ভোলায় গরুচুরির অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই নেতাকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। এ ঘটনায় ওই দুই নেতাকে দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন- চরফ্যাশন উপজেলার আসলামপুর ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জাকীর হোসেন ও সদস্য সচিব মো. আলী।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে চরফ্যাশন থানা পুলিশ ওই দুই নেতাসহ একই মামলায় মো. ইসমাইল নামে আরও একজনকে আদালতে পাঠায়।
গরুর মালিক ও মামলার বাদী আসলামপুর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. ইয়াছিন জানান, বেশ কয়েক মাস আগে তার ক্রয়কৃত একটি গরু লালন পালন করার জন্য আসলামপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল কাশেম নামের একজনের কাছে বর্গা দেন। প্রায় এক মাস আগে গরুটি চুরি হয়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার তিনি একজনের মাধ্যমে নিশ্চিত হন তার চুরি যাওয়া গরুটি ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মো. আলীর বাড়িতে আছে। পরে তিনি স্থানীয় লোকজন নিয়ে মো. আলীর বাড়িতে গিয়ে গরুটি শনাক্ত করেন।
কিন্তু আলী সে সময় দাবি করেন তিনি গরুটি লালমোহনের রায়চাঁদ বাজার থেকে কিনে এনেছেন। পরে স্থানীয়রা তাকে চাপ দিলে তিনি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেনের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকায় কিনেছেন বলে দাবি করেন। পরে স্থানীয়রা জাকির হোসেনকে তার কাছে আনলে জাকির এই ঘটনায় জড়িত দুলাল, ইসমাইল ও আলমগীর নামে আরও তিনজনের নাম জানান। এরপর স্থানীয় লোকজন মো. জাকির, মো. আলী, দুলাল ও ইসমাইলকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পরে মো. ইয়াছিন বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই ৫ জনের নামে চরফ্যাশন থানায় মামলা করেন।
এদিকে এ ঘটনার পর চরফ্যাশন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সিকদার হুমায়ুন কবির ও সদস্য সচিব মো. কামরুজ্জামান শাহিনের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায় ওই রাতেই জাকির ও আলীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চরফ্যাশন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সিকদার হুমায়ুন কবির জানান, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে আসলামপুর ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জাকির হোসেন ও সদস্য সচিব মো. আলীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে এখন থেকে স্বেচ্ছাসেবক দলের কোনো সম্পর্ক নেই। এছাড়াও কেউ দলীয় প্রভাব দেখিয়ে অপকর্ম করলে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না বলেও দাবি করেন তিনি।
চরফ্যাশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার খবর পেয়ে ওই দুইজনকে আটক করেছি। তাদের বিরুদ্ধে গরুর মালিক গত রাতে বাদী হয়ে মামলা করেছেন। শুক্রবার দুপুরের দিকে তিনজনকে আদালতে পাঠানো হয়। দুলাল নামে আরও একজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।