকতার মূল্য তাঁকে দিতে হয়েছে নিজের প্রাণ দিয়ে। পুলিশের সামনেই, গাজীপুর সদর মেট্রো থানা ভবনের পাশে চাঁদাবাজ চক্র তার মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে, দোকানে ঢুকিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে এবং গলা কেটে হত্যা করে। হত্যার পরও দুর্বৃত্তরা লাশের ওপর দাঁড়িয়ে নাচতেও লিপ্ত হয়, যা এক গভীর মানবিক বিপর্যয়ের প্রতীক।

সাংবাদিকরা জাতির বিবেক হলেও তাদের ওপর হামলা, হত্যা ও হুমকি এখন যেন নিয়মিত ঘটনা। শুধুমাত্র বর্তমান সরকার নয়, পূর্ববর্তী অনেক সরকার আমলেও অসংখ্য সাংবাদিক খুনের ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু অধিকাংশই বিচারবিহীন থেকে গেছে। অনিয়ম বা দুর্নীতির খবর প্রকাশ করলেই সাংবাদিকরা নানা ধরনের হুমকি ও প্রাণনাশের ভয়াবহ ঝুঁকির সম্মুখীন হন। বক্তারা প্রশ্ন তোলেন, যেখানে পুলিশের উপস্থিতিতে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়, সেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কতটা নিশ্চিত করা সম্ভব? আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কি একেবারেই অসহায়? রাষ্ট্র কি সত্য বলার মানুষের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ?

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা দ্রুত বিচার কার্যক্রম শুরু ও সব হত্যা মামলার সুষ্ঠু নিষ্পত্তি দাবি করেন। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে এবং হত্যাকাণ্ড প্রতিরোধে কঠোর আইন প্রণয়নের জন্য সংসদের প্রতি গুরুত্বপুর্ণ আহ্বান জানান। তারা সতর্ক করেন যে, যদি সাংবাদিকদের নিরাপত্তা অব্যাহতভাবে নিশ্চিত না করা হয়, তাহলে দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং সত্য প্রকাশের পথ বন্ধ হয়ে যাবে, যা শেষ পর্যন্ত সমগ্র সমাজের জন্য ধ্বংসাত্মক হবে।

মানববন্ধনের শেষ অংশে অংশগ্রহণকারীরা ন্যায়বিচারের প্রতিশ্রুতি দেন এবং নিশ্চিত করেন, সত্য রক্ষায় তারা কোনো ধরনের ভয় বা বাধার কাছে নতি স্বীকার করবেন না। তুহিন হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত এবং সাংবাদিক নিরাপত্তা আইনের বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এই সংগ্রাম চলবে বলেও ঘোষণা করেন।

 

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৬:০৬:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫
৬০
Translate »

গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে কসবায় মানববন্ধন, ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তা আইনের দাবি

আপডেট : ০৬:০৬:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫

গাজীপুরে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ–এর জেলা প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান তুহিনকে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে হত্যা করার ঘটনায় জাতির বিবেক হিসেবে পরিচিত সাংবাদিক সমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ গভীর শোক ও ক্ষোভে আবদ্ধ। তার এই নির্মম মৃত্যু দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার প্রতি বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে ও ন্যায়বিচারের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় রবিবার বিকেলে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

কসবা সুপার মার্কেটের সামনে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে স্থানীয় সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি সবুজ খান জয় সভাপতিত্ব করেন এবং সাধারণ সম্পাদক আশরাফ উজ্জ্বল সঞ্চালনা করেন। এতে কসবা থানা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোবারক হোসেন চৌধুরী নাছির, কসবা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল খায়ের স্বপন, সাংবাদিক ফোরামের উপদেষ্টা আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল, গণ অধিকার পরিষদের কসবা উপজেলা সভাপতি মাওলানা হিজবুল্লাহ হেলালী, অন্যান্য সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন।

বক্তারা তুহিনের মৃত্যুকে এক ভয়াবহ ও নৃশংস হত্যাকাণ্ড হিসেবে আখ্যায়িত করেন। বলেন, সাংবাদিক তুহিন সম্প্রতি চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন। সেই সাহসিকতার মূল্য তাঁকে দিতে হয়েছে নিজের প্রাণ দিয়ে। পুলিশের সামনেই, গাজীপুর সদর মেট্রো থানা ভবনের পাশে চাঁদাবাজ চক্র তার মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে, দোকানে ঢুকিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে এবং গলা কেটে হত্যা করে। হত্যার পরও দুর্বৃত্তরা লাশের ওপর দাঁড়িয়ে নাচতেও লিপ্ত হয়, যা এক গভীর মানবিক বিপর্যয়ের প্রতীক।

সাংবাদিকরা জাতির বিবেক হলেও তাদের ওপর হামলা, হত্যা ও হুমকি এখন যেন নিয়মিত ঘটনা। শুধুমাত্র বর্তমান সরকার নয়, পূর্ববর্তী অনেক সরকার আমলেও অসংখ্য সাংবাদিক খুনের ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু অধিকাংশই বিচারবিহীন থেকে গেছে। অনিয়ম বা দুর্নীতির খবর প্রকাশ করলেই সাংবাদিকরা নানা ধরনের হুমকি ও প্রাণনাশের ভয়াবহ ঝুঁকির সম্মুখীন হন। বক্তারা প্রশ্ন তোলেন, যেখানে পুলিশের উপস্থিতিতে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়, সেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কতটা নিশ্চিত করা সম্ভব? আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কি একেবারেই অসহায়? রাষ্ট্র কি সত্য বলার মানুষের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ?

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা দ্রুত বিচার কার্যক্রম শুরু ও সব হত্যা মামলার সুষ্ঠু নিষ্পত্তি দাবি করেন। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে এবং হত্যাকাণ্ড প্রতিরোধে কঠোর আইন প্রণয়নের জন্য সংসদের প্রতি গুরুত্বপুর্ণ আহ্বান জানান। তারা সতর্ক করেন যে, যদি সাংবাদিকদের নিরাপত্তা অব্যাহতভাবে নিশ্চিত না করা হয়, তাহলে দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং সত্য প্রকাশের পথ বন্ধ হয়ে যাবে, যা শেষ পর্যন্ত সমগ্র সমাজের জন্য ধ্বংসাত্মক হবে।

মানববন্ধনের শেষ অংশে অংশগ্রহণকারীরা ন্যায়বিচারের প্রতিশ্রুতি দেন এবং নিশ্চিত করেন, সত্য রক্ষায় তারা কোনো ধরনের ভয় বা বাধার কাছে নতি স্বীকার করবেন না। তুহিন হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত এবং সাংবাদিক নিরাপত্তা আইনের বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এই সংগ্রাম চলবে বলেও ঘোষণা করেন।